বাচ্চাদের উপর কতটা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে? নতুন কোনও ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলেই, এটাই সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর প্রধান কারণ হল, বাচ্চারা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নয়। তাদের দেখাশোনার জন্য কাউকে প্রয়োজন। সংক্রমিত হলে লক্ষণগুলো সনাক্ত এবং চিকিৎসার জন্য তারা অন্যের উপর নির্ভরশীল। তাই বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তাটা বেশি। (Monkey Pox and Children)
মাঙ্কিপক্সে শিশুদের ঝুঁকি : এটা অত্যন্ত সংক্রামক। তাই এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাঁদের উপর নজর রাখাটা জরুরি। বয়স্ক মানুষ, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং বাচ্চাদের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) বলছে, শিশুদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সে (Monkeypox) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মৃত্যুর অনুপাত সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে ০ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত এবং ছোট বাচ্চাদের মধ্যে এই হার বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে সেটা ৩ থেকে ৬ শতাংশ।
বাচ্চাদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের জটিলতা আরও গুরুতর : শুধু হু নয়, বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সংস্থা শিশুদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের জটিলতা এবং এর তীব্রতা সম্পর্কে সতর্ক করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ মাত্রা ছাড়িয়েছে। ব্যাপক হারে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ‘স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়, জটিলতাগুলি শিশু এবং ইমিউনোকম্প্রোমাইজড লোকেদের মধ্যে বেশি। ব্যাকটেরিয়াল সুপারইনফেকশন, সেপসিস, কেরাটাইটিস, ফ্যারিঞ্জিয়াল ফোঁড়ার কারণে শ্বাসযন্ত্রের জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং নিউমোনিয়া বা এনকেফেলাইটিসের মতো রোগের সম্ভাবনা থাকে’।
আরও পড়ুন : চুলের যে কোনও সমস্যাতেই ম্যাজিক! পাতলা চুলও ঘন হয়ে যাবে, শুধু এ ভাবে ব্যবহার করুন এই উপাদান
মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের লক্ষণ : মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণগুলি ফ্লুর মতোই। বাচ্চাদের মধ্যে যে সাধারণ উপসর্গগুলি লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল: জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা এবং ফুসকুড়ি। মাঙ্কিপক্স হলে জ্বরের ১ থেকে ৩ দিনের মাথায় রোগীর শরীরে ফুসকুড়ি দেখা যায়। মুখ, হাতের তালু, পায়ের পাতা এবং যৌনাঙ্গেও ফুসকুড়ি হয়।
মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ কীভাবে ছড়ায় : একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির ফুসকুড়ি, স্ক্যাব বা শারীরিক তরলের সংস্পর্শে এলে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ড. ডিন সিডেলিংগারের মতে, ‘মাঙ্কিপক্স কোভিড-১৯ নয়। এই ভাইরাসটি সহজে ছড়ায় না, যদি না কেউ দীর্ঘক্ষণ সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা তাঁর ত্বকের সংস্পর্শে থাকেন’।
আরও পড়ুন : ঝোলা চামড়া, কোঁচকানো ত্বক টানটান হবে স্রেফ ২ সপ্তাহে, মেনে চলুন এই ঘরোয়া উপায়গুলো
সংক্রমণ থেকে শিশুদের বাঁচাতে : শিশুরা ঘন ঘন যেখানে যায় সে সব জায়গা জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। আশে-পাশে কিংবা বাড়িতে মাঙ্কিপক্সের রোগী থাকলে তাঁর থেকে শিশুকে দূরে রাখাই বাঞ্ছনীয়। একান্তই এক ঘরে থাকতে হলে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে। বাচ্চাদের নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ করা উচিত। এতে অনেক ভাইরাসের হাত থেকেই বাঁচানো সম্ভব।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।