নয়াদিল্লি: থাইরয়েড হল প্রজাপতির মতো একটা গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি। যা ঘাড়ের সামনের দিকে অ্যাডামস অ্যাপলের ঠিক নিচে রয়েছে। এই গ্রন্থি গরমোন নিঃসরণ করে। যা মেটাবলিজম, বাড়-বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। থাইরয়েড হরমোনের ক্ষেত্রে যদি ভারসাম্য বজায় না-থাকে, তাহলে সেটা থেকে নানা রকম সমস্যা আসতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হল মেটাবলিজমে পরিবর্তন, ওজন বৃদ্ধি, হাড় ক্ষয়, চুল ঝরে যাওয়া, হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট, সিলিয়াক রোগ এবং ডায়াবেটিস। এটা মূল হাইপোথাইরয়েডিজম হিসেবে পরিচিত। আমাদের থাইরয়েড গ্রন্থি যখন পর্যাপ্ত হরমোন ক্ষরণ করে না, তখন মারাত্মক ভাবে ওজন বৃদ্ধি ঘটে। এই প্রতিবেদনে আজ এই বিষয়েই আলোকপাত করবেন বেঙ্গালুরুর অ্যাস্টার সিএমআই হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনাল ডায়েটেটিকসের হেড মিস এডুইনা রাজ।
হাইপোথাইরয়েডিজম যে কোনও বয়সেই হানা দিতে পারে। এমনকী শিশুদের মধ্যেও তা দেখা যায়। কারও থাইরয়েড গ্রন্থি যদি তেমন সক্রিয় না-হয়, তা-হলে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলি দেখা যায় -
ক্লান্তি বা অবসন্ন ভাব
ঠান্ডা লাগা
কোষ্ঠকাঠিন্য
চোখ-মুখ ফোলা ভাব এবং শুষ্ক ত্বক
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
গাঁটে ব্যথা
ডিপ্রেশন অথবা স্মৃতিভ্রংশ
হাইপোথাইরয়েডের রোগীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেয়ে যান। সঠিক ডায়েট এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আসলে সঠিক খাওয়াদাওয়াটা এই রোগের ক্ষেত্রে জরুরি। রোজকার ডায়েটে রাখতে হবে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
থাইরয়েডের কার্যকারিতা বজায় রাখতে অপরিহার্য এই সব খাবার:
বীজ এবং বাদাম জাতীয় খাবার:
ব্রাজিল নাট হল সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের দারুন উৎস। যা থাইরয়েডের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক। এর পাশাপাশি, চিয়া এবং কুমড়ো বীজও জিঙ্কের দারুন উৎস। ফলে এগুলি স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্তরা ক্ষণে ক্ষণে খেতে থাকেন। সে-ক্ষেত্রে এই ধরনের বীজ অথবা বাদাম জাতীয় খাবার খেলে ওজনও কমবে আর থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতায় ঠিক থাকবে।
বিনস এবং লেগিউমস:
এই খাবার আবার প্রোটিন সমৃদ্ধ। ফলে এটা মেটাবলিজমের উন্নতিসাধন ঘটায়। আর সবথেকে বড় কথা হল, এই ধরনের খাবার খেলে পেট অনেক ক্ষণ ভর্তি থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডিম:
যে-সব থাইরয়েড রোগী ওজন কমাতে চেষ্টা করছেন, তাঁরা ডিম খেতে পারেন। কারণ এর মধ্যে থাকে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং প্রোটিন। আর এই প্রতিটি উপাদানই ওজন কমাতে সহায়ক এবং হাড়ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: সামনে সেই মহিলারা, পঞ্চায়েতের আগে বিরাট প্ল্যান তৃণমূলের! তুঙ্গে আলোড়ন
সবজি:
টম্যাটো এবং বেলপেপারের মতো সবজি থাইরয়েড রোগীদের জন্য উপকারী। ভিটামিন-সি, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই সব সবজি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক।
আরও পড়ুন: 'ওর ধারে কাছে কেউ ভিড়তে পারবে না', অভিষেককে কেন এমন নিশানা শুভেন্দুর? জোর জল্পনা
জল এবং নন-ক্যাফিনেটেড পানীয়:
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা উচিত। এতে ফোলা ভাব দূর হয়, তার সঙ্গে শরীর থেকে টক্সিন বাইরে বেরিয়ে যায়। আর হরমোনের মাত্রাও বজায় থাকে। সেই সঙ্গে সঠিক পরিমাণ জল পান করতে থাকলে ওজন কমার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যায়।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, হাইপোথাইরয়েডিজম থেকে আরোগ্য লাভের উপায় খুবই সাধারণ। আর জটিলতা এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ওষুধ খেতে হবে। কিন্তু সময়ে এর চিকিৎসা না হলে কিন্তু তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।