ঝটপট ঝরবে ওজন! বেশি না-খেটেই বানানো যেতে পারে লোভনীয় এবং পুষ্টিকর এই সব ব্রেকফাস্টের পদ
- Published by:Shubhagata Dey
- trending desk
- Edited by:Anulekha Kar
Last Updated:
প্রাতরাশের খাবার এমন খেতে হবে, যা একাধারে পুষ্টিকর, আবার অন্য দিকে অনেকটা সময় ধরে পেট ভর্তি রাখতে পারে। আর তার ফলে ওজনও ঝরবে খুব তাড়াতাড়ি।
সকালে উঠে ব্রেকফাস্টে কী খাওয়া যায়, সেটা নিয়েই একপ্রকার মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। কারণ ব্রেকফাস্ট হল দিনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কথায় আছে না, প্রাতঃরাশ হওয়া উচিত রাজার মতো। মধ্যাহ্নভোজন বা দুপুরের খাবার হওয়া উচিত রাজপুত্রের মতো। আর ডিনার বা রাতের খাবার হওয়া উচিত একেবারে ফকিরের মতো। তার মানে বোঝাই যাচ্ছে যে, দিনের প্রথম খাবার খেতে হবে একদম পেট ভর্তি করে। দুপুরের খাবার খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। আর ডিনার বা দিনের শেষ খাবার খেতে হবে খুবই স্বল্প পরিমাণে। তবে দিনের প্রথম খাবার পেট ভর্তি করে খাওয়ার অর্থ এই নয় যে, একেবারে জমিয়ে খানাপিনা শুরু করে দিতে হবে।
আসলে পেট ভর্তি করা খাবার মানেই যে ভারি খাবার, তা কিন্তু একেবারেই নয়। বলা ভাল যে, ব্রেকফাস্টে এমন কোনও খাবার খেতে হবে, যা হালকা অথচ অনেক ক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। আসলে প্রাতরাশের খাবার এমন খেতে হবে, যা একাধারে পুষ্টিকর, আবার অন্য দিকে অনেকটা সময় ধরে পেট ভর্তি রাখতে পারে। আর তার ফলে ওজনও ঝরবে খুব তাড়াতাড়ি। তাহলে এই ধরনের কয়েকটি ব্রেকফাস্টের রেসিপির সম্পর্কেই আজ আলোচনা করে নেওয়া যাক।
advertisement
নারকেলের চাটনি সহযোগে ডাল-সবজির ইডলি:
advertisement
এই পদটির জন্য মুগ ডাল ধুয়ে পরিষ্কার করে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা কিংবা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে। তার পর জলটা ছেঁকে বার করে নিয়ে তাতে ইয়োগার্ট, কাঁচালঙ্কা, আদা এবং খুব অল্প পরিমাণে জল যোগ করে মিহি একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এবার ওই মিশ্রণের মধ্যে নিজের পছন্দমতো সবজির কুচি, ধনেপাতা কুচি, পরিমাণ মতো লবণ ও চিনি এবং অল্প লেবুর রস নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এর পর একটা ছোট্ট প্যানে তেল গরম করে তাতে অল্প পরিমাণে সর্ষে, উরাদ ডাল, কাজু বাদাম এবং কারি পাতা ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন খানিক নাড়াচাড়া করে গন্ধ বেরোলে তা ডালের ব্যাটারে যোগ করতে হবে। ভাল করে সবটা মিশিয়ে নিয়ে এর মধ্যে ফ্রুট সল্ট অথবা ইনো যোগ করতে হবে। এবার স্টিম করার পালা। তার জন্য একটা ইডলির ছাঁচে অল্প পরিমাণে তেল লাগিয়ে নিয়ে তাতে ব্যাটারটা ঢালতে হবে।
advertisement
১৫ মিনিট ধরে স্টিম করতে হবে। অর্থাৎ ৫ মিনিট উচ্চ আঁচে আর বাকি ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে এটা করতে হবে। এক বার হয়ে গেলে তার উপর ঘি ছড়িয়ে নিয়ে নিজের পছন্দ মতো চাটনির সঙ্গে গরম গরম উপভোগ করতে হবে। তবে এই ডালের ইডলি নারকেলের চাটনির সঙ্গে দারুন যাবে। আর এই চাটনি বানানোর জন্য একটি মিক্সার গ্রাইন্ডার জারে পরিমাণ মতো তাজা নারকেল, কাঁচা লঙ্কা, আদা, তেঁতুল, লবণ এবং জল নিতে হবে। বেশি ঘন হয়ে গেলে প্রয়োজন মতো জল যোগ করা যাবে।
advertisement
একটি ছোট্ট প্যানে তেল গরম করে তাতে গোটা সর্ষে, উরাদ ডাল, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিতে হবে। ডালটা যত ক্ষণ না হালকা বাদামি হচ্ছে, তত ক্ষণ নাড়াচাড়া করতে হবে। এর পর ওই ফোড়নের মিশ্রণে কারি পাতা এবং হিং যোগ করতে হবে। আবার কয়েক সেকেন্ড সাঁতলে নিতে হবে। ঘ্রাণ বেরোলে বেটে রাখা চাটনির মিশ্রণের উপর ফোড়নের মিশ্রণটা ঢেলে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু নারকেলের চাটনি।
advertisement
ওটসের দুর্দান্ত লোভনীয় পদ:
এই রেসিপিটা খুবই লোভনীয়। আর বানাতে একেবারেই বেশি সময় লাগবে না। আর কোনও রকম ঝামেলাও পোহাতে হবে না। একটি কাচের জারে স্বাস্থ্যকর ওটস এবং চিয়া সিডস মিশিয়ে নিতে হবে। এর পর এই মিশ্রণের মধ্যে কিছুটা গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট যোগ করতে হবে। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে কিছুটা স্যুইটনার এবং দুধ। ভাল করে সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে নিতে হবে, যাতে ওই মিশ্রণের ভিতর কোনও রকম ডেলা না-থাকে। ভাল করে মেশানো হয়ে গেলে জারের ঢাকনা ভাল করে আটকে নিতে হবে। কম করে ২ ঘণ্টা মতো রেফ্রিজারেটরের মধ্যে রেখে দিতে হবে ওই মিশ্রণ ভরা কাচের জারটাকে। আবার সারা রাতও এ-ভাবে রেখে দেওয়া যেতে পারে। পরের দিন সকালে রেফ্রিজারেটর থেকে বার করে খেতে হবে। ব্যাপারটাকে আরও পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু করে তুলতে কিছু বাদাম এবং ফল যোগ করে নেওয়া যেতে পারে। ওটসের এই পদ বেশ স্বাস্থ্যকর এবং অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করে।
advertisement
রকমারি সবজি দিয়ে তৈরি ডিমের অমলেট:
দুটো ডিম ভেঙে ভাল করে ফেটিয়ে এক পাশে রেখে দিতে হবে। এর মধ্যে একটি প্যানে অল্প তেল গরম করে তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নিতে হবে। হালকা বাদামি না-হওয়া অবধি ভাজতে হবে এবং তাতে টম্যাটো যোগ করতে হবে। আবার খানিকটা নাড়াচাড়া করার পরে কিছু কাঁচা লঙ্কা কুচি এবং অল্প করে আদা-রসুন বাটা দিতে হবে। ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে বিনস, গাজর, মাশরুম, ব্রকোলি, স্প্রিং অনিয়নের কুচি এবং মটরশুঁটি যোগ করতে হবে। দুই মিনিট মতো নাড়াচাড়া করে পরিমাণ মতো সমস্ত মশলা এবং লবণ দিতে হবে।
advertisement
সবজি ভাজা হয়ে গেলে তা তুলে রেখে দিতে হবে। অন্য একটা প্যান গরম করে অল্প মাখন গরম করে তার মধ্যে ফেটিয়ে নেওয়া ডিমটা দিয়ে অমলেট করে নিতে হবে। এ-বার ভাজা হওয়া দিকটা উল্টে নিতে হবে এবং তার উপর ভেজে নেওয়া সবজিটা ছড়িয়ে দিতে হবে। এই বার ভাজা ডিমের দুই দিকটা মুড়ে নিয়ে আবার উল্টে দিয়ে খানিক ভেজে নিলেই রকমারি সবজি দেওয়া ডিমের অমলেট একেবারে রেডি হয়ে যাবে।
পুদিনার চাটনি সহযোগে মুগ ডালের চিলা:
এই সুস্বাদু ও পুষ্টিক রেসিপির জন্য এক কাপ মুগডাল নিয়ে তা ভাল ভাবে পরিষ্কার করে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার তার মধ্যে কাঁচা লঙ্কা, আদা এবং জিরে যোগ করে মিহি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এর পর স্বাদ আরও কয়েক গুণ বাড়াতে এই মিশ্রণের মধ্যে পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়ো, হিং এবং লবণ ও অল্প ধনেপাতা কুচি যোগ করতে হবে। ভাল করে মিশিয়ে একটা ঘন ব্যাটার তৈরি করতে হবে। তবে ব্যাটারে জল মেশানোর সময় এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে যে, ব্যাটারটি এমন হতে হবে, যাতে তা যেন খুব বেশিও ঘন না-হয়।
এর পর একটা তাওয়া গরম করে নিয়ে তার মধ্যে ওই ব্যাটারটি ঢেলে তা সমান ভাবে ছড়িয়ে নিতে হবে। এর উপরে খুবই অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল হালকা করে ছিটিয়ে নিতে হবে। তার পর তাওয়ার ঢাকনা আটকে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। কিছুক্ষণ পরে ডালের ওই চিলা উল্টেপাল্টে রান্না করে নিলেই হল। এর পর প্লেটে সাজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অবশ্য সঙ্গে পুদিনার চাটনি খেতে ভুললে চলবে না।
মিক্সড ভেজিটেবল মাল্টিগ্রেন পরোটা:
সুস্বাদু এই পরোটায় রকমারি সবজি পড়ার ফলে এটি ভীষণই পুষ্টিকর হয়ে ওঠে। একটি বড় বাটিতে হোল হুইট মাল্টিগ্রেন আটা ভাল করে মেখে নিতে হবে। যাতে তা খুব শক্তও না-হয়, আবার খুব নরমও না-হয়। আটা মেখে এক পাশে সরিয়ে রাখতে হবে। নিজের পছন্দমতো সবজি নিয়ে কেটে তা ভাল করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার সেদ্ধ করা সবজি চটকে মেখে নিতে হবে। তবে পুরোপুরি মিহি না-হলেও চলবে। তাতে স্বাদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মশলা, আদা-রসুন বাটা যোগ করতে হবে।
এ-বার আটা মাখা থেকে মাঝারি মাপের লেচি কেটে নিতে হবে। এর পর ওই লেচির ভিতরে সবজির পুর ভরে বেলে নিতে হবে। পরোটা ভাজার জন্য তাওয়া গরম করে তাতে পরোটা দিতে হবে। তার উপর অল্প পরিমাণ ঘি অথবা তেল ছিটিয়ে নিতে হবে। দুই দিকটা ভাল করে ভাজতে হবে। সোনালি অথবা হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর পর গরম গরম পাতে নামিয়ে আচার অথবা ইয়োগার্ট সহযোগে পরিবেশন করতে হবে।
চিয়া পুডিং:
সকালবেলায় উঠে বেশি খাটনির ইচ্ছে না-থাকলে বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর চিয়া পুডিং। আর এটা বানানোর জন্য একটি কাচের জারে দুধ, ইয়োগার্ট, চিয়া সিড, ম্যাপল সিরাপ এবং পরিমাণ মতো লবণ নিয়ে নিতে হবে। সব কটি উপকরণ ভাল করে ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। যাতে চিয়া সিড ৩০ মিনিট মতো ভেজার সময় পায়। জারটির ঢাকনা আটকে সারা রাত রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবে। তার পরের দিন ফ্রিজ থেকে বার করে দেখা যাবে চিয়া পুডিং ঘন এবং ক্রিমের মতো হয়ে গিয়েছে। এমনটা হলে পুডিং উপভোগ করার জন্য একেবারেই প্রস্তুত। এর উপরে নিজের পছন্দমতো ফলের কুচি ছড়িয়ে নিয়েও খাওয়া যাবে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
January 24, 2023 5:10 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
ঝটপট ঝরবে ওজন! বেশি না-খেটেই বানানো যেতে পারে লোভনীয় এবং পুষ্টিকর এই সব ব্রেকফাস্টের পদ