হোম /খবর /লাইফস্টাইল /
সাবধান! আচমকা ওজন কমলে এই রোগগুলো হতে পারে, চর্বি ঝরানোর সঙ্গে এর ফারাক জানুন

Weight Loss: সাবধান! আচমকা ওজন কমলে এই রোগগুলো হতে পারে, চর্বি ঝরানোর সঙ্গে এর ফারাক জানুন

প্রতীকী ছবি৷

প্রতীকী ছবি৷

কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হ্রাসের অর্থ শরীরে গুরুতর কোনও সমস্যা হয়েছে।

  • Share this:

    #কলকাতা: ওয়ার্কআউট করা হয় না। ডায়েট কন্ট্রোলও নয়। তার পরেও হু-হু করে ওজন কমছে! এটা মোটেও খুশি হওয়ার মতো খবর নয়। বরং আতঙ্কের। কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হ্রাসের অর্থ শরীরে গুরুতর কোনও সমস্যা হয়েছে। এবং অবিলম্বে এটাকে রোধ করতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখানো উচিত।

    ডায়েট, ব্যায়াম বা জীবনযাত্রার পরিবর্তন ছাড়াই ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে ১০ পাউন্ড বা তার বেশি ওজন কমাকে বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা। যে কোনও বয়সেই এটা হতে পারে। তবে ৬৫ বহর বা তার বেশি বয়সি ব্যক্তিদের এটা সাধারণ সমস্যা। শরীরের ওজনের ৫ শতাংশ বা ১০ পাউন্ড কমে গেলে সেটা গুরুতর কয়েকটা রোগের লক্ষণ। এখানে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হল।

    ক্যানসার: আচমকা ওজন কমতে শুরু করলে সবচেয়ে বেশি ক্যানসারের সম্ভাবনা। ওজন হ্রাস সাধারণত ক্যানসার রোগীদের মধ্যেই দেখা যায়। এবং সম্ভবত এটা রোগের প্রথম দৃশ্যমান লক্ষণগুলোর মধ্যে একটা। এমনই জানাচ্ছে একাধিক স্বাস্থ্য জার্নাল। এটা শরীরে ক্যানসার বৃদ্ধির অন্যতম লক্ষণ তো বটেই এর সঙ্গে ক্লান্তি, দূর্বলতা, শক্তি হ্রাস, ছোটখাটো কাজ করতে অসুবিধার মতো অন্যান্য লক্ষণ রয়েছে।

    ডায়াবেটিস: অতিরিক্ত ওজন হ্রাস ডায়াবেটিসের লক্ষণও হতে পারে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে, অপর্যাপ্ত ইনসুলিনের কারণে শরীরের রক্ত থেকে গ্লুকোজ নেওয়ার ক্ষমতা ব্যাহত হয়। ফলে কোষে পর্যাপ্ত শক্তি পৌঁছয় না। তাই জৈবিক ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করার জন্য শক্তি সরবরাহ করতে শরীর চর্বি এবং পেশি পোড়াতে শুরু করে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে ওজন কমতে শুরু করে।

    আরও পড়ুন: সিজন চেঞ্জে নিজেকে রাখুন সুরক্ষিত, দীপাবলিও হোক স্বাস্থ্যের আলোয় উজ্জ্বল

    ডিমেনশিয়া: অনেকেই আশ্চর্য হতে পারেন, কিন্তু ডিমেনশিয়া হলেও ওজন কমতে শুরু করে। ২০১৭ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ডিমেনশিয়ার রোগীদের আচমকা ওজন হ্রাস পায়। মনে করা হয়, ডিমেনশিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে সব ওষুধ দেওয়া হয়, তার ফলেই ওজন কমতে শুরু করে। এই রোগ শরীরের ওজন হ্রাস জ্ঞানীয় বৈকল্য এবং পুষ্টির অভাবের কারণেও হতে পারে।

    হাইপারথাইরয়েডিজম: শরীরের ওজনে ব্যাপক পরিবর্তনের আরেকটি প্রধান কারণ হল হাইপারথাইরয়েডিজম। এ ক্ষত্রে শরীরের সামগ্রিক বিপাক ব্যাপক প্রভাবিত হয়। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হল, রোগীর খিদে একই থাকে। কিন্তু ওজন মারাত্মকভাবে কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের দ্রুত স্পন্দন হ'ল এই রোগের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরক্সিন হরমোন খুব বেশি উৎপাদন করে।

    পেপটিক আলসার: হঠাৎ ওজন কমার আরেকটি কারণ হতে পারে পেপটিক আলসার। এতে অল্প খাবারেই পেট ভরে যায়। পেপটিক আলসারে আক্রান্ত রোগীদের ঘন ঘন বমিও হয়।

    ওজন কমার জন্য অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: উপরে উল্লিখিত রোগগুলি ছাড়াও, অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতাগুলি হল: হাইপারক্যালসেমিয়া, পারকিনসন্স ডিজিজ, স্ট্রোক বা স্নায়বিক ব্যাধি, অ্যাডিসন ডিজিজ, অ্যালকোহল ব্যবহার ব্যাধি, সিলিয়াক ডিজিজ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ক্রোনস ডিজিজ, ড্রাগ আসক্তি এবং হার্ট ফেইলিউর। এছাড়া, আচমকা ওজন কমলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই ওজন হঠাৎ কমতে শুরু করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

    ওজন হ্রাসের চিকিৎসা: হঠাৎ ওজন কমার ফলে যদি কোনও গুরুতর রোগ বাসা নাও বাঁধে এবং অন্যান্য রোগের উপসর্গ না থাকে তাহলে বিশেষ ডায়েটের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আরও ক্যালোরি কিংবা পুষ্টির জন্য চিকিৎসক নিউট্রিশন শেকের সুপারিশ করতে পারেন। বা খিদে কিংবা খাবারের স্বাদ বাড়ানোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। যাতে ব্যক্তি আরও বেশি করে খায়। পরামর্শ এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য একজন ডায়েটিশিয়ানের কাছেও রেফার করা হতে পারে।

    মাথায় রাখতে হবে ওজন হ্রাস আর চর্বি ঝরানো এক জিনিস নয়। যদিও খুব কম-ক্যালোরি ডায়েট মেনে চললেই ওজন কমে। কিন্তু মেদ বা চর্বি ঝরানোর সঙ্গে এর মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। গবেষণা অনুসারে, খুব কম-ক্যালোরি ডায়েট অনুসরণ করলে শরীরের ভর কমে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এতে পেশির শক্তি হারানোর সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে ক্লান্তি, চুল পড়া, রক্তাল্পতা, দুর্বল হাড়ের সমস্যা হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। গুরুতর পরিস্থিতিতে ডায়েটে সাপ্লিমেন্ট যোগ করতে হবে। তবে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ ছাড়া সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু না করাই ভাল।

    First published:

    Tags: Weight Loss