প্রাতরাশ বা ব্রেকফাস্ট। দিনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কথায় বলে, সকালের খাবার রাজার মতো খাওয়া উচিৎ। কারণ সকালের প্রথম খাবারই সারা দিনের খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়াকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অনেকেই ডায়েট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে চলেন। অনেকে আবার নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করেন। তবে সকালের খাবারে কলার গুরুত্ব বরাবরই আলাদা। অধিকাংশই ব্রেকফাস্টে কলা খেতে চান। অনেকে আবার খালি পেটেই কলা খেয়ে নেন। কিন্তু খালি পেটে কি কলা খাওয়া উচিৎ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা, জেনে নেওয়া যাক বিশদে!
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, কলার উপকারিতা বিষয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কলা খেলে হৃদযন্ত্র ভাল থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ও অবসাদ কমে যায়। এর পাশাপাশি কলায় কোষ্ঠকাঠিন্যও কমে। এতে আয়রন থাকে। তাই অ্যানিমিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে কলা। এক্ষেত্রে এই উচ্চ পুষ্টিগুণসম্পন্ন ফলের মধ্যে ট্রিপটোফান, ভিটামিন B6, ভিটামিন B, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ একাধিক উপাদান থাকে।
কিন্তু খালি পেটে কি কলা খাওয়া যায়? একাধিক প্রতিবেদন এই বিষয়টি নিয়ে নানা তথ্য উঠে আসে। আর এর পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। ডায়েট বিশেষজ্ঞদের মতে, কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ফাইবার ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তাই খালি পেটে কলা খাওয়া উচিৎ নয়। কারণ, কলায় উপস্থিত অধিক মাত্রার সুগার শরীরের উপরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে। এই বিষয়ে বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ড. অনুজ সুদ (Dr. Anju Sood) জানিয়েছেন, কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। সকালবেলায় খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু খালি পেটে নয়। কারণ খালি পেটে কলা খেলে অ্যাসিড হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এক্ষেত্রে ড্রাই ফ্রুটস, আপেল বা অন্যান্য ফল মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। খালি পেটে কলা খেলে, রক্তে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। হৃদযন্ত্রের উপরেও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
কী বলছে আয়ুর্বেদ?
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মতে, সকাল সকাল খালি পেটে ফল খাওয়া উচিৎ নয়। এই বিষয়ে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. বি এন সিনহা (Dr. BN Sinha) জানিয়েছেন, শুধু কলা নয়, খালি পেটে যে কোনও ফল এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ। আজকাল অধিকাংশ ফলেই প্রচুর পরিমাণে সার-ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, তাই খালি পেটে ফল না খাওয়াই ভাল। এগুলি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে অন্য কোনও খাবারের সঙ্গে ফল বা কলা মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে সব চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
তাই সকালে কলা খাওয়া যেতে পারে। তবে অন্য কোনও খাবারের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে ভাল হয়। এতে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যায়। শরীরও ভাল থাকে। এক্ষেত্রে কলার সঙ্গে ওটস, বেরি, ম্যাপল সিরাপ, বাদাম বা এই জাতীয় জিনিসও কিনে আনতে হবে। তার পর বানিয়ে নিতে হবে পছন্দমতো ব্রেকফাস্ট। এর জেরে শরীরেও কোনও সমস্যা হবে না। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন, তাঁদের জন্যও এই ধরনের রেসিপি বেশ কার্যকরী।
সকালে কী ভাবে খাওয়া যাবে কলা? এক্ষেত্রে কলার মধ্যে ওটস, বেরি বা এই জাতীয় নানা জিনিস মিশিয়ে বেশ স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু ব্রেকফাস্ট বানানো যেতে পারে। আসুন দেখে নেওয়া যাক!
বানানা ওটমিল কুকিজ (Banana Oatmeal Cookies)
স্বাদের পাশাপাশি বেশ স্বাস্থ্যকর প্রাতরাশ এটি। এক্ষেত্রে এক কাপ মতো ওটস, কলা, ম্যাপল সিরাপ, বাদাম নিতে হবে। এর পর পরিমাণ মতো সব কিছু মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই বিশেষ ব্রেকফাস্ট।
বেরি বানানা সিরিয়াল (Berry Banana Cereal)
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তৈরি হয় কলার এই রেসিপি। এক্ষেত্রে কলা ও বেরি ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। পরে দুধ মেশাতে হবে। এর স্বাদও বেশ ভাল।
চকোলেট বানানা স্মুদি (Chocolate Banana Smoothie)
ব্রেকফাস্টের ক্ষেত্রে ভাল অপশন হতে পারে। রোজকার রুটিনে বদল আনতে পারে চকোলেট ও কলার এই রেসিপি। চকোলেট বানানা স্মুদি তৈরি করতে মূলত কলা, বাদাম, দুধ ও কোকো পাউডার লাগে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Banana, Health, Health Tips