কলকাতা: হৃদপিণ্ড আসলে একটি পেশীবহুল পাম্প বিশেষ, যার কাজই হল শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, বৃক্ক ইত্যাদি রক্ত পাম্প করা। হৃদপিণ্ড যখন এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয় তখন তাকে হার্ট ফেলিওর বলে। এ বিষয়ে জানাচ্ছেন বেঙ্গালুরুর কাবেরী হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির প্রবীণ চিকিৎসক গণেশ নল্লুর শিবু।
উপসর্গ এবং লক্ষণ কী?
হার্ট ফেলিওর-এর সাধারণ উপসর্গ হল হাঁটা বা অন্য কোনও কাজের সময় শ্বাস নিতে অসুবিধা, পা বা পেট ফুলে যাওয়া, ক্লান্তি এবং শক্তির অভাব।
আরও পড়ুনঃ থাইরয়েডের কারণে ওজন বাড়ছে? নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাতে থাকুক এই সব খাবার, পরামর্শ বিশেষজ্ঞের
কাদের হতে পারে?
সাধারণত যাঁদের হার্ট অ্যাটাক, এনজিওপ্লাস্টি বা করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং-এর ইতিহাস রয়েছে তাঁদের আশঙ্কাই বেশি। দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থেকেও হার্ট ফেলিওর হতে পারে। ভাইরাল অসুস্থতার পরে অল্প বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রেও হার্ট ফেলিওর ঘটতে পারে, একে ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস বা রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ বলা হয়।
রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি কী কী?
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক সাধারণত ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম এবং রক্ত পরীক্ষা করে থাকেন। ইকোকার্ডিওগ্রাম-এ হৃৎপিণ্ডে আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে পরীক্ষা করা হয় তার কার্যকরী ক্ষমতা কতটা। রক্ত পরীক্ষাগুলি করা হয় অন্য রোগ নির্ধারণের জন্য, যেমন রক্তাল্পতা, কিডনি ব্যর্থতা, লিভার ব্যর্থতা এবং থাইরয়েড সমস্যা। এর পর চিকিৎসক হার্ট ফেলিওরের কারণ হিসেবে ধমনীতে ব্লকেজ আছে কিনা তা দেখতে একটি করোনারি এনজিওগ্রাম করার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কনের সাজে ন্যুড মেকআপ? কিয়ারা, আথিয়াদের মতো লুক পেতে শুধু মেনে চলুন এই টিপসগুলো!
চিকিৎসা কী?
চিকিৎসক অতিরিক্ত তরল (মূত্রবর্ধক বা জলের ট্যাবলেট) থেকে পরিত্রাণ পেতে ওষুধ দিতে পারেন। সঙ্গে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করার ওষুধও দিতে পারেন।
অন্য চিকিৎসা বিকল্পগুলি কী কী?
চিকিৎসক হার্টের ফেলিওরের কারণের করোনারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং এবং ভালভ প্রতিস্থাপনের কথা ভাবতে পারেন। এছাড়াও বিশেষ ধরনের পেসমেকার রয়েছে (কার্ডিয়াক রিসিঙ্ক্রোনাইজেশন থেরাপি), যাতে রোগীদের উপসর্গ বা প্রাকলক্ষণ থাকলে শারীরিক উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। তেমন প্রয়োজন হলে বাম ভেন্ট্রিকুলার অ্যাসিস্ট ডিভাইস এবং হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশন বিবেচনা করা হবে।
আরও পড়ুনঃ তরুণ ক্রীড়াবিদদের মধ্যে কেন স্পোর্ট ইনজুরি বেশি খুবই সাধারণ বিষয়? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
সুস্থ থাকার চাবিকাঠি:
চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া।
হাঁটার মতো নিয়মিত ব্যায়াম করা।
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে লবণের পরিমাণ কমানো।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিনের তরল গ্রহণের পরিমাণ কমানো।
হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার কোনও অবনতি হয়নি তা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা।
যে কোনও উপসর্গ দেখা দিলে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া।
লক্ষণ কী?
হার্ট ফেলিওর-এর লক্ষণ কোনও কোনও ক্ষেত্রে ক্যানসারের চেয়েও খারাপ হতে পারে। তাই এটা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা পাবেন এবং তাঁদের পরামর্শ মতো স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করবেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Heart failure