কলকাতা: খেলার সময় কাটা-ছেড়া ক্ষত তো হয়ই। কখনও কখনও তো ক্ষত এতটাই বেশি হয়, যা জীবন এবং কেরিয়ারের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। সক্রিয় প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ২১ শতাংশের ক্ষেত্রেই স্পোর্টস ইনজুরি প্রভাব ফেলে। কমবয়সী ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৪ শতাংশই নিজেদের অ্যাথলেটিক কেরিয়ারের কোনও এক পর্যায়ে কোনও না কোনও ক্ষতর সম্মুখীন হতেই হয়। আর এই ধরনের ক্ষত সাধারণত মৃদু থেকে গুরুতর হতে পারে। যাকে অ্যাকিউট অথবা ক্রনিকের পর্যায়ে ফেলা হয়। এই বিষয়ে জানাচ্ছেন স্পর্শ হাসপাতালের জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট এবং রোবোটিক সার্জারির কনসালট্যান্ট অর্থোপেডিক্স ডা. সমর্থ আর্য (Dr. Samarth Arya)।
অ্যাকিউট ইনজুরি:
এসিএল টিয়ার:
অ্যান্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট বা এসিএল ফিমারকে টিবিয়ার উপরিভাগের সঙ্গে যোগ করে। আর হাঁটুর এই লিগামেন্টই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সংস্পর্শ ছাড়া কিংবা অপ্রত্যক্ষ সংস্পর্শ কিংবা সরাসরি সংস্পর্শের কারণে এসিএল টিয়ার হতে পারে।
এসিএল ছিঁড়ে যাওয়ার হাত থেকে প্রতিরোধ করার জন্য:
একটি আদর্শ এসিএল টিয়ার প্রিভেনশন প্রোগ্রামে থাকে স্টেবিলিটি প্লায়োমেট্রিক্স এবং স্ট্রেংথ ট্রেনিং কম্পোনেন্ট। নিউরোমাস্কুলার নিয়ন্ত্রণ, ডায়নামিক জয়েন্ট স্টেবিলিটি, প্রোপ্রায়োসেপশন, ব্যালেন্স এবং সিঙ্গেল লেগ-ট্রেনিং বাড়ানোর জন্য স্টেবিলিটি কম্পোনেন্টের উপর জোর দেওয়া হয়।
মেনিসকাস টিয়ার:
মেনিসকাস হল কার্টিলেজের একটা অংশ, যা মূলত ফিমার এবং টিবিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে থাকে। আর অনেকটা কুশনের মতো কাজ করে। যাতে শক না-লাগে। এসিএল টিয়ারের পরেই মেনিসকাস টিয়ার দ্বিতীয় সাধারণ হাঁটুর ক্ষত।
মেনিসকাস ছিঁড়ে যাওয়ার হাত থেকে প্রতিরোধ করার জন্য:
মুভমেন্ট প্যাটার্ন বজায় রাখা, ওয়ার্ম-আপ, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা এবং ভাল ফ্লেক্সিবিলিটির মাধ্যমে হিপ এক্সটেন্সর, নি ফ্লেক্সর ও নি এক্সটেন্সরের সাহায্য এই ক্ষতই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গোড়ালি মচকে যাওয়া বা অ্যাঙ্কল স্প্রেন:
মচকানো হল আরও একটি লিগামেন্টে স্ট্রেচিং কিংবা টিয়ার। যা সাধারণত হয়ে থাকে গোড়ালি, হাঁটু, কবজি অথবা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে। এর মধ্যে অবশ্য গোড়ালি মচকে যাওয়াটাই সবথেকে সাধারণ।
গোড়ালি মচকানো প্রতিরোধ করার জন্য:
নিউরোমাস্কুলার ট্রেনিং প্রোগ্রাম আসলে গোড়ালির ইনস্টেবিলিটি সারাতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমেই মূলত গোড়ালিকে মচকানোর হাত থেকে রক্ষা করা যায়। এই প্রোগ্রামের মধ্যে থাকে ফ্লেক্সিবিলিটি সংক্রান্ত নানা উপাদান, ক্ষিপ্রতা, ভারসাম্য, প্লায়োমেট্রিক্স এবং স্ট্রেংথ ট্রেনিং।
আরও পড়ুন- সারা বছর কড়াইশুঁটির কচুরি খেতে চান! মটর সংরক্ষণ করে রাখুন এই উপায়ে
পেশিতে টান ধরা:
টান ধরার অর্থ হচ্ছে পেশি অথবা টেন্ডন ছিঁড়ে যাওয়া। যা ওই পেশিগুলিকে হাড়ের সঙ্গে আটকে রাখতে সাহায্য করে। পেশিতে টান যেখানে খুশি হতে পারে। আর ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে সব থেকে সাধারণ যে-সব পেশিতে টান ধরে, সেগুলি হল - কাফ মাসল, হ্যামস্ট্রিং, কোয়াড্রিসেপ অথবা রোটেটর কাফ।
পেশিতে টান ধরা প্রতিরোধ করতে:
সঠিক ওয়ার্ম-আপ, অপটিমাল মুভমেন্ট প্যাটার্ন, ভাল কোর স্টেবিলিটি এবং নড়াচড়ার ক্ষেত্রে ভাল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই পেশিতে টান ধরার বিষয়টা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বারসাইটিস:
কিছু প্রধান জয়েন্টে টেন্ডনের ঠিক পরেই ফ্লুয়িডে পূর্ণ যে স্যাক থাকে, সেটাকেই বারসা বলা হয়। নড়াচড়া কিংবা হাঁটাচলার সময় জয়েন্টে যে ঘর্ষণ হয়, তা কমাতে সাহায্য করে এই স্যাক। ওই স্যাকের ইনফ্লেমেশন বোঝাতে ব্যবহৃত হয় বারসাইটিস শব্দটি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পশ্চাদ্দেশ, হাঁটু, কাঁধ, গোড়ালি অথবা কনুইয়ের জয়েন্টের বারসা স্যাকেই প্রদাহ হয়।
বারসাইটিস প্রতিরোধ করতে:
এর জন্য ট্রেনিং প্রোগ্রাম জরুরি। যেখানে জয়েন্ট স্টেবিলিটির উপর জোর দেওয়া হয়। এই ধরনের ক্ষতর উপর নজর দিতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bone Health, Health Care Tips