ব্যস্ত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস বাড়ছে। ফলে সারা বিশ্বেই পুরুষদের মধ্যে একটা সাধারণ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর সেটা হল শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া বা ওলিগোস্পার্মিয়া। এ ক্ষেত্রে অবশ্য পিছিয়ে নেই আমাদের দেশও। শুধু জীবনযাত্রাই নয়, কিছু শারীরিক সমস্যার জেরেও ওলিগোস্পার্মিয়া হতে পারে। আর শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যাও আসতে পারে। যার ফলে মানসিক চাপ বাড়ে। সব মিলিয়ে রোগীর জীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করে। এ-ক্ষেত্রে তাই ঝুঁকির বিষয়গুলি এড়িয়ে চলতে হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসা বিকল্পগুলির দিকটাও খতিয়ে দেখা বাঞ্ছনীয়। (Image: Shutterstock)
ওলিগোস্পার্মিয়ার কারণ: ধূমপান, মদ্যপান ও মাদক সেবনের মতো বদভ্যাস, ভুলভাল খাদ্যাভ্যাস বা ডায়েট এবং এক্সারসাইজ না-করার অভ্যেসের কারণেই ওবেসিটি, স্ট্রেসের মতো লাইফস্টাইলজনিত সমস্যা দেখা দিতে থাকে। যার ফলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে শুরু করে। এমনকী গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যে-সব পুরুষ ধূমপান করেন, তাঁদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তবে যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁদের শুক্রাণু সংখ্যা ধূমপায়ীদের তুলনায় ঠিক থাকে।
এখানেই শেষ নয়, অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল সেবন এবং অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ও কোকেনের মতো উপাদানও এই অবস্থার জন্য দায়ী। এ-ছাড়া মানসিক চাপ বা স্ট্রেসও সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণে আচমকা ওজন বেড়ে যেতে পারে, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেই সঙ্গে ফার্টিলিটি সাইকেলেও মানসিক চাপ ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এর বাইরে অবশ্য কিছু মেডিকেল কারণও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম যৌনবাহিত সংক্রমণ, অ্যান্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই খেয়ে নেওয়া এবং হরমোনের ভারসাম্যে ঘাটতি প্রভৃতি। আবার ভ্যারিকোসিলের জেরে স্ক্রোটাম অংশের শিরাগুলি আকারে বৃদ্ধি পায়। যার ফলে টেস্টিসে রক্তপ্রবাহে ব্যাঘাত ঘটে। শুধু তা-ই নয়, রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের কারণেও ওলিগোস্পার্মিয়া দেখা দিতে পারে।
প্রতিরোধের উপায় এবং চিকিৎসা: বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনে ওলিগোস্পার্মিয়া প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা করা যেতে পারে। এর জন্য পরিমিত পরিমাণে মদ্যপান করতে হবে। মাদক সেবন এবং ধূমপানের অভ্যেস ত্যাগ করতে হবে। তার বদলে স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করতে হবে। এক্সারসাইজ রুটিন মেনে চলতে হবে। মানসিক চাপও কমিয়ে দিতে হবে। স্ক্রোটাম অংশ যেন কোনও গরম বস্তুর সংস্পর্শে না-আসে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এছাড়াও শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার চিকিৎসার আরও বিকল্প রয়েছে। সেটা অবশ্য এক-এক ক্ষেত্রে এক-এক রকম হতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সার্জারি অথবা হরমোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আবার কিছু কিছু রোগীকে কেবলমাত্র ওষুধ দিলেই সমস্যা সেরে যায়। আর এক্ষেত্রে কী কী করণীয়, তা বুঝে নেওয়ার জন্য ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেওয়া উচিত। Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন