#কলকাতা: স্কুল বাস চালকদের আচরণ নিয়ে এবার সতর্ক করছে রাজ্য পরিবহণ দফতর।শুক্রবার সল্টলেকের স্কুলের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। কেন বাস চালকদের মোবাইল ফোন সুইচড অফ থাকবে, তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকার ফের একবার স্কুল বাসের ফিটনেস দেখে নিতে চায়।
প্রসঙ্গত, গতকাল সল্টলেকের শিক্ষা নিকেতন স্কুলের তিনটি বাস পড়ুয়াদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ উধাও হয়ে যায়৷ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অভিভাবকরা৷ পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ সাফাই দেয়, সমন্বয়ের অভাবেই ভুল রুটে চলে গিয়েছিল বাসগুলি৷
আরও পড়ুন: ৪০ জন পড়ুয়া নিয়ে 'উধাও' সল্টলেকের স্কুলের ৩টি বাস! তোলপাড় শহর, শেষমেশ যা হল...
নিয়ম বলছে রাস্তায় বাণিজ্যিক গাড়ি চালাতে গেলে সময় অনুযায়ী ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকতে হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত স্কুল বাস চলে, সেগুলিও বাণিজ্যিক গাড়ির আওতায় পড়ে। কিন্তু গোটা রাজ্যে এমনই অসংখ্য বাণিজ্যিক স্কুল গাড়ি ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই দৌড়ে যাচ্ছে। এবার সেই সমস্ত গাড়িকে ধরতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর।
প্রাথমিকভাবে রাজ্য পরিবহণ দফতর যে তালিকা তৈরি করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে কলকাতা শহরের বেশ কয়েকটি নামী স্কুলের বাসের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। কলকাতায় এমন একটি স্কুল যারা নিজেরা বাস চালায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। সেই স্কুলের ১০ টি বাস গত তিন বছর ধরে চলছে ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া। একই সঙ্গে এই সবকটি বাসের ট্যাক্স সহ বাকি সবকিছু বাকি পড়ে রয়েছে।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা বিগত কয়েক মাস ধরে বারবার এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যদিও তারা আমাদের কথায় কোনও কর্ণপাত করেনি। আমরা তাই শো-কজ করেছি। ওই বাসগুলি কেন বাতিল করা হবে না, তা আমরা জানতে চেয়েছি। তবে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
দফতর সূত্রে খবর এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার আরও একটি নামী স্কুল। যারা ১৬ বছরের পুরনো স্কুল বাস চালাচ্ছে। রাজ্য সরকারের দূষণ তালিকাতেও রয়েছে সেই স্কুল বাস। এছাড়া কলকাতার মধ্যেই সোদপুর, সোনারপুর, ব্যারাকপুর, শ্রীরামপুর ও হাওড়াতেও দিব্যি চলছে এই সব ফিটনেস ফেল হওয়া অসুস্থ বাস।
আরও পড়ুন: অবশেষে হদিশ মিলল পড়ুয়া সমেত স্কুলবাসের! কোথায়?
রাজ্য সরকার ফিটনেস ফেল করার ফলে বকেয়া অর্থের ভার কমাতে বাণিজ্যিক গাড়িগুলিকে ব্যাপক ছাড় দিচ্ছে রাজ্য সরকার। মাত্র ১৫০০ টাকা দিলেই মকুব হচ্ছে বাকি টাকা। তার পরেও একাধিক স্কুলের এমন আচরণ ঘিরে ক্ষোভ রয়েছে পরিবহণ দফতরের অন্দরে। তাদের আরও বেশি আশ্চর্য করেছে অভিভাবকদের উদাসীনতা। নাহলে তিন বছর ধরে ফিটনেস ফেল করা গাড়ি তাদের বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় চলছে আর জানতে পারছেন না! এই বিষয়টি অবাক করেছে পরিবহণ দফতরকেও।
শহরে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে যাতায়াত করে পুলকার এবং স্কুল বাস। বেশ কিছু স্কুলে নিজস্ব বাস চলে। আর বাকিদের নিয়ে যাতায়াত করে স্কুল বাস অ্যান্ড ক্যারেজ অ্যাসোসিয়েশনের বাস। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ঠিক করেছে। আমরা নিয়ম মেনে গাড়ি চালাই তবু আমাদের উপরে অত্যাচার হয়। আর এই সমস্ত স্কুলগুলি নিয়ম না মেনেই বাস চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়না। এবার ব্যবস্থা নিলে আমরা খুশি হব।”
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্কুলগুলিতে এই ব্যপারে নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর।রাজ্যের ব্ক্তব্য, স্কুল বাস চালকদের জন্যে তারা নির্দিষ্ট গাইড লাইন করতে চায়। সল্টলেকের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি চায় না রাজ্য সরকার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।