#কলকাতা: ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনার অভিযানের ধাক্কা এসে লাগছে পশ্চিমবঙ্গে (Bengal Students in Ukraine)। কখনও সেই নাড়া পড়ছে গোবরডাঙায়, কখনও তা শিলিগুড়িতে। রাজ্যের একাধিক পড়ুয়া এই মুহূর্তে ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন (Bengal Students in Ukraine)। কী ভাবে ফিরবেন তাঁরা, কী হবে তাঁদের-- এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে তীব্র উদ্বেগ-আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে তাঁদের পরিবারগুলি (Bengal Students in Ukraine)। কখনও ফোনে কথা হচ্ছে, কখনও ভিডিও কলে দেখে মনকে শান্ত করার চেষ্টা, কিন্তু সব মিলিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তা যেন আরও চেপে ধরছে।
গোবরডাঙ্গা গার্লস হাইস্কুলের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন স্বাগতা। বাবা দেবাশিস সাধুখাঁ, মা রাজ্যশ্রী সাধুখাঁ। বাড়ি বেরগুম ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত, নকপুল লক্ষীপুর। বাবা দেবাশিস বানিপুর হোম-এর সুপারভাইজার,মা গৃহবধূ। তিন বছর আগে ইউক্রেনে ডাক্তারি পডতে যান স্বাগতা। রুশ আগ্রাসনের জেরে ইউক্রেনের কিয়েভে আটকে পড়া বহু ভারতীয়ের তালিকায় রয়েছেন তিনি। কিয়েভে MBBS-এর তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া স্বাগতা ছাড়াও ভারতীয় কীর্তিসোম চৌধুরী নামে একজনও আটকে আছেন স্বাগতার সঙ্গে, তিনি পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য চালু হল হেল্পলাইন, জানাল বিদেশমন্ত্রক
শুধু গোবরডাঙা নয়, হাবড়ার এক তরুণীও আটকে পড়েছেন 'যুদ্ধক্ষেত্র' ইউক্রেনে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া থানার কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিপুর দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার বিশ্বাসের মেয়ে নিশা বিশ্বাস আটকে পড়েছেন সে দেশে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেনে যান তিনি। মধ্য ইউক্রেনের চিফ মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করছেন দক্ষিণ বাংলা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী নিশা বিশ্বাস। তার মধ্যেই এসে পড়েছে যুদ্ধ।
রয়েছেন আরেক ছাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির অর্ঘ্য মাঝি। সরাসরি এদিন তিনি কথা বলেছেন নিউজ ১৮ বাংলার সঙ্গে। অর্ঘ্য রয়েছেন ইউক্রেনের রাধধানী কিভ-এ। সেখানকার পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয় বলে জানান অর্ঘ্য। কিভ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন অর্ঘ্য। আর এই ভাবেই তিনি এখন ইউক্রেনবাসী। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বেশ চিন্তায় দিন কাটছে। অর্ঘ্য বলছেন, "এখানে সরকার পক্ষ থেকে খাবার ও জল সঞ্চয় করে রাখতে বলা হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস অনবরত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা চেষ্টা করছে আমাদের যত দ্রুত সম্ভব যাতে এখান থেকে সরিয়ে দেশে ফেরানো যায়।"
আরও পড়ুন: আটকে হাজার হাজার ভারতীয়, ইউক্রেনে নামতেই পারল না এয়ার ইন্ডিয়ার শেষ উদ্ধারকারী বিমান
এমনই আতঙ্কে শিলিগুড়ির কয়েকটি পরিবার। যেমন বছর দুয়েক আগে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যান শিলিগুড়ির হাকিম পাড়ার প্রীতম মালাকার। ক্লাস হচ্ছে নিয়মিত। গতকালও ক্লাস করেছেন তিনি। ওখানেই এক আফ্রিকান বন্ধুর সঙ্গে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন তিনি। দুশ্চিন্তার কালো মেঘ মালাকার পরিবারে। ঘন ঘন ছেলেকে ফোন করছেন বাবা পীযূষকান্তি মালাকার। তাঁরা চান দ্রুত ছেলে সহ আটকে থাকা অন্য ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক কেন্দ্রীয় সরকার। এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে তাঁদের সঙ্গে কেউই যোগাযোগ করেননি বলে জানান আটকে থাকা ভারতীয়দের পরিবার। প্রীতমেরই এক বন্ধু শিলিগুড়ির ছাত্রও আটকে ইউক্রেনে।
একই রকম উদ্বেগ-দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের তারিখ-উল-রহমান। অশোকনগরের ভাটচালার বাসিন্দা মেহবুব রহমানের ছেলে তারিখ ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন। সেখানে তিনিও ডাক্তারি পড়ছেন। ছেলের চিন্তায় চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না বাবা ও গোটা পরিবার। ইউক্রেনে আটকে দুর্গাপুরের নেহা ও তাঁর সহপাঠীরা। একই চিন্তার প্রহর গুনছে তাঁদের পরিবার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।