কলকাতা: মহিলাদের ক্ষমতায়ণের জন্য কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আর তাঁকে নিয়েই কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন কৌস্তভ বাগচী৷ জামিন পেলেও তাই কৌস্তভের উচিত প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া৷ কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারি কাণ্ডে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা৷
তৃণমূলের এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কৌস্তভ বাগচী। এ দিন জামিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, 'আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন, তার জন্য অধীর চৌধুরীর পা ধরে ক্ষমা চান। তার পরে আমি ক্ষমা চাইব।' একই সঙ্গে শশী পাঁজাকে তাঁর কটাক্ষ, 'ওনাকে বলুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে রেখে রাজনীতি করে দেখাতে।'
আরও পড়ুন: জামিন পেয়েই ন্যাড়া হলেন, মমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বিরাট প্রতিজ্ঞা কৌস্তভের
কৌস্তভের মন্তব্যের সমালচোনা করতে গিয়ে কংগ্রেস নেতার সঙ্গে রোদ্দুর রায়েরও তুলনা করেন শশী পাঁজা৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগে কয়েক মাস আগেই রোদ্দুর রায়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ৷ শশী পাঁজার দাবি, রোদ্দুর রায় এবং কৌস্তভ বাগচী যা বলেছেন, তার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই৷
আরও পড়ুন: কৌস্তভের গ্রেফতারিতে আপত্তি, ফেসবুক বিস্ফোরক কুণাল! ব্যক্তিগত মত, বলল তৃণমূল
সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন কৌস্তভ৷ পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে দীপক ঘোষের দু'টি বই নিয়ে প্রচারের হুমকি দেন কংগ্রেস নেতা৷ এর পরেই শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক তৃণমূল কর্মী৷ ভোর রাত তিনটে নাগাদ কংগ্রেস নেতার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ৷ দীর্ঘক্ষণ জেরার পর কৌস্তভকে এ দিন সকালে গ্রেফতার করা হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, শ্লীলতাহানি, মহিলার সম্মানহানি, হুমকি, অশান্তিতে উস্কানির মতো গুরুতর অভিযোগ আনে পুলিশ৷ যদিও ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে জামিন পেয়ে যান কংগ্রেস নেতা৷
কৌস্তভ জামিন পেলেও তাঁকে নিয়ে অবস্থানে অনড় তৃণমূল কংগ্রেস৷ শশী পাঁজা বলেন, 'কৌস্তভ বাগচীর মন্তব্যে প্রত্যেকে মর্মাহত। ওনার মন্তব্য লজ্জাজনক। গোটা ঘটনায় আমরা ভীষণ ভাবে লজ্জিত৷ মহিলাদের ক্ষমতায়ণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একবার ভেবে দেখুন মহিলাদের অনুভূতি। যিনি মহিলাদের জন্য এত কাজ করলেন, তাকে কি কথা শুনতে হল। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে, তিনি যে ধরনের মন্তব্য করেছেন তা যথাযথ নয়। ভাল কথা বলার স্বাধীনতা আছে৷ তা বলে কুকথা বলার স্বাধীনতা নেই৷ রোদ্দুর রায় আর কৌস্তভ বাগচীর মন্তব্যের মধ্যে কোনও ফারাক নেই৷ মহিলার বিরুদ্ধে কুকথা বলেছেন, তাই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
রাজ্যের মন্ত্রীর আরও দাবি, 'জিরো কে আমরা হিরো বানানোর চেষ্টা করিনি আমরা। একটু পিছিয়ে যান, জ্যোতি বসু বা বাম নেতাদের সম্পর্কে কথা বললে তাঁর দেহ খালের কাছে পড়ে থাকত। এখানে গণতন্ত্র আছে। তাই আইনে যা বলে, সেটাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই রাজনৈতিক কর্মী যে দল থেকে এসেছেন সেখানেও শীর্ষে মহিলারা আছেন। সোনিয়া গান্ধি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি আছেন। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কি ওই নেতার বক্তব্য সমর্থন করেন? স্মৃতি ইরানি যখন সনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করেছিলেন, তখন প্রতিবাদ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই জামিন পাওয়ার পরে ওনার ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি এআইসিসি-তে সুযোগ পাননি বলে হতাশা ওগড়াবেন, এভাবে সেটা হয় না।'
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।