কলকাতা: রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এখনও এসেছে চলেছে শিশুমৃত্যুর খবর। শিশু চিকিৎসার অন্যতম টার্সিয়ারি কেন্দ্র বি সি রায় শিশু হাসপাতালে রবিবার ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বি সি রায় হাসপাতালে আরও বাড়ানো হল পিকু বেডের সংখ্যা। আরও ৭৫টি পিকু বেড বাড়ানো সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য।
এদিন একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, রাজ্যে একাধিক শিশুর অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে মাথায় রেখে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিকাঠামো আরও উন্নত করার চেষ্টা করা হয়েছে রাজ্যজুড়ে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মোট ২ হাজার ৫০০টি সিক নাটাল কেয়ার ইউনিট (SNCU) বেড, ৬৫৪টি পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (PICU) এবং ১২০ টি নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট (NICU) বেড তৈরি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, বি সি রায় হাসপাতালে বাড়ানো হয়েছে ৭৫টি PICU বেড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত সংখ্যক সিনিয়র চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: দিল্লি যাওয়া আটকাতে মরিয়া অনুব্রত, এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনা
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর মালঞ্চ অঞ্চলের বাসিন্দা মাস ৪-এর এক শিশু পুত্র জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। এরপর গত মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই শিশুকে নিয়ে আসা হয় ফুলবাগানের বি সি রায় হাসপাতালে। নিয়ে আসার পর থেকে চিকিৎসা শুরু হলেও অবশেষে রবিবার ভোর ৪ টে নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর।
পরিবারের দাবি, হাসপাতালের তরফে তাঁদের শিশুর মৃত্যুর কারণ হিসেবে নিউমোনিয়াকেই দায়ী করা হয়েছে। মৃত শিশুর পরিবার জানিয়েছে, গত প্রায় এক মাস আগে এই শিশুর চিকেন পক্স হয়ে ছিল। পক্স থেকে সেরে ওঠার পরে, কিছু দিনের মধ্যেই জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। গত মঙ্গলবার পরিবারের তরফে শিশুটিকে বি সি রায় শিশুটিকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে, মেটিয়াবুরুজের ১ বছর ৭ মাসের এক শিশু কন্যাকে সম্প্রতি ভর্তি করা হয় বি সি রায় শিশু হাসপাতালে। এই শিশুও জ্বর, সর্দি, কাশি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। আট দিন আগে শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের তরফে নিয়ে আসা হয় বি সি রায় হাসপাতালে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মত ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালেই। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। রবিবার ভোর ছটা নাগাদ মৃত্যু হয় মেটিয়াবুরুজের এই একরত্তির।
রাজ্য সরকার এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে শিশু মৃত্যু ঠেকাত একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও, শিশু মৃত্যু আটকানো সম্ভব পর হয়নি। আর এই নিয়েই যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে রাজ্যবাসী থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যাবে কে! দিনভর পুলিশ-ইডি টানাপড়েন, সোমবার আদালতে ফয়সলা
মেডিক্যাল কলেজ: ১৬আর জি কর: ২৫বিসি রায় হাসপাতাল: ৩৬পিয়ারলেস হাসপাতাল: ২পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো হাসপাতাল: ১চিত্তরঞ্জন শিশু সদন: ১ ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ: ৫ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ: ১বাঁকুড়া জেলা হাসপাতাল: ২ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল: ২
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৯১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে কিছু সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়েছে অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে, আর কিছু শিশুর মৃত্যু হয়েছে ARI তে (একিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন )৷ দেগঙ্গার বাসিন্দা আড়াই বছরের এক শিশু সকাল ১০:৩০ টা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে এলেও PICU ফাঁকা পাওয়া যায়নি প্রথমে। আজ ভোররাতে PICU তে স্থানান্তর করা হলেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। বসিরহাটের বাসিন্দা রায়ান ইসলামেরও মৃত্যু হয়েছে বিসি রায় হাসপাতালে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Adenovirus