ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: সুকান্ত মজুমদারের সংখ্যালঘু প্রেম! ‘‘আমরা মনে করি মুসলিম প্রতিষ্ঠান তার মাথায় একজন সংখ্যালঘু সমাজের প্রতিনিধি থাকাই কাম্য। ঠিক যেমন তারকেশ্বরের মাথায় ফিরহাদ হাকিম থাকার পক্ষে যেমন আমরা নই। তেমনি ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পরিষদের মাথায় হিন্দু নয়, সংখ্যালঘু প্রতিনিধি থাকার পক্ষেই আমরা।’’ বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্য শুনে অনেকেই বলছেন, ‘ভোট বড় বালাই'। ‘‘বিজেপি সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়। সংখ্যালঘুদের কাছে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে ভুল বার্তা দিচ্ছে...।’’ বারবারই এই দাবি করেন সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির অন্যান্য নেতারা। পদ্ম শিবিরের কথায়, ‘‘সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘুদের মধ্যে একটা বিভাজনের রেখা তৃণমূল কংগ্রেসই তৈরি করেছে। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করে না। তবে এটা ঠিক যে আমরা সংখ্যালঘু মানুষদের কাছে বারবারই বলছি, তৃণমূল জমানায় যত রাজনৈতিক খুন হয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশ সংখ্যালঘু। যত গ্রাম অশান্ত হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। পরিযায়ী শ্রমিকরা অধিকাংশ সংখ্যালঘু। তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তৃণমূল করেনি। তাদের আবেগের সঙ্গে শুধু প্রতারণা করেছে তৃণমূল। তৃণমূল ধর্মীয় ভাবাবেককে কাজে লাগিয়েই ক্ষমতায় থাকতে চায়। বিভাজনের রাজনীতিই তৃণমূলের একমাত্র এজেন্ডা।’’
সংখ্যালঘুদের মন পেতে নানান কৌশল অবলম্বন করছে বঙ্গ বিজেপি। আর এবার ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের বদলে তপন দাশগুপ্তকে করা নিয়েও সংখ্যালঘুদের হয়ে জোর সওয়াল করলেন বঙ্গ পদ্ম শিবিরের সেনাপতি সুকান্ত মজুমদারের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের কথায়, ‘‘শুধুমাত্র হিন্দুত্ব ইস্যুকে হাতিয়ার করে এ রাজ্যে যে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া মুশকিল তা দেরিতে হলেও আজ বুঝেছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কারণেই সংখ্যালঘু তথা মুসলিম সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি নানাভাবে বার্তা দিচ্ছে যে, ‘সংখ্যালঘুদের শত্রু নয় তারা, বন্ধু হিসেবেই তারা তাদের পাশে আছে'। তবে এই পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আদৌ সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে পারে কিনা পদ্ম ফুল শিবির তার উত্তর দেবে সময়ই।
আরও পড়ুন- ফিরহাদ হাকিমকে সরিয়ে ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদল নিয়ে জোর চর্চা
বলা বাহুল্য, প্রথম যখন এই উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি হয়, তখন ফিরহাদ হাকিম ছিলেন চেয়ারম্যান। এই উন্নয়ন পর্ষদ রাজ্যের নগরায়ণ দফতরের অধীনে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে পুরনো কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। অস্থায়ীভাবে ফুরফুরা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন হুগলির জেলাশাসক। আগে ফুরফুরার সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমন্বয় রাখতেন মুকুল রায়। মুকুল রায় শিবির বদলানোর সঙ্গে সঙ্গেই ফুরফুরার পীরজাদাদের সমীকরণেও বদল এসেছে। আব্বাস সিদ্দিকি রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছেন, আইএসএফ বলে রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছে, নওশাদ সিদ্দিকির বিধায়ক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতার হওয়া আর তাঁকে ঘিরে রাজনৈতিক আবর্ত যেভাবে রচিত হয়েছে তা নিয়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ফুরফুরা শরিফের মাথায় কেন কোনও হিন্দু প্রতিনিধি? তা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলে আসরে নামল বঙ্গ বিজেপি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal BJP, Furfura Sharif, Sukanta Majumdar