কলকাতা: গ্রামীণ রাস্তার দ্রুত হাল ফেরাতে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রাজ্য নিজের বাজেট থেকে ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের নামে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও বহু জায়গায় নাকি শুরুই হয়নি কাজ। গত ২৮ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয়ভাবে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন সিঙ্গুর থেকে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বরাদ্দ করা নিয়ে কেন্দ্রর বিরুদ্ধে ঝাঁঝ বাড়ছে। সেখানে রাজ্য নিজের প্রকল্পরে কাজই সময়মতো কারতে না পাড়ায় ক্ষুব্ধ নবান্ন। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের কাছে এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ কেরছেন।
শুধু রাস্তাশ্রী নয়, সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও কাজ শুরু করেনি বহু জেলা। আইআইডিএফ-এর টাকা খরচ নিয়েও একই রকম গড়িমসি দেখা গিয়েছে জেলাগুলিতে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে থাকায় রাজ্যের রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে মনে করা হয়েছিল। এই প্রকল্পকে ঘিরে শিলান্যাস ও স্থানীয়ভাবে প্রচারের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তারপরও কাজে গড়িমসি কেন হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহার ৮ ব্যাঙ্ক অ্যাঙ্কাউন্ট ফ্রিজ করল সিবিআই
আগামী ২৬ এপ্রিল নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের চালু প্রকল্পগুলির সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে। বৈঠকে এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কী প্রশ্ন তোলেন, তা নিয়ে শঙ্কিত প্রশাসনিক কর্তারা। দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমানের রাস্তাশ্রী প্রকল্পে একাধিক রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরুই করা যায়নি।
জানা গিয়েছে, বহু ক্ষেত্রে ,টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নির্বাচনে টেকনিক্যাল কাগজ পরীক্ষার কাজ শেষ হলেও খরচের দরপত্র খোলা নিয়ে গড়িমসি হচ্ছে। যার ফলে ঠিকাদার নির্বাচন করা যাচ্ছে না। প্রতিটি জেলাতেই গড়ে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ রাস্তার এভাবেই আটাক পড়ে রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ২৯ হাজার ৪৭৫ টি গ্রামকে ঘিরে ৮ হাজার ৭৬৭ টি রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে নির্মাণ ও সংস্কারে।
এরমধ্যে, ৭ হাজার ২১৯ টি রাস্তা নতুন করে নির্মাণ হবে। বাকি রাস্তা মেরামতি করা হবে। এই দুই ভাবে ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করার কথা। জেলাগুলির রিপোর্ট বলছে, প্রায় তিন হাজার রাস্তা নির্মাণ শেষের পথে। নবান্ন এইরাস্তাগুলি পরিদর্শন করে নির্মাণের গুণগত মান পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এই রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে করার পরমার্শ দিয়েছেন জেলাশাসকদের। জেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের দায়িত্ব ম্যাকিনটস বার্ন ও এগ্রিকালচারাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কর্পোরেশন লিমিটেডকে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকদের বলা হয়েছে, সরকারি এজেন্সি হলেও এই দুই সংস্থার কাজে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। কার্যক্ষেত্রে সরকারি টেকনিক্যাল কর্মীদের নিযুক্ত করতে হবে গোটা বিষয়গুলি দেখভাল করার জন্য।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Nabanna