কলকাতা: নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি পিছোল ৷ আগামী বৃহস্পতিবার হবে নন্দীগ্রাম মামলার পরবর্তী শুনানি ৷ নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় আদালতে মামলাকারীর হাজিরা বাধ্যতামূলক ৷ হাজির না হলে আদালতে যথাযথ কারণ দেখাতে হয় ৷ নন্দীগ্রাম মামলায় মামলাকারী এদিন হাজির ছিলেন না ৷ এ কারণে মামলাকারীকে সময় দিল হাইকোর্ট ৷ আগামী ২৪ জুন হাইকোর্টে নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি হবে ৷ আজ, শুক্রবার বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে ওই শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
একুশের নন্দীগ্রাম। ভোটে গরম। ভোটের পরেও সরগরম। নন্দীগ্রামের জল এবার কলকাতা হাইকোর্টে। সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করেছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী ৷ ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮০, ৮০এ, ৮১, ১০০ এবং ১২৩ ধারায় মামলা করা হয়েছে ৷ আদালতের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ঘুষ দিয়েছেন। প্রভাব খাটিয়েছেন। জনগণের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সাহায্য নিয়েছেন এবং বুথ দখল করেছেন।
রিটার্নিং অফিসারের ভূমিকা নিয়েও মামলায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ২ মে গণনার সময় একাধিক গরমিল ও কারচুপি হয়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের সহকর্মীরা পুনর্গণনার দাবি জানান। কিন্তু, কোনও কারণ ছাড়াই সেই আর্জি খারিজ করে দেন রিটার্নিং অফিসার। ২১ সি ফর্মে সই করে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করে দেন। এছাড়াও আবেদনপত্রে অভিযোগ, কত ভোট মিলেছে এবং গণনা সংক্রান্ত যে ১৭ সি ফর্ম তাতেও বিস্তর কারচুপি ও গরমিল হয়েছে। সংবিধান এবং আইন সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করে ভোট হয়েছে নন্দীগ্রামে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১০০ ধারা অনুযায়ী, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোটকে বাতিল ঘোষণা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
ভোটের ফল নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৪৫ দিনের মধ্যে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করতে হয় ৷ রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশ হয় ২ মে ৷ সেই মতো ৪৫ দিনের মধ্যেই হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করা হয়েছে ৷
গণনার দিনও নন্দীগ্রামে টানটান উত্তেজনা। রীতিমতো সাপ লুডো খেলা হয়। কখনও এগিয়ে যান মমতা। কখনও শুভেন্দু। শেষমেশ শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তৃণমূল পুনর্গণনার দাবি তুললেও রিটার্নিং অফিসার তাতে রাজি হননি। ৩ মে এ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, একজনের এসএমএস পেয়েছি, সেখানে লেখা পুনর্গণনার নির্দেশ দিলে লাইফ থ্রেট থাকত। দেখুন আপনারা সবাই। কে এসএমএস করেছে বলব না।
এ ছাড়াও, একের পর এক অভিযোগে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, নন্দীগ্রামে কী রকম ভোটগ্রহণ হচ্ছে দেখেছে সবাই। ফলের দিন ৪০ মিনিট লোডশেডিং করে রেখেছিল, সার্ভার ডাউন করে রেখেছিল, ইভিএম পাল্টে দিয়েছে, সবজায়গায় এক ফল, আর নন্দীগ্রামে আলাদা ফল কী করে। দে ক্যাননট স্টপ মি...। ওই ইভিএম যেন আলাদা করে রাখা হয়, বিকৃত না করা হয়, ইভিএমের ফরেনসিক টেস্ট হোক। দুই পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষ ছিলেন না। হোয়াট ইজ দিস... !
ফল ঘোষণার পরের দিনই আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী। সেই মতোই হাইকোর্টে মামলা। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী সূত্রে দাবি এ বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না ৷ ইলেকশন পিটিশন সংক্রান্ত নথি তাঁদের দেওয়া হয়নি ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।