#কলকাতা: মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত অবধি বন্ধ থাকল শিয়ালদহ-বজবজ শাখার লোকাল ট্রেন চলাচল। যার জেরে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হল যাত্রীদের। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কেন লাইন থেকে মালগাড়ি সরানো গেল না। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেল অন্য ঘটনা। যার জেরে ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইল পূর্ব রেল৷
ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, আকড়া স্টেশনের কাছে রেলের কর্মীদের যথাযথ ভাবে নজরে আসায় বড়সড় দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। বিপত্তির সূত্রপাত মঙ্গলবার, বিকেল প্রায় ৪টে নাগাদ। কয়লাবোঝাই মালগাড়ি যাচ্ছিল শিয়ালদহ-বজবজ শাখার আকড়া স্টেশনের উপর দিয়ে। রেল সূত্রে খবর, আসানসোল থেকে সিইএসসি-র জন্য কয়লা আসছিল কলকাতায়। গাড়িটি ওভারলোডেড ছিল। আকড়া স্টেশন দিয়ে যাওয়ার সময় সিগন্যাল না পেয়ে থমকে দাঁড়ায় মালগাড়িটি। পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেটি ওভারলোডেড।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে ১২টি বগিতে কয়লা ওভার হাইট হয়ে গেছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালগাড়িটি আসানসোল থেকে দূর্গাপুরে আসে। ইসিএলের শেডে কয়লা লোডিং করে৷ তারপর দূর্গাপুর থেকে ডানকুনি হয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের শিয়ালদহ সাউথ সেকশনে প্রবেশ করে। আকড়া থেকে নুঙ্গির দিকে ট্রেন যাচ্ছিল। সেই সময়ে ট্রেন সিগন্যাল না পেয়ে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায় বাটা সেতুর কাছে৷ মালগাড়ির অবস্থা দেখে নজরে আসে রেলের কর্মীদের৷ ডেকে পাঠানো হয় কমারশিয়াল বিভাগের আধিকারিকদের। আসেন ইঞ্জিনিয়াররা।
তারা দেখেন কয়লা পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে আছে৷ যেখানে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। তার খুব কাছেই রয়েছে বাটা ব্রিজ। যে সেতুর ওপরে থাকা ওভারহেড তার বা OHE অনেক নীচুতে। মালগাড়ি অতিরিক্ত কয়লা নিয়ে সেখান দিয়ে গেলেই বিদ্যুৎ বাহী তার ও কয়লার সংঘর্ষ ঘটত। তার ফলে বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটত। তাই পাওয়ার অফ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়৷ ডেকে পাঠানো হয় ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের। তারা কয়লা নামাতে থাকেন। যদিও সেই অতিরিক্ত কয়লা স্থানীয়রা অনেকেই নিয়ে চলে যান।
আরও পড়ুন: গোয়ায় মমতার সভায় বড় চমক, ভূমিপুত্র-ফুটবলারের যোগদানে নতুন 'খেলা' শুরু!
গোটা ঘটনার জন্যে লোকাল ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। শিয়ালদহ থেকে বজবজ পর্যন্ত কোনও ট্রেনই চলছিল না। মাঝেরহাট পর্যন্ত ট্রেন চলছিল এবং সেই স্টেশন থেকেই শিয়ালদহে ফিরছিল ট্রেন। অফিস শেষের ব্যস্ত সময়ে এভাবে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বড়সড় সমস্যার মুখে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় এমনিতেই ট্রেনের সংখ্যা কম। প্রায় ১ ঘণ্টা পরপর এই শাখায় ট্রেন পাওয়া যায়। তাই যাত্রীদের চাপ বেশিই থাকে। মঙ্গলবার সন্ধেবেলার ব্যস্ত সময়ে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা ধরে বজবজ পর্যন্ত ট্রেন না চলায় প্রবল সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বাড়ি ফেরার বিকল্প পথ খুঁজতে সড়কপথের উপর চাপ বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন: CBI-এর হাতে গ্রেফতার প্রাক্তন, বর্ধমানের পুর প্রশাসক পদে বড় চমক তৃণমূলের!
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আকড়া স্টেশনে গাড়িটি দাঁড়িয়ে পড়ায় সেখান থেকে কয়লা খানিকটা কমিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারপর রাত আটটার কিছু পরে মালগাড়িটি ফের চালু হয়। লোকাল ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়। কয়লা যাচ্ছিল বজবজে সিইএসসি'র ইউনিটে। ইতিমধ্যেই ইসিএলের জবাবদিহি চেয়েছে রেল। একই সাথে দূর্গাপুরে থাকা রেলের কমারশিয়াল বিভাগের কর্মীদের জবাব চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Budge Budge, Local Train