আবীর ঘোষাল, কলকাতা: শহরের বায়ু দূষণ আটকাতে নজরে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি। শহরের ফুসফুস ক্রমাগত রোগের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবেশবিদদের ৷ বারবার তারা দূষণ নিয়ে সতর্ক করছেন কলকাতাকে (Kolkata Air Pollution)। বিশেষ করে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির জলাশয় বা এলাকা দখল করে যেভাবে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে বা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন পরিবেশবিদরা ৷
এই পূর্ব কলকাতা জলাভূমি প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘‘বাম আমলের জবরদখল সর্বনাশ করেছে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির। পরিবেশ ধ্বংস করে জবরদখল সেই সময় হয়েছে। এর ফলে কলকাতার যে স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক বিকাশের ব্যবস্থা ছিল তার বিপর্যয় ঘটেছে। আমরা ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করেছি। এখনও অনেকে চেষ্টা করছেন সতর্ক থাকতে হবে মানুষের কাছে আহ্বান জলাভূমি রক্ষা করতে।"
শহরের ফুসফুস। পূর্ব কলকাতার জলাভূমি। এই জলাভূমির বিভিন্ন এলাকায় জবরদখলের ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। সেই জবরদখল রোখার জন্য কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। সূত্রের খবর, চিঠিতে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই জলাভূমিকে কীভাবে বাণিজ্যিক উপায়ে ব্যবহার করা যায়, সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই জায়গায় জঙ্গল তৈরি করা যেতে পারে। মত্স্যচাষের সম্ভাবনাও রয়েছে। হাউসবোটের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “পরিবেশ মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। শহরের পিছন দিকে যে ওয়েট ল্যান্ড রয়েছে, সেখানে সাজেশন দিয়েছি সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য। জমি পড়ে থাকলে কিন্তু জবরদখল হবে। আমার নজরে পড়েছে সেটা আমি মুখ্য সচিবের নজরে এনে ভাঙাভাঙি করিয়েছি। কিন্তু সব করা যাবে না। তাই একটা কম্প্রিহেনশিপ প্ল্যান দরকার।’’
আরও পড়ুন- 'E' দিয়ে নাম যেমন বিরল, মানুষগুলোও কি তেমনই? জ্যোতিষ কী বলছে আপনাদের নিয়ে?
কিন্তু পরিবেশবিদদের বক্তব্য, জলাভূমিকে রক্ষা করতে আগে জবরদখল সরাতে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। সেইসঙ্গে জলাভূমিকে আন্তর্জাতিক কনভেনশন মেনে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। পরিবেশবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ জানিয়েছেন, “পূর্ব কলকাতার জলাভূমি রামসার কনভেনশন-এর আওতায় পড়ে। যে প্রস্তাবই দেওয়া হোক, তা রামসার কনভেনশন অনুযায়ী হতে হবে। রামসার সাইট থেকে আর্থিক লাভ পাওয়ার বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পাবে না। ২০০০ সাল থেকে কয়েক হাজার এফআইআর হয়েছে, কিন্তু তারপরও কিছু হচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা। অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’’
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগেই পূর্ব কলকাতা জলাভূমির ১০ একর জায়গা বেআইনি জবরদখলের হাত থেকে রক্ষা করেছে ইস্ট কলকাতা ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ। কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরতলা ভেড়ির একাংশ ভরাট করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তা বন্ধ হয়েছে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।