#কলকাতা: সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরে লোকসভা বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। গত নির্বাচনগুলিতে ভালো ফল করতে পারেনি দল৷ তাই ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াতে মহিলা ভোটের দিকে চোখ রয়েছে আলিমুদ্দিনের। তাই আগামিদিনে নেতৃত্বে মহিলাদের আরও বেশি করে তুলে আনতে চায় দল। সিপিএমের মহিলা সংগঠন সারা ভারত মহিলা সমিতির কাছেও সেই বার্তা ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় ভূমিকা নিতে পারেন মহিলারা। সে কথা মাথায় রেখেই এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএমের মহিলা সংগঠন। পঞ্চায়েতে চুরি-দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে যে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়েছে বামেরা, তাতে শরিক হওয়ার পাশাপাশিই গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি সাংগঠনিক ভাবে নিজেদের সক্রিয়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে। রাজ্যে পঞ্চায়েতের অর্ধেক আসনই মহিলাদের জন্য বরাদ্দ থাকে। স্বভাবতই পঞ্চায়েত স্তরে নির্ণায়ক ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ থাকে মহিলাদের। কিন্তু হামেশাই দেখা গিয়েছে, 'উপযুক্ত' মহিলা মুখ খুঁজে না পেয়ে এলাকার নেতাদের পরিবারের মহিলা সদস্যদের ওই ধরনের আসনে প্রার্থী করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজারহাটের হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ, জরিমানা স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের
মহিলা আসন কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক লড়াই যাতে আরও তীব্র করা যায়, সেই বিষয়টি এ বার উঠে আসতে চলেছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্মেলনে। তৃণমূল স্তরে মহিলাদের রাজনৈতিক ভাবে আরও সচেতন করা এবং ‘সক্রিয়’ মহিলা কর্মীদেরই প্রার্থী করার চর্চা চলছে সংগঠনের অন্দরে। হুগলি জেলার চন্দননগরে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ২৯তম রাজ্য সম্মেলন। চন্দননগরের রবীন্দ্র ভবনে রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মহিলা সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মারিয়ম ধওয়েলের। সম্মেলন চলবে আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: গুড়প্রিয়দের জন্য মন খারাপের খবর, গাছে অমিল খেজুরের রস
তার পরে আগামী ৬ থেকে ৯ জানুয়ারি কেরলে হবে সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্মেলন। ‘সবার কাছে যাও, পরিধি বাড়াও’ এই আহ্বানকে এ বার সামনে রাখা হচ্ছে রাজ্য সম্মেলনে। পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং মাইক্রোফিন্যান্সের মতো বিষয়ে প্রস্তাব এনে আলোচনা হবে। গত ১৫,১৬ ই নভেম্বর ও ২৬, ২৭ নভেম্বর প্রচার দিবস পালন করার দিন নির্দিষ্ট হয়েছিল, এই দিনগুলোতে সারা রাজ্য জুড়ে প্রচার করা হয়েছে, সারা হুগলি জেলাজুড়ে সেমিনার, ছবি আঁকা, প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে অসংখ্য মহিলা অংশ গ্রহণ করেছেন। ৬ মাস ধরে রাজ্যজুড়ে প্রাথমিক কমিটিগুলির সম্মেলন এবং ক্রমান্বয়ে আঞ্চলিক সম্মেলন ও জেলা সম্মেলন হয়েছে।
"দেশ জুড়ে বিজেপি যেভাবে মানুষের জীবন জীবিকার উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে জাত-পাতের বিভাজন এনে মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি করছে, তার বিরুদ্ধে সম্মেলনে আলোচনা করব আমরা। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও মহিলারা অপুষ্টিতে ভুগছে, নারীর কোনও নিরাপত্তা নেই। আমাদের রাজ্যেও নারীরা ধর্ষিতা হচ্ছে, আর অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ধর্ষিতাদের জন্য। ধর্ষনে আজকে রাজ্য দ্বিতীয়। দুর্নীতিতে লাগামছাড়া। নতুন কোনও চাকরি নেই। বেআইনিভাবে চাকরি যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের চাকরির গ্যারান্টি রক্ষা করার জন্য মন্ত্রিসভা থেকে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বামফ্রন্ট শাসনে জনগনের পঞ্চায়েত আজ লুঠের পঞ্চায়েতে পরিণত হয়েছে। 'গ্রাম জাগাও চোর তাড়াও বাংলা বাঁচাও' এই স্লোগান নিয়ে মহিলারা একত্রিত হয়ে লুঠের পঞ্চায়েত থেকে মানুষের পঞ্চায়েতে পরিণত করার শপথ নিয়ে প্রতিরোধ গড়বে। তাই বৃহত্তর অংশের মহিলাদের সমবেত করেই তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলনের শপথ আমরা এই সম্মেলন থেকে নিতে চাই।" জানিয়েছেন সংগঠনের নেত্রী অঞ্জু কর ও কনীনিকা ঘোষ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।