#কলকাতা: ৬ ডিসেম্বর সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস পালন করে বামেরা। সেই উপলক্ষে বেশ কিছু কর্মসূচিও করা হয় প্রতি বছর। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত মঙ্গলবার পার্কসার্কাস থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত একটি মিছিলের আয়োজন করা হয় কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে। মিছিলে অংশ গ্রহণ করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কল্লোল মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের কলকাতা জেলা সম্পাদক প্রবীর দেব, আরএসপির রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
পরে রাজাবাজারে জনসভায় বক্তব্য পেশ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেখানে তিনি জানান, "আমাদের মতো দেশ অনেক ধর্ম, আলাদা আলাদা পোশাক, বিভিন্নরকম খাদ্যাভ্যাস। বলা হয় বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান। এই বৈচিত্র্যই আমাদের সৌন্দর্য। এই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। আমাদের ঐক্য ভাঙতে চাওয়া হয়। ভাষার নামে, ধর্মের নামে। স্বাধীনতার আগেও তাই ছিলো। এখনও সেই চেষ্টা চলছে। বামেরা প্রথম থেকেই এ কথা বলে আসছে।"
আরও পড়ুন: 'টাকা আদায় করতেই গভীর রাতে এই ঘটনা', রাশিদের পাশে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু
এর আগে ১ থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক অভিনব কর্মসূচি করা হয় সিপিএম-এর কলকাতা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে। কলকাতার ২৫টি জায়গায় গবেষক, শিক্ষক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে 'সঠিক ইতিহাস' জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। এই বিষয়ে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, "দেশের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চাইছে আরএসএস। সেই জায়গায় নিজেদের মন গড়া কথা ইতিহাসের পাতায় জায়গা করতে চাইছে। আমরা বলেছি কিছুতেই সেই কাজ হতে দেওয়া যাবে না। ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধংস করার মতো নক্কারজনক কাজ হয়েছিল। এই কথা ইতিহাসে কালো দিন হয়ে থাকবে। আর এই রকম ইতিহাসের কথা মানুষের কাছে তুলে ধরতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্য জুড়ে হবে।" যদিও সিপিএমের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি ও তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে শান্তনু সেন বলেন, "যারা ইতিহাস হয়ে গেছে তারা ইতিহাসের কথা শোনাবে! রাজনৈতিক ভাবে আর ঘুরে দাঁরাতে পারবে না।" বিজেপির তরফে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, "বামেরা নিজেরাই ইতিহাস হয়ে গেছেন।"
আরও পড়ুন: আবাস যোজনায় সার্ভে না করেই তালিকা প্রকাশ, আশাকর্মীদের সঙ্গে কী হল জানেন! তুমুল উত্তেজনা
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ এর পিছনে আরেকটা দিক দেখতে পাচ্ছেন। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে লাগাতার আন্দোলন জারি রেখেছে সিপিএম। এর ফলে একমুখী আন্দোলনের বার্তাই যাচ্ছে মানুষের কাছে। বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপির বিরোধিতা তুলনায় কম পড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন আঞ্চলিক স্তরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিজেপির সাথে জোট করার কথা উঠছে। রাজ্যের শাসক দল সিপিএমের সঙ্গে বিজেপিকে একই বন্ধনীতে রেখে 'রাম-বামের' তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসছে। যেটাতে সরাসরি সংখ্যালঘু ভোটে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেটার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তাই গেরুয়া ছোঁয়াচ এড়াতে খানিকটা ভিন্ন কৌশল নিতে হয়েছে সিপিএমকে।
৬ ডিসেম্বর সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস পালন করে সিপিএম। এর জন্য কিছুদিন আগে থেকে প্রচার কর্মসূচি করা হয়। তারই সঙ্গে পরেশ রাওয়াল ইস্যুতেও কড়া মনোভাব নিয়ে কর্মসূচি করা হয়েছে। তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের উত্তাপ বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Kolkata News, Md Salim, West Bengal news