হাওড়া: তালপাতার সেপাই একসময় বাচ্চাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেলনা ছিল। চড়কের বা রথের মেলা মানেই অবধারিতভাবে সেই সময় তালপাতা দিয়ে তৈরি তরোয়াল হাতে সেপাইয়ের পসরা সাজিয়ে বসতেন বিক্রেতারা। পাতলা সরু কাঠের দণ্ড বা কাঠির উপর দাঁড়িয়ে থাকত গোটা তালপাতার সেপাই। গোটা বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চকর ছিল শিশুদের কাছে। হাতের আঙুল বা দুই হাতের তালুর মাঝে কাঠি রেখে ঘোরালেই হাসিতে ভরে যেত বাচ্চাদের মুখ। কিন্তু সেই দিন গিয়েছে। আজকের শিশুরা আর জানে না কাকে বলে তালপাতার সেপাই।
আরও পড়ুন: বিকল্প চাষে আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন পুরুলিয়ার সঞ্জয় কুইরি
কাঠি ঘোরাতে থাকলে সেপাইয়ের চার হাত-পা আকর্ষণীয় ভঙ্গিমায় নড়ে উঠত। কিন্তু স্মার্টফোনে থাকা চমকদার সব গেমে বুঁদ শিশুমনে তালপাতার সেপাই ঘিরে আবেগ আর কই। এই তালপাতার সেপাই হতোও নানান ধরনের। তরোয়াল হাতে থাকতো কেউ, আবার কারোর মাথায় টেরি বাগানো চুল। কেউ কেউ মাথায় রঙিন টুপি পরে থাকতো। এগুলো শুধু শিশুদের খেলনা ছিল না, তা ছিল দক্ষ শিল্পীদের নিপুন শিল্পকর্মের প্রকাশ। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে শিল্পী অনুযায়ী নানান চরিত্রের পুরুষ ও মহিলা তালপাতার সেপাই তৈরি হতো।
দীর্ঘ সময় ধরে এই তালপাতার সেপাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এখন আর তার দেখাই পাওয়া যায় না। চাহিদার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার এই নিজস্ব শিল্পকর্ম। ফলে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছেন বুধেনচন্দ্র রায়ের মতো শিল্পীরা। তাঁদের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বুধেনবাবু বলেন, এক সময় রথ, চড়কের মেলার পাশাপাশি রামরাজাতলা মেলাতেও খুব জনপ্রিয় ছিল এই তালপাতার সেপাই। কিন্তু এখন আর প্রায় কেউ কেনে না। ফলে তাঁদের আয় একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এখন সংসার চালানোই কঠিন হয়ে উঠেছে বলে জানালেন এই শিল্পী।
রাকেশ মাইতি
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Howrah news