Howrah News || Jamaishashthi: তালপাতার গায়ে অপূর্ব নকশা, এবার জামাইষষ্ঠীতে কতটা কদর পুরনো হাতপাখার?
- Published by:Ankita Tripathi
- hyperlocal
- Reported by:RAKESH MAITY
Last Updated:
কয়েক বছর আগে পর্যন্ত জামাইষষ্ঠীতে পাখার বাজার ছিল বেশ, এখন সেই বাজার নেই৷
হাওড়া: প্রতি বছর জৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে জামাইষষ্ঠী পালিত হয়। শ্বশুর বাড়িতে এই দিন জামাইয়ের জন্য থাকে এলাহি ব্যবস্থা। সঙ্গে ফল মিষ্টি থেকে শুরু করে নানান সুস্বাদু খাবারের আয়োজন। তীব্র গরমে জামাইকে স্বস্তি হাত পাখার শীতল বাতাসে। তাই শ্বশুর বাড়িতে জামাইয়ের জন্য একখানা হাতপাখা রাখা হতো। অনেক বাড়িতেই সেই পাখা ছিল একেবারে অনন্য সাজে বিভিন্ন নকশায় কারুকার্যময়। বর্তমানে সেই পাখার বাজারে মন্দা, এবার জামাইষষ্ঠীতে পুরনো স্মৃতি নিয়েই দিন কাটাচ্ছে পাখা শিল্পীরা।
গরম পড়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকে দারুন চাপ থাকতো পাখা তৈরীর কাজে। পাইকারি পাখা বিক্রি শুরু হয়ে যেত গরমের এক দের মাস আগে থেকেই। তৈরি পাখা পাইকারি চলে যায়। কলকাতার বড়বাজার উড়িষ্যা মেদিনীপুর এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। তখন আনাচে-কানাচে ছোট বড় অসংখ্য তালগাছ। পাখার পাতা জোগাড় হতো সেই সমস্ত গাছ থেকেই। সে প্রায় ২-৩ দশক আগে।
advertisement
advertisement
স্থানীয় কিছু মানুষ তালপাতা কেটে পাখা কারিগরদের যোগান দিতেন। তার বিনিময়ে খুব সামান্য টাকা নিতেন। বেশ কিছু পাখা প্রস্তুতকারক নিজেরাই মাঠ থেকে তাল পাতা কেটে পাখা তৈরি করতেন খরচ আরও কম হত। তখন পাখা তৈরীর খরচ পড়তো কম। তাই পাখার দামও ছিল কম। দুই তিন দশক আগে ৫ টাকাতেই পাখা কিনেছে মানুষ। কিন্তু সেই পাখা এখন ২৫-৩০ টাকায়। জামাইষষ্ঠীর স্পেশাল পাখা ১০০ টাকা।
advertisement
পাখা শিল্পী বুধেন চন্দ্র রায় জানান, তখন মোড়ের মাথায় কিছু পাখা নিয়ে বসলে নিমিষে বিক্রি হতো। তখন পাখার দামও ছিল কম। হাত পাখার চাহিদার মূল কারন হল। সে সময় অনেক এলাকাতেই ইলেকট্রিক পৌঁছয়নি। গরমে স্বস্তি পেতে মানুষের তখন ভরসা ছিল হাত পাখা। কিন্তু বর্তমানে ইলেকট্রিক যেমন সর্বত্র পৌঁছে গেছে। তেমনি ইলেকট্রিক পরিষেবা ভালো হওয়ায় আরও হাতপাখার প্রয়োজন কম হয়েছে মানুষের। ফলেই পাখার চাহিদা কম।
advertisement
স্থানীয় কাঁচা পাতার যোগান কম এবং পাখার চাহিদা কমে যাওয়ায় এই পেশা থেকে অনেকেই সরে দাঁড়ান কয়েক দশক আগেই।
ছোট পাখা, বড় পাখা, ঝালোট পাখা, নকশা পাক এবং ফোল্ডিং পাখা তৈরি হত একালায়। ২-৩ দশক আগে পর্যন্ত ২০-২৫ জন দক্ষ কারিগর ছিলেন। কিন্ত বর্তমানে ৩-৪ জন এই পেশায় যুক্ত হাওড়া উত্তরমৌড়ী এলাকায়। সারা বছর পুজোর বড় পাখা কম বেশি বিক্রি হয়।
advertisement
গরমের কিছুদিন আগে থেকে ছোট পাখার চাহিদা হয়। আগে যেমন গরমের বাজার ছিল তেমনি জামাইষষ্ঠী এলে বাহারি নকশা করা পাখার চাহিদা হত। সে সময়ে জামাইষষ্ঠীর বেশ কিছুদিন আগে থেকে মানুষ নকশা পাখার অর্ডার দিয়ে যেতেন। সাধারণ ছোট পাখার থেকে নকশা পাকার দামও ছিল অনেকটা বেশি। তাই জামাই ষষ্ঠী উপলক্ষে নকশা পাখার বাজার হতো ভালো। কিন্তু বেশ কয়েক বছর সেভাবে আর চাহিদা নেই পাখার। এবার জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে মাত্র একশ টাকা মূল্যে একটি নকশা পাখা তৈরির বরাত পেয়েছেন বুধেণ বাবু। তিনি জানান, জামাই ষষ্ঠী এলেই পুরনো সেই দিনের কথা মনে পড়ে।
advertisement
পাখা ব্যবসায়ী বাবলু রায় জানান, প্রায় তিন দশক এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এক সময় যেমন গরমে পাখার চাহিদা ছিল প্রচুর। তেমনি জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে নকশা পাখার চাহিদা হত। গরমে ছোট পাখার চাহিদা অল্প রয়েছে। তবে জামাইষষ্ঠীতে নকশা পাখার চাহিদা একেবারেই নেই। এখন শুধু মনে পড়ছে পুরনো দিনের কথা।
রাকেশ মাইতি
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
May 24, 2023 4:30 PM IST