Howrah News: আশৈশব অন্যের পরিবারে আশ্রিত, চায়ের দোকান চালিয়ে ভারোত্তোলক হতে চান অনাথ বাপ্পা

Last Updated:

Howrah Struggle: এ যেন লৌহ মানব, দুঃখ কষ্ট ক্লান্তি সব বেড়াজাল তুচ্ছ করে চোখে রঙিন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা। বাপ্পার কষ্টকর জীবন কাহিনী সিনেমার গল্পকেও হার মানায়

+
বাপ্পার

বাপ্পার অনুশীলন

রাকেশ মাইতি, হাওড়া: মা, বাবা পরিবার হারানোর দুঃখ ভুলে বাপ্পার চোখে রঙিন স্বপ্ন। এ যেন লৌহমানব, দুঃখ কষ্ট ক্লান্তি সব বেড়াজাল তুচ্ছ করে চোখে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা। বাপ্পার কষ্টকর জীবনকাহিনী সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। প্রতিদিন সকালে বিছানা ছেড়ে শুরু হয় হাড়ভাঙা পরিশ্রম, সাতসকালে মানুষের হাতে চায়ের কাপটা তুলে দেওয়া থেকে, কয়লা ভাঙা, উনুনে আঁচ দিয়ে চা তৈরি, তেলে ভাজা বেচাকেনা বা বাসন মাজা-নানা ব্যস্ততার মাঝে ভোর থেকে দুপুর পার করে কোনওরকম খাবার মুখে গুঁজেই বাপ্পা ছোটে প্র্যাকটিসে।
ছোট থেকে কাজের প্রতি ভালোবাসা নিষ্ঠা এবং বিশ্বাস অগাধ থাকলেও মুখ ফুটে কিছু বলার অভ্যাস নেই ছেলেটির। এ কথা জানান তাঁর দাদা বসন্ত দাস। বলেন, " ছোটবেলা থেকে লেখাপড়া করানোর চেষ্টা করেও হার মেনেছি আমরা, তবে খেলাধুলোর প্রতি অগাধ মনোযোগ দেখেছি। তাই একটা সময় থেকে আমরাও লেখাপড়াটা আর বেশি জোর করিনি, ওর খেলাধুলার প্রতি আগ্রহকে সাপোর্ট করে গেছি।"
advertisement
পারিবারিক বন্ধু বসন্তবাবু জানান, " বাপ্পার তখন চার বা পাঁচ বছর বয়স, আজ থেকে প্রায় ২০- ২২ বছর আগেকার কথা, বাপ্পার মা হয়তো বুঝেছিলেন তার দিন ফুরিয়ে আসছে, আমার হাত ধরে বলে গিয়েছিলেন ছেলেটাকে দেখো! জানি না তিনি কী দেখে এতটা বিশ্বাস করেছিলেন।  ভিন রাজ্য থেকে এখানে কাজে এসেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই রেললাইনের ধারে বসতি ছিল তাদের। লাইনের ধারেই দুই সন্তানের জন্ম। বসন্তবাবু জানান, সেই সময় হঠাৎ যে কী হল, বাপ্পা ছাড়া এক এক করে গোটা পরিবারটুকুই শেষ হয়ে গেল। তখন সেভাবে বুঝতে পারিনি বাপ্পার মা তাঁর দুধের শিশুর দায়িত্ব আমার হাতে কী ভরসায় সঁপে দিয়েছিলেন। সেই দায়িত্বটা যে কত বড়, বুঝতে পারিনি, এখন অনুভব করছি। সেই থেকে আমার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হয়েই রয়ে গিয়েছে ছেলেটা সন্তানের মতই। কোনও কিছুতেই বাদ পড়েনি সে, উৎসব অনুষ্ঠান থেকে কাজকর্ম। পরিবারের আর পাঁচটা সদস্যর মতোই থেকে খেয়ে বড় হওয়া।  পাড়া প্রতিবেশী মানুষ যেমন সহানুভূতি ভালোবাসা দিয়ে এগিয়ে এসেছেন আবার কিছু মানুষ বা প্রশাসনের দ্বারাও হেনস্থা হতে হয়েছে আমাদের। কখনও কেউ শিশু শ্রমিক হিসেবে দেখেছে ওকে , তবে তা সাময়িক ছিল। আসলে কখনওই আমরা বাপ্পাকে পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য চোখে দেখিনি। শুরু থেকে যেখানে যাই হোক না কেন লক্ষ্য যে একটাই ছিল, একজন মৃত্যুকালীন মায়ের বিশ্বাস রাখাটাই ছিল কর্তব্য।"
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : ২৫ বছর আগে হারান প্রথম স্বামীকে, একাকিত্ব থেকে মুক্তি দিতে ৫০ বছর বয়সি মায়ের বিয়ে দিলেন মেয়ে
তিনি আরও বলেন, " সে দিক গুরুত্ব রেখেই ছেলেটির প্রতি উৎসাহ দেওয়া। তবে খেলার সরঞ্জামের খরচ অনেকটা বেশি, চেষ্টা করি যতটা দেওয়ার। চেষ্টা করি সব সময় পাশে থাকার, কখনও মুখ ফুটে চাওয়ার অভ্যাস নেই ছেলেটার, ওর তুলনা হয় না, তবে সব সময় পাশে রয়েছি ওর। ছোটবেলা থেকেই পাওয়ার লিফটিং-এ ভীষণ মনোযোগ।"
advertisement
আরও পড়ুন :  শিশুর নতুন জীবন! গিলে নেওয়ার পর জলহস্তীর পেট থেকে কী করে রক্ষা পেল? জানুন
সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে প্রতিদিন সন্ধ্যায়, প্র্যাকটিসে মেলে স্বস্তি, এ কথা জানিয়েছে বাপ্পা। খেলার মাঠে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চোখে রঙিন স্বপ্ন। হার না মানা বাপ্পার স্বপ্নপূরণে সর্বদা পাশে পান পরিবারকে, তাঁরাই তাঁকে উৎসাহ যোগান। দাদার দোকান থেকে যা হয়, সংসার চালিয়ে যত টুকু সম্ভব বাপ্পার পাশে থাকে। তিনিও সহযোগিতা করার চেষ্টা করেন।
advertisement
তবে এই খেলার যা সরঞ্জামের খরচ, তা যোগানো ভার, যা জোটে সেইটুকু দিয়েই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি আশায় রয়েছেন। যদি একটু সহযোগিতা মেলে, হয়তো অসহায় চোখের রঙিন স্বপ্ন দেখার পথ কিছুটা মসৃন হয়। স্থানীয় মানুষজন যারা প্রতিদিন প্রায় বাপ্পার হাতে চা খেয়েই দিনটা শুরু করেন, তাদের মধ্যেই একজন ঝন্টু আদক, তিনি জানান, " বাপ্পার শরীরের ক্লান্তি বলে কোন জিনিস চোখে পড়ে না, কখন দেখছি বাপ্পা চা বিক্রি করছেন আবার হঠাৎ করে প্র্যাকটিসে যাচ্ছেv, আবার সেখান থেকে এসে দোকান সামাল দিচ্ছেন। তার এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাই, আসলে যে দোকানে বাপ্পা থাকেন তাঁদেরও কিছু করার নেই। দোকান চালিয়ে যত টুকু সাহায্য করার, চেষ্টা করেন তাঁরাও, ছেলেটার স্বপ্ন পূরণে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ, সেটা না পেলে হয়তো এমন প্রতিভা হারিয়ে যাবে। তাঁরাও চান  এই লড়াই যাতে অর্থের কাছে হার না মানে।
advertisement
অন্যদিকে বাপ্পার দুই দাদা জয়ন্ত দাস ও বসন্ত দাস জানান, " বাপ্পা আমাদের পরিবারে থেকে বড় হয়ে উঠুক, প্রতিষ্ঠিত হোক, তবে ও নিজের পরিচয় বেড়ে উঠুক।"
view comments
বাংলা খবর/ খবর/হাওড়া/
Howrah News: আশৈশব অন্যের পরিবারে আশ্রিত, চায়ের দোকান চালিয়ে ভারোত্তোলক হতে চান অনাথ বাপ্পা
Next Article
advertisement
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
  • এসএসকেএমে ‘যৌন হেনস্থা’র অভিযোগ নাবালিকাকে

  • ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন শৌচাগারে!

  • অভিযুক্ত গ্রেফতার

VIEW MORE
advertisement
advertisement