Hooghly News: ‘নকল’ আলুতে ছেয়ে যাচ্ছে শহরতলির বাজার ! বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
বাজার ছেয়ে গিয়েছে ‘নকল’ আলুতে। চন্দ্রমুখীর দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে হেমাঙ্গিনী আলু। যা দেখতে চন্দ্রমুখীর মতো হলেও স্বাদে সম্পূর্ণ আলাদা ৷
হুগলি: বাজার ছেয়ে গিয়েছে ‘নকল’ আলুতে ! চন্দ্রমুখীর দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ‘হেমাঙ্গিনী’ বা ‘হেমালিনী’ আলু। যা দেখতে চন্দ্রমুখীর মতো হলেও স্বাদে সম্পূর্ণ আলাদা। তবে পাশাপাশি রাখলে বোঝা মুশকিল কোনটা চন্দ্রমুখী আলু, আর কোনটা হেমাঙ্গিনী আলু। যেখানে বাজারে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। সেখানে হেমাঙ্গিনী আলুর দাম হওয়া উচিত ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হেমাঙ্গিনী আলুকেই চন্দ্রমুখী আলু বলে বাজারে বিক্রি করছেন। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
হুগলির কৃষি সমবায় সমিতির এক সদস্য বলেন, হেমাঙ্গিনী আলু মূলত একটি মিশ্র প্রজাতির আলু। পঞ্জাব ও জলন্ধরের বিভিন্ন অংশে এই আলুর চাষ হয়। ভিন রাজ্য থেকেই এই আলুর বীজ আসে এই রাজ্যে। হুগলিরও বিভিন্ন জায়গায় এই আলুর চাষ করা হয়। এই আলুর চাষে ফলনের পরিমাণ বেশি হয়। বিঘে প্রতি থেকে যেখানে চন্দ্রমুখি আলু বের হয় ৫০ থেকে ৬০ বস্তা সেখানে এই আলুর উৎপাদন হয় প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ বস্তা। এই আলুর উৎপাদনের হার বেশি হলেও বাজারে এই আলুর চাহিদা খুবই কম। প্রথমত এই আলু ভাল করে সেদ্ধ হতে চায় না। দ্বিতীয়ত এই আলুর স্বাদ খুব একটা ভাল নয়।
advertisement
advertisement
এই বিষয়ে হুগলি জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে বাইরে থেকে দেখে হেমাঙ্গিনী আলু এবং চন্দ্রমুখী আলু দুটোর মধ্যে ফারাক করা খুবই মুশকিল। চন্দ্রমুখী আলুর সঙ্গে জ্যোতি আলুর ক্রস ব্রিড করে তৈরি করা হয়েছে হেমাঙ্গিনী আলু। যেহেতু এই আলু হাইব্রিড তাই অল্প সময়ে ও কম খরচে চাষ করা যায়। হুগলি জেলার পুরশুড়া ও তারকেশ্বর অঞ্চলে এই আলুর চাষ হয়। চন্দ্রমুখী আলু যেখানে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে উৎপাদন হতে। এই হাইব্রিড আলু সেখানে দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যেই তৈরি হয়। একটি আলুর সিজনে দু’বার চাষিরা এই আলুর চাষ করতে পারেন। হাইব্রিড হওয়ার জন্য উৎপাদনের হারও বেশি। বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই হেমাঙ্গিনী আলুকেই চন্দ্রমুখী আলু বলে বিক্রি করছে। গ্রামের মানুষজনদেরকে ঠকানো খুব একটা সহজ হয় না, কারণ তারা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত এবং আলু দেখে তারা বুঝতে পারে। তবে শহরাঞ্চল বা মফস্বলের মানুষজনদের খুব সহজেই বোকা বানিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসা রমরমিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে।’’
advertisement
কী ভাবে চেনা যাবে কোনটা চন্দ্রমুখী আর কোনটা হেমাঙ্গিনী আলু ?
কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুটো আলু উপর থেকে চেনা খুব মুশকিল। দুটোরই খোসা পাতলা। তবে দু’ভাবে এই আলু চেনা যায়। প্রথমত, দু-ধরনের আলু খোসা ছাড়ানোর পর ভিতরের রঙের তারতম্য। চন্দ্রমুখী আলুর ভিতরের অংশের রং হালকা বাসন্তী, আর হেমাঙ্গিনী আলুর ভিতরটা সাদা। দ্বিতীয়ত, খেলেই বোঝা যাবে কোনটা কী আলু। হেমাঙ্গিনী মোটেই সুস্বাদু নয়। ভাল সেদ্ধ হয় না। কচকচে থাকে। উল্টোদিকে, চন্দ্রমুখী আলু সিদ্ধ হওয়ার পর হাতে আঠার মতো লেগে থাকে। বাজারে কেনার সময় যদি চন্দ্রমুখি আলুর উপরে কল বা নতুন চারা চোখ দেখতে পাওয়া যায় তাহলে সেখানে আঙুল দিয়ে টিপলেই ছোট্ট ‘ফুট’ করে একটি শব্দ হয়। কিন্তু হেমাঙ্গিনী আলু বা অন্য কোনও আলুর ক্ষেত্রে সেইরকম হয় না।
advertisement
রাহী হালদার
Location :
Hugli,West Bengal
First Published :
February 14, 2023 6:34 PM IST