Explained: Sidhu Moose Wala's Murder : সিধু মুসেওয়ালার হত্যা কি পঞ্জাবি সঙ্গীত শিল্পের চেনা ছবি পরিবর্তন করবে? এবার কি সচেতন হবে ইন্ডাস্ট্রি?

Last Updated:

Sidhu Moose Wala's Murder : 'ওয়ার্নিং শট' (Warning Shot) সহ সিধুর একাধিক গানে অস্ত্রের কথা উঠে এসেছিল। তবে এটা কেউ আশা করেনি যে একটি বন্দুকই সিধুর মৃত্যুর কারণ হবে।

এটা কেউ আশা করেনি যে একটি বন্দুকই সিধুর মৃত্যুর কারণ হবে
এটা কেউ আশা করেনি যে একটি বন্দুকই সিধুর মৃত্যুর কারণ হবে
২৯ মে রবিবার বিকেলে পঞ্জাবি গায়ক শুভদীপ সিধু বা সিধু মুসেওয়ালাকে (Sidhu Moose Wala) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মানসা জেলাতে সিধুর নিজের গ্রামেই এই ঘটনা ঘটেছে। গুলি চালানোর ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ২ জন। তাঁরা সিধুর বন্ধু বলেই জানা গিয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও 'ওয়ার্নিং শট' (Warning Shot) সহ সিধুর একাধিক গানে অস্ত্রের কথা উঠে এসেছিল। তবে এটা কেউ আশা করেনি যে একটি বন্দুকই সিধুর মৃত্যুর কারণ হবে।
কানাডার বাসিন্দা গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার (Goldy Brar) পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার হত্যার দায় স্বীকার করার পরে ৭০০ সদস্যের বিষ্ণোই গ্যাং (Bishnoi Gang) পুলিশের রাডারে এসেছে। বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে বন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই (Lawrence Bishnoi)। ফেসবুকের মাধ্যমে মুসেওয়ালার উপর হামলার দায় স্বীকার করেছে ব্রার এবং সচিন বিষ্ণোই ধত্তারানওয়ালি (Bishnoi Dhattaranwali) এবং লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম উল্লেখ করেছে। ব্রার দাবি করেছে যে ভিকি মিদ্দুখেরার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই সে সিধুকে হত্যা করিয়েছে। গায়কের হত্যার পর পঞ্জাব পুলিশ গ্যাংস্টার নীরজ বাভানিয়া (Neeraj Bavania), তিল্লু তাজপুরিয়া (Tillu Tajpuria) এবং লরেন্স বিষ্ণোই-কালা জাথেদি-গোল্ডি ব্রার গ্যাংদের উপর নজর রাখছে, যারা দিল্লির বিভিন্ন জেলে বন্দী রয়েছে। তিহার জেল সূত্রে খবর, এই খুনের পর তাদের উপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে যাতে দিল্লির জেলে এই গুন্ডাদের মধ্যে মারামারি না হয়।
advertisement
লরেন্স বিষ্ণোই কে?
advertisement
লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলের ৪ নম্বর সেলে বন্দি রয়েছে। দিল্লি, রাজস্থান এবং পঞ্জাবে বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোনও না কোনও মামলায় পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়েই যাচ্ছে। বিষ্ণোই একজন স্নাতক এবং সে পঞ্জাবের ফিরোজপুরের বাসিন্দা। বিষ্ণোইয়ের বাবা ১৯৯২ সালে হরিয়ানা পুলিশে কনস্টেবল হিসাবে যোগদান করেন। পাঁচ বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেন। বিষ্ণোই পঞ্জাব ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি শেষ করে অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। প্রথম দিকে চণ্ডীগড় এবং অন্যান্য রাজ্যে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বিষ্ণোই এবং তার গ্যাং, যার মধ্যে পেশাদার শুটারও রয়েছে, তারা পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি এবং হিমাচলপ্রদেশ থেকে কাজ করে এবং তাদের নেটওয়ার্ক বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। লরেন্সের সহযোগী সন্দীপ ওরফে কালা জাথেদিকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল গ্রেফতার করেছিল। তার মাথায় দাম ৫ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। বর্তমানে সে জেলে বন্দী রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন : চলে গেলেন কে কে, রেখে গেলেন অবিস্মরণীয় গান, তাঁর অন্য়তম সেরা ১০ গানের তালিকা
২০০৯ সালে, কলেজে পড়ার সময় লরেন্স পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনে যোগ দেয় এবং ছাত্র সংসদের সভাপতি গোল্ডির সঙ্গে দেখা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে আসার পরই লরেন্স অপরাধ করতে শুরু করে। তার গ্যাং মদ মাফিয়া, পঞ্জাবি গায়ক এবং অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে শুরু করে।
advertisement
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান (Bhagwant Mann) তরুণ গায়কদের হিংসা এবং মাদক সম্পর্কিত থিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। নির্দেশ না মানলে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির কয়েক সপ্তাহ পরেই সিধুর মৃত্যু হল। তবে মান একা নন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি (Charanjit Singh Channi) এবং ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংও (Amarinder Singh) রাজ্যের সঙ্গীত সংস্কৃতির থিমগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিলেন, যা মাদক এবং গ্যাং হিংসা মামলায় জর্জরিত।
advertisement
আরও পড়ুন : ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে নয়’, কেকে প্রসঙ্গে রূপঙ্করের পাশে দাঁড়ালেন দ্রোণ
ক্যাপ্টেন সিং এই ধরনের ভিডিও এবং অডিওগুলি পরীক্ষা করার জন্য একটি বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। চান্নি এই ধরনের সঙ্গীত এবং চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইনের প্রস্তাব করেছিলেন। অমরিন্দর সিংয়ের শাসনকালেই সিধুর বিরুদ্ধে 'শ্যুটার' (Shooter) ফিল্ম স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে হিংসায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য মামলা করা হয়েছিল, এই সিনেমাটি সম্ভবত বিখ্যাত এক অপরাধীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল এবং সেই কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
advertisement
কিন্তু সিধু একা নন যিনি তাঁর সঙ্গীতে অনুরূপ থিম ব্যবহার করেন। রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সমস্যার মুখে প্রশাসনিক পদক্ষেপ, সংস্কৃতি এবং প্রবণতার মধ্যে নজরদারির বাঁধন কোথাও আলগা হয়ে গিয়েছে। আসল সমস্যাটা একেবারে নিচুস্তরে।
আরও পড়ুন : কেকে পাড়ি দিলেন সুরলোকে, তাঁর ফেসবুকের সদ্য ছবিরা এখন স্মৃতির ঝাঁপি
ভারতীয় চলচ্চিত্রে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের গ্যাংস্টার সংস্কৃতি সর্বদা কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান করে নিয়েছে। বিশেষ করে যখন ভারতীয় চলচ্চিত্রের কথা আসে, এটা দেখা যাবে যে পঞ্জাব ও হরিয়ানায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির উপর খুব বেশি আলোকপাত করা হয়নি। যদিও বেশ কয়েকটি বড় 'এনকাউন্টার'এ-র ঘটনা ঘটেছ এই দুই রাজ্যে।
advertisement
লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং, জগ্গু ভগওয়াপুরিয়া গ্যাং, শেরা খুবান গ্যাং (Jaggu Bhagwapuria Gang) বা সুখা কাহলন গ্যাং (Shera Khuban Gang), রাজ্যপাট পরিবর্তনের পর সরকার সর্বদা জনগণকে এই গ্যাংদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে আদতে কতটা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। পঞ্জাবের রাজনীতির অলিন্দে ঘোরাঘুরি করলেই বোঝা যাবে যে অনেক গ্যাংস্টার বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদদের পৃষ্ঠপোষকতা উপভোগ করে। তাদের ক্রমবর্ধমানভাবে কার্যকলাপে বাধা দেওয়া পুলিশের পক্ষে কঠিন। হত্যা, চোরাচালান, জুলুমবাজি এবং মাদক চোরাচালান রয়েছে গ্যাংস্টারদের নিত্য কাজের তালিকায় রয়েছে। তবুও পুলিশের একার পক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন।
মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান হিংসার থিমগুলির বিরুদ্ধে তার সতর্কতা জারি করার সময় বলেছিলেন যে এগুলির প্রচার রাজ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির দিকে দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মান বলেছিলেন, পঞ্জাবি শিল্পী এবং তাঁদের কাজ রাজ্যের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে ধরে রাখতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করা উচিত। মান আরও বলেছিলেন, "গানের মাধ্যমে হিংসাকে উৎসাহিত না গায়কদের প্রধান কর্তব্য, কারণ এটি প্রায়শই তরুণদের, বিশেষ করে শিশুমনকে বিকৃত করে।"
রাজ্যের যুব সমাজের কাছে সিধু মুসেওয়ালার মতো শিল্পীদের একটা প্রভাব আছে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। মানসায় সিধুর বাড়ির বাইরে সবসময় ভিড় লেগে থাকত। সিধুর সঙ্গে হাত মেলাতে, অটোগ্রাফ নিতে, তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে ভিড় করতেন যুবক-যুবতীরা। কিন্তু একই সময়ে, শিল্প তৈরির ক্ষেত্রে সংস্কৃতির উপস্থাপনা এবং দর্শকের চাহিদার মধ্যে লাইনটি সবসময় ঝাপসা থাকে। সিধুর নিজের সঙ্গীতে অন্যান্য শৈলীর মধ্যে হিপ-হপ থাকে। এই সঙ্গীত শৈলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিকশিত, এটিকে কৃষ্ণাঙ্গ ও শেতাঙ্গদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা হয়।
পাটিয়ালার পঞ্জাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামূলক মাল্টিমিডিয়া রিসার্চ সেন্টারের একজন প্রখ্যাত লেখক-চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পরিচালক দলজিৎ অমি আউটলুককে একটি প্রতিবেদনে বলেছেন, "গত কয়েক বছরে পঞ্জাবি সিনেমা উৎপাদনের গুণমানে এবং বিতরণ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণে অসাধারণ উন্নতি করেছিল। কিন্তু বেশিরভাগ সিনেমা এখনও পুরনো বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত, যা রিগ্রেসিভ ভ্যালু সিস্টেমকে শক্তিশালী করেছে।"
দলজিৎ অমি সামাজিক ইস্যুতে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন যে মূলধারার বিষয়ে বানানো চলচ্চিত্রগুলির সাফল্যকে আগেরগুলির সঙ্গে তুলনা করা যায় নায তবে এইগুলির জন্য ব্যয় করা অর্থ সর্বটা উঠে আসে না। পঞ্জাব সমাজ মাদক, হিংসা, জাতপাত এবং পিতৃতন্ত্রের মতো সমস্যায় আক্রান্ত এবং এই সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অবশ্যই সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ থাকতে হবে।
দলজিৎ বলেন, "সামাজিক কুফলকে সমর্থন না করে শিল্পকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। যদি আপনার সিনেমাগুলি এই সমস্ত বিষয়গুলিকে উদযাপন করে, আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারেন, কিন্তু আপনি একজন শিল্পী হিসাবে ব্যর্থ হবেন। তাই প্রশ্ন থেকেই যায় যে সিনেমা একটি বাণিজ্যিক সত্ত্বা হওয়ায় সমাজকে মানবিক করতে চায় কি না।"
সঙ্গীত সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লেখক ও কবি সুরজিৎ পাতর বলেছেন, "এটি শুধু হিংসাত্মক নয়, সীমিত বিষয়ে শব্দ এবং সঙ্গীতের পুনরাবৃত্তি যা উদ্বেগজনক। পঞ্জাব যে সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে তা থেকে আমাদের গায়করা দূরে সরে যাচ্ছেন। পঞ্জাবি সঙ্গীতের ছন্দ আছে, ভাংড়া এবং ঢোলকে গানের সঙ্গে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে হবে। একটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হল শ্রোতাদের ভাল বিষয়বস্তু দেখিয়ে তাদের রুচি বৃদ্ধি করা উচিত।"
কিন্তু সবাই আশ্বস্ত হয় না। গীতিকার গিল রাউন্টার মতে, "আমরা যা পর্যবেক্ষণ করি শিল্পীরা তা লেখে। একজন শিল্পীর কাজ সমাজের দর্পণ। ভাইলপুনা এবং হাতিয়ার নতুন শব্দ নয়, আমি অস্বীকার করব না যে গানগুলি মানুষের মনে ছাপ ফেলে, তবে সমাজও নির্ধারণ করে। যা লেখা হচ্ছে। হিংস্রতার চেয়ে গানে অশ্লীল শব্দভাণ্ডার একটি বড় বিষয়।"
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained: Sidhu Moose Wala's Murder : সিধু মুসেওয়ালার হত্যা কি পঞ্জাবি সঙ্গীত শিল্পের চেনা ছবি পরিবর্তন করবে? এবার কি সচেতন হবে ইন্ডাস্ট্রি?
Next Article
advertisement
ঘি-কে ইংরেজিতে কী বলা হয় জানেন? চট করে অনেকের মাথাতেই আসবে না...
ঘি-কে ইংরেজিতে কী বলা হয় জানেন? চট করে অনেকের মাথাতেই আসবে না...
  • ঘি-কে ইংরেজিতে কী বলা হয় জানেন?

  • চট করে অনেকের মাথাতেই আসবে না.

  • দেখে নিন সঠিক উত্তরটা

VIEW MORE
advertisement
advertisement