Explained: মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে কোন কোন ক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হবে? জেনে নিন বিশদে!
- Published by:Dolon Chattopadhyay
Last Updated:
অনেকেই মনে করেন, মিউচুয়াল ফান্ড থেকে যে রিটার্ন পাওয়া যায় তার পুরোটাই কর মুক্ত। কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রে ভুল।
#কলকাতা: সঞ্চয়ের জন্য বিভিন্ন জন বিভিন্ন পথ বেছে নেন। কেউ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন প্ল্যানে বিনিয়োগ করেন, কেউ আবার পোস্ট অফিসে। কিন্তু বর্তমানে অনেকে ইক্যুইটিতে (Equity) বিনিয়োগ করেন। ঝুঁকি থাকলেও ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করার পিছনে অনেকগুলি কারণ রয়েছে। ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit) বা রেকারিং ডিপোজিট (Recurring Deposit) করলে সুদের হার খুব একটা বেশি হয় না। কিন্তু ইক্যুইটিতে সুদের হার তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই বেশি।
ইক্যুইটিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রবেশ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সেক্ষেত্রে টাকা লোকসান হতে পারে। অবশ্য বাজার খারাপ থাকলে তবেই সেটা সম্ভব। কিন্তু বাকি ক্ষেত্রে বাজার ভালো থাকলে মোটা টাকা মুনাফা তোলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু যাঁরা এই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত ইচ্ছুক নন তাঁদের ক্ষেত্রে মিউচুয়াল ফান্ডে (Mutual Fund) বিনিয়োগ করা সুবিধা। কারণ তাতে ঝুঁকি নেই বললেই চলে। আর বিনিয়োগের অর্থের উপর রিটার্নও বেশ ভালো পাওয়া যায়। আর ট্যাক্সের ক্ষেত্রেও অনেকটা ছাড় পাওয়া যায়।
advertisement
advertisement
অনেকেই মনে করেন, মিউচুয়াল ফান্ড থেকে যে রিটার্ন পাওয়া যায় তার পুরোটাই কর মুক্ত। কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রে ভুল। সব মিউচুয়াল ফান্ড করমুক্ত নয়। তাই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের আগে তা ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার, কোন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে তা থেকে কর মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ ব্যাঙ্কের বা পোস্ট অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে সেগুলি রিটার্ন পাওয়ার সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কর দিতে হয়। ফলে সুদ হিসেবে পাওয়া টাকার একটি বড় অংশ বাদ চলে যায়। সেখান থেকে বাঁচতেই অনেকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডে কত টাকা পর্যন্ত কর থেকে ছাড় পাওয়া যায়? জেনে নেওয়া যাক…
advertisement
বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার দিকে বেশি জোর দেন। কারণ সেক্ষেত্রে তাঁরা রির্টানের অর্থ অনেক বেশি পান। কিন্তু বিনিয়োগ করার পরের বিষয়গুলির উপর তাঁরা খুব একটা জোর দিতে চান না। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে রিটার্নের উপর ট্যাক্স কাটার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী সেই বিষয়গুলি না জেনে বিনিয়োগ করে থাকেন। যার ফলস্বরূপ সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। ফলে একজন বিনিয়োগকারীর যে পরিমাণ রিটার্ন পাওয়া উচিত, সেই পরিমাণ রিটার্ন পান না তাঁরা। কারণ রিটার্নের উপর ট্যাক্স চেপে যাওয়ার ফলে কিছু পরিমাণ অর্থ বাদ দেওয়া হয়। এই বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা হবে আজকের প্রতিবেদনে।
advertisement
ইক্যুউইটি/ইক্যুইটি ফান্ড (গ্রোথ অপশন)
ধরে নেওয়া যাক কোনও বিনিয়োগকারী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু কোনও প্রয়োজনে ওই বিনিয়োগকারী ব্যক্তি মিউচুয়াল ফান্ডে জমা রাখা তাঁর অর্থ তুলে নিতে চান, তাহলেই কর দিতে হবে। কারণ সেক্ষেত্রে যে সুদ পাওয়া যাবে তা শর্ট টার্ম হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং সেক্ষেত্রে রিটার্নের উপর ১৫ শতাংশ সুদ দিতে হবে। কিন্তু এক বছরের পরে বিনিয়োগের অর্থ ফিরিয়ে নিতে চাইলেও সেক্ষেত্রে ওই বিনিয়োগ লং টার্ম বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হারে রিটার্নের উপর ট্যাক্স দিতে হবে। তবে যাঁদের বিনিয়োগের অর্থ ১ লাখ টাকা বা তার থেকে বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে যদি কোনও বিনিয়োগকারী বছরে ১ লাখ টাকার কম আয় করেন তাহলে তাঁর ক্ষেত্রে কোনও ট্যাক্স দিতে হবে না।
advertisement
ইক্যুইটি শেয়ার বা ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের ডিভিডেন্ড অপশন
ডিভিডেন্ড (Dividend Fund) প্ল্যানের মাধ্যমে যদি কোনও বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ শুরু করেন তাহলে সেই বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত টাকা বছরের মোট আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। এবং সেই টাকার উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ কর যুক্ত হবে। এবং প্রাপ্ত টাকা থেকে ট্যাক্স কেটে নেওয়া হবে। প্রতি অর্থ বছরে ডিভিডেন্ড যদি ৫০০০ টাকা বা তার বেশি হয় তাহলে ১০ শতাংশ TDS কেটে নেওয়া হয়।
advertisement
সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (Systematic Investment Plan) বা SIP
SIP-এর ক্ষেত্রে একটি বিষয় ভিন্ন। SIP-তে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বিনিয়োগ করতে হয়। এক্ষেত্রে হোল্ডিং পিরিয়ড ভিন্ন ভিন্ন হয়। যে দিন যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করা হয় তার পর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত হোল্ডিং পিরিয়ড থাকে। ধরে নেওয়া যাক ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কেউ SIP করেছেন। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসে যে টাকা বিনিয়োগ করেছেন তার হোল্ডিং পিরিয়ড হবে সেই সময় থেকে ৩ বছর। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন সেই অর্থের হোল্ডিং পিরিয়ড ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হবে।
advertisement
ULIP
বিনিয়োগকারীরা ULIP-র মাধ্যমে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে লক ইন পিরিয়ড থাকে ৫ বছর। যার অর্থ, বিনিয়োগ করার ৫ বছর পর বিনিয়োগ করা টাকা তুলে নিতে পারেন কোনও বিনিয়োগকারী। এবং যদি কেউ পর পর পাঁচ বছর ULIP প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন তাহলে তাঁকে রিটার্ন পাওয়ার সময় কোনও ট্যাক্স বা কর দিতে হবে না। কারণ ULIP হল EEE ক্যাটাগরির। যার পুরো কথা Exempt-Exempt-Exempt। অর্থাৎ এই প্রকল্পে বিনিয়োগের সময়ও কোনও কর দিতে হয় না। এবং রিটার্ন পাওয়ার সময়ও কোনও কর দিতে হয় না। এমনকী পুরো টাকা একসঙ্গে উইথড্র করে নিলেও কোনও কর দিতে হয় না বিনিয়োগকারীকে। এছাড়াও ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত 80 C ধারায় কর ছাড় পাওয়া সম্ভব।
ELSS
ELSS ও একটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম। এই স্কিমে প্রায় ৬৫ শতাংশ বিনিয়োগ ইক্যুইটিতে হয়। অন্য মিউচুয়াল ফান্ডের মতো এক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের ২টি অপশন দেওয়া হয়। একটি গ্রোথ ফান্ড এবং একটি ডিভিডেন্ট ফান্ড। গ্রোথ ফান্ডে রিটার্ন প্ল্যান বিনিয়োগের সময় জানানো হয় না। রিটার্ন পাওয়ার পর কত শতাংশ হারে রিটার্ন পাওয়া গেল তা বোঝা সম্ভব।
কিন্তু এক্ষেত্রে লং টার্ম ক্যাপিটল গেইনের উপর ১০ শতাংশ কর দিতে হয়। এবং যদি রিটার্ন ১ লাখ টাকার উপরে হয় তবেই এই ট্যাক্স বা কর প্রযোজ্য। কেউ যদি ডিভিডেন্ট প্ল্যান বেছে নেন সেক্ষেত্রে বিনিয়োগের সময়েই অল্প অল্প করে রিটার্ন পেতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে ওই রিটার্ন বার্ষিক আয় হিসেবে গণ্য হবে। এবং তার উপর কর দিতে হবে।
view commentsLocation :
First Published :
October 12, 2021 11:09 PM IST