EXPLAINED|| কোটি কোটি বিচারাধীন মামলা ঝুলছে দেশে, কীভাবে নিষ্পত্তি? কী বলছেন দেশের প্রধান বিচারপতি?
- Published by:Shubhagata Dey
Last Updated:
মামলাগুলির মধ্যে বেশ কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে। যা যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
#নয়াদিল্লি: “মানুষের যখন খারাপ কিছু হয় তখন বিচারব্যবস্থা তাঁদের পাশে থাকে।” বিচারব্যবস্থা নিয়ে একটি কনফারেন্সে উপস্থিত হয়ে একথা বললেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা (NV Ramana)। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে যে তাঁরা ন্যায় বিচার পাবেন। তবে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় কয়েক কোটি কেস ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এবং সেগুলির মধ্যে বেশ কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে। যা যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
কতগুলি মামলা ঝুলে রয়েছে?
ওই কনফারেন্সে উপস্থিত হয়ে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা জানিয়েছেন, সারা দেশে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৪ কোটি মামলা ঝুলে রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, সারা দেশে লকডাউনের কারণে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা সাড়ে ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। যা গত বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি।
advertisement
ন্যাশনাল জুডিসিয়াল ডেটা গ্রিড (National Judicial Data Grid) যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে জানা গিয়েছে প্রায় ৩.৯ কোটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে জেলা আদালতগুলিতে, ৫৮.৫ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে বিভিন্ন হাই কোর্টে এবং ৬৯ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এবিষে অবসর প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এম কে কাটজুর (M K Katju) লেখা একটি আর্টিকেল প্রকাশ হয়েছিল একটি ইংরেজি দৈনিকে। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, যদি আর কোনও নতুন মামলা দায়ের না হয় তাহলে ওই বছর পর্যন্ত ভারতে যে পরিমাণ মামলা বিচারাধীন রয়েছে তা নিষ্পত্তি করতে ৩৬০ বছর সময় লাগবে।
advertisement
advertisement
মূল সমস্যা কী?
এবিষয়ে ওই কনফারেন্সে বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা। তিনি বলেন, “বেশ কিছু মামলা দায়ের করা হয় যেখানে প্রচুর কার্যক্রম (proceedings) ঢুকিয়ে বিচারব্যবস্থাকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করে।” এর পাশে আরও একটি সমস্যা হল শূন্যপদ। বিচারব্যবস্থার মধ্যে প্রচুর শূন্যপদ তৈরি হয়ে রয়েছে। যা পূরণ করার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
advertisement
একটি রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে, দেশের ২৫টি উচ্চ আদালতে ৪০০ জন বিচারপতির পদ শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতে প্রায় ৫০০০ জন বিচারকের পদ শূন্য রয়েছে। একজন বিচারপতি চলতি বছরের ১ এপ্রিল জানিয়েছিলেন, শীর্ষ আদালতে ৫ জন বিচারপতির পদ ফাঁকা রয়েছে।
এর পাশাপাশি পরিকাঠামো নিয়েও অভিযোগ করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দীপক মিশ্র (Dipak Misra)। ২০১৮ সালে তিনি জানিয়েছিলেন, আদালতগুলিতে মামলাকারী, বিচারপতি বা বিচারক এবং আদালতের অনান্য কর্মীদের জন্য নূন্যতম পরিকাঠামো নেই।
advertisement
পাশাপাশি মামলা নিস্পত্তি না হওয়ার জন্যও আরও একটি কারণ তুলে ধরা হয়েছে। তা হলে স্থগিতাদেশ জারি করা। এবিষয়ে ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ (Ram Nath Kovind) বলেছিলেন, “স্থগিতাদেশ দেওয়া একটি কালচারে পরিণত হয়েছে।”
বিচারাধীন মামলাগুলি নিষ্পত্তি করার জন্য কী পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে?
কী ভাবে বিচারাধীন মামলাগুলির নিষ্পত্তি করা যায় সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টা করছে বিচারাধীন মামলাগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিষ্পস্পত্তি করার।” এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১১ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে “ন্যাশনাল মিশন ফর জাস্টিস ডেলিভারি অ্যান্ড লিগাল রিফর্ম” বসানোর প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। তারা মামলার নিষ্পত্তির জন্য বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা নিয়েছে।
advertisement
আইন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালতগুলির বিচারক্ষের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ২০১৪ সালে ৩ হাজার ৮০০ থেকে শুরু করে বিচারকক্ষের সংখ্যা ১৬ হাজার করা হয়েছে। এবং ২০২০ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৫০০-তে। পাশাপাশি ই-কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
view commentsLocation :
First Published :
July 19, 2021 11:23 PM IST