Explained: Tomato Flu: করোনার পর এবার টম্যাটো ফ্লু; আক্রান্ত শিশুরা! জেনে নিন বিশদে, সতর্ক থাকুন!
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
Tomato Flu: ভারতে এই নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। ইতিমধ্যে কেরলের বিভিন্ন জায়গায় টম্যাটো ফ্লু-তে আক্রান্তর হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
#নয়াদিল্লি: প্রায় দুই বছরের বেশি সময় সমগ্র পৃথিবীর মানুষ করোনার দাপট দেখে আসছে। তিনটি ঢেউয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণ গিয়েছে। একাধিক জায়গায় সংক্রমণের হার এখনও ওঠা-নামা করছে, ইতিমধ্যে আবার কিছু জায়গায় চতুর্থ ঢেউও ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে করোনার আতঙ্ক না কাটতেই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো বরং হাজির আরও একটি অজানা অসুখ। যার পোষাকি নাম টম্যাটো ফ্লু। ভারতে এই নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। ইতিমধ্যে কেরলের বিভিন্ন জায়গায় টম্যাটো ফ্লু-তে আক্রান্তর হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেরলে ৮০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে খবর রয়েছে।
কেরলে টম্যাটো ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সনাক্ত হওয়ার পরই তামিলনাড়ু ও সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই কোয়েম্বাতোরে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে তামিলনাড়ু-কেরল সীমান্তে কর্মরত একটি দল প্রতিবেশী রাজ্য থেকে আসা মানুষদের স্ক্রিনিং করছে বলে জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবার ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. পি অরুণা জানিয়েছেন, "রাজস্ব, স্বাস্থ্য এবং পুলিশের সমন্বয়ে তিনটি দল শিফট ভিত্তিতে মোতায়েন করা হয়েছে। দলটি কারও জ্বর ও ফুসকুড়ির মতো লক্ষণ দেখলে চিহ্নিত করছে।"
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স! সমকামিতার সঙ্গে এ রোগের যোগসূত্র কোথায়?
টম্যাটো ফ্লু কী? কাদের হতে পারে?
এতদিন মানুষের বার্ড ফ্লু বা সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু এবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন হল টম্যাটো ফ্লু। নতুন ফ্লুটি হল এক ধরনের জ্বর। তবে এটি কোনও ভাইরাসজনিত জ্বর না কি চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগ, তা নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক রয়েছে। আসলে এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে লাল ফোসকা দেখা দেয়, তাই রোগটির নাম দেওয়া হয়েছে টম্যাটো ফ্লু। এখনও পর্যন্ত টম্যাটো ফ্লুতে মূলত পাঁচ বছরেরও কমবয়সি শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। এপ্রসঙ্গে ডা. অরুণও জানিয়েছেন যে টম্যাটো ফ্লু পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের শরীরে আক্রমণ করে। এই ফ্লু-টির উপসর্গগুলিকে টম্যাটো ফিভারও বলা হয়। প্রধানত রোগটির উপসর্গগুলি হল ফুসকুড়ি, ত্বকে জ্বালা এবং শরীরে জলশূন্যতা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে টম্যাটো ফিভার হলে ক্লান্তি, জয়েন্টে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, কাশি, হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া, বেশি তাপমাত্রার জ্বর এবং গা-হাত-পায়ে ব্যথা হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পা এবং হাতের রঙও পরিবর্তন হতে পারে।
advertisement
পাশাপাশি অজানা এই ফ্লুটির একটি নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে এবং এর জন্য কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নেই বলেও জানিয়েছেন ডা. অরুণা। অর্থাৎ সঠিকভাবে যত্ন নিলে টম্যাটো ফ্লু-র উপসর্গগুলি নির্দিষ্ট সময়ের পর নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : অসুখের নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ কেন? কীভাবে ছড়ায় এই সংক্রামক অসুখ?
কীভাবে টম্যাটো ফিভারে চিকিৎসা করা যায়? রোগীর যত্ন কীভাবে নেওয়া উচিত?
advertisement
রোগটির কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন চিকিৎসকেরা। তাই এখনও নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিক ভাবে সংক্রমণ আটকাতে পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আসলে অন্যান্য ফ্লুর মতো টম্যাটো ফিভারও সংক্রামক। এই ফ্লুতে আক্রান্ত হলে রোগীকে আলাদা রাখতে হবে। কারণ যে কোনও সংক্রামক রোগের মতোই এটি একজনের থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার শিশুরা যেন ফ্লু-র কারণে হওয়া ফোসকীায় আঁচড় না দেয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি, শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধির পরামর্শ মেনে চলতে হবে। টম্যাটো ফ্লু যাতে ছড়িয়ে না যায় সেক্ষেত্রে আক্রান্তর ব্যবহৃত বাসনপত্র, জামাকাপড় এবং অন্যান্য জিনিসপত্র অবশ্যই স্যানিটাইজ করতে হবে। টম্যাটো ফ্লু হলে রোগীর ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তাই বেশি পরিমাণে জল এবং বিভিন্ন তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। টম্যাটো ফ্লু-র কোনও লক্ষণ খেয়াল করলে প্রাথমিকভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
advertisement
আরও পড়ুন : কেন অকালে চলে যাচ্ছেন পল্লবী, বিদিশারা? কী বলছেন মনোবিদরা?
তামিলনাড়ু কীভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে?
অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাতোর জেলায় ঘড়ি ধরে শিফট অনুযায়ী তিনটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কারও জ্বর বা ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ খেয়াল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, এই ফ্লু এখনও সবচেয়ে বেশি শিশুদের শরীরে প্রভাব ফেলছে। তাই শিশুদের বিষয়ে বেশি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। শিশুদের মধ্যে কোনও রকম লক্ষণ নজরে এলে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে জেলা জুড়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিও স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে প্রায় ২৪টি মোবাইল টিম মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডা. অরুণা। প্রসঙ্গত করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে যেভাবে সকলকে হিমসিম খেতে হয়েছে, তাই প্রথম থেকেই টম্যাটো ফ্লু প্রতিরোধ করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন!
Location :
First Published :
May 28, 2022 12:00 PM IST