Explained: Monkeypox: আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স! কী এই নতুন ভাইরাস? সমকামিতার সঙ্গে এ রোগের যোগসূত্র কোথায়?
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
Explained: Monkeypox: সমকামী, উভকামী- অর্থাৎ পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে এমন পুরুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ব্রিটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি
নয়াদিল্লি: পৃথিবীর একাধিক দেশে দাপট দেখাচ্ছে মাঙ্কিপক্স । ইংল্যান্ড দিয়ে ইউরোপে শুরু হয়েছিল মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ। বর্তমানে ব্রিটেন সহ সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্পেন, পর্তুগালও। সংশ্লিষ্ট সমস্ত দেশগুলিতে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে অনেকের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গিয়েছে, বাকিদের ক্ষেত্রে সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে। আর নতুন এই অসুখটি যথেষ্ট চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। এমনিতে অতিমারীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে নাজেহাল অবস্থা, তার উপর মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব যে যথেষ্ট আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে তা বলাই বাহুল্য। বেশিরভাগক্ষেত্রে পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকাতে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তবে বর্তমানে অন্য একাধিক জায়গায় রোগটি বিস্তার করতে শুরু করেছে। সৌভাগ্যের বিষয়- এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা এই রোগটির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে সক্ষম হয়েছেন।
লক্ষণগুলো কী কী?
মাঙ্কিপক্স’ প্রায় ‘স্মলপক্সের’ মতোই একটি রোগ, তবে এটি একটি অতি বিরল ভাইরাস ঘটিত অসুখ। জ্বর, পেশির ব্যথা, গায়ে ব়্যাশ বের হওয়া এবং সর্দি লাগা মানবদেহে মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণ। মোটামুটি ভাবে সংক্রামিত হওয়ার ৬ থেকে ১৩ দিনের মধ্যেই এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। সাধারণত মাঙ্কিপক্স হলে রোগীর জ্বরের পাশাপাশি একটি অন্য ধরের ফুসকুড়ি হতে দেখা যায়। সাধারণত মৃদু উপসর্গের হলেও এটির দুটি প্রধান স্ট্রেন রয়েছে। যথা কঙ্গো স্ট্রেন, যা বেশি গুরুতর। এই ধরনের মাঙ্কিপক্সে ১০% পর্যন্ত মানুষের মৃত্যু হতে পারে এবং পশ্চিম আফ্রিকান স্ট্রেন যেখানে মৃত্যুর হার ১% এর বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে পশ্চিম আফ্রিকার স্ট্রেন দেখা গিয়েছে। যদিও সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকলেও সংশ্লিষ্ট রোগে প্রাণহানির সংখ্যা খুবই কম বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি পর্তুগালে পাঁচটি নিশ্চিত এবং স্পেনে ২৩টি সম্ভাব্য সংক্রমণের সনাক্ত করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক জিমি হুইটওয়ার্থ বলেছেন, এই সংক্রমণের হার 'অত্যন্ত অস্বাভাবিক'।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : কেন অকালে চলে যাচ্ছেন পল্লবী, বিদিশারা? কী বলছেন মনোবিদরা?
কীভাবে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি?
ভাইরাসটি ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, প্রথমবার ১৯৫৮ সালে বানরের মধ্যে ভাইসারটি পাওয়া গিয়েছিল বলে মাঙ্কিপক্স নাম দেওয়া হয়। যদিও ইঁদুরকেই এখন সংক্রমণের প্রধান উৎস হিসাবে দেখা হয়। তবে এবার সংক্রমণ বিশেষজ্ঞদের বিস্মিত করছে, কারণ ব্রিটেনের বেশ কয়েকটি জায়গায় ১৮ মে পর্যন্ত ন'জন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন যাঁদের একে অপরের সঙ্গে কোনও সংযোগ নেই। শুধুমাত্র ৬ মে রিপোর্ট হওয়া নথি অনুযায়ী প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন। তবে যদি রোগটি সনাক্ত করা না যায় তাহলে সংক্রমণ আরও বাড়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে, মাঙ্কিপক্সের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা এখনও নেই। রোগ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে সাধারণত আক্রান্তদের চিহ্নিত করে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। রোগের চিকিৎসা না করা গেলেও, উপসর্গগুলির চিকিৎসা করা যায়।
advertisement
সমকামিতার সঙ্গে যোগসূত্র কোথায়?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সমকামী পুরুষদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে সমকামী, উভকামী- অর্থাৎ পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে এমন পুরুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ব্রিটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি। তবে সমকামিতার সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের সংযোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে তথ্য পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে আরও তথ্য বিশ্লেষণ প্রয়োজন বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
advertisement
আরও পড়ুন : অসুখের নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ কেন? কীভাবে ছড়ায় এই সংক্রামক অসুখ?
এখন সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে কেন?
কোভিড বিধিনিষেধ শিথিলতা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পিছনে একটি সম্ভাব্য কারণ হিসাবে ব্যখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে সহজেই সর্বত্র ভ্রমণ করতে করা যায়। প্রাথমিক পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকায় রোগটি চিহ্নিত হলেও এখন সব জায়গাতে অবাধ যাতায়াতে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
advertisement
প্রসঙ্গত, মাঙ্কিপক্স নিয়ে ভাইরোলজিস্টরা সতর্ক করেছেন কারণ এটি গুটিবসন্ত পরিবারের একটি অসুখ। অন্য দিকে,ক্যালিফোর্নিয়ার ইউসিএলএ-এর এপিডেমিওলজির অধ্যাপক অ্যান রিমোইনের মতে, ১৯৮০ সালে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে গুটিবসন্ত নির্মূল করা হয়েছিল এবং এটি মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও সুরক্ষা দেয়। তাই এই টিকার প্রচার বন্ধের ফলে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।
আরও পড়ুন : মালিশ-সহ আর কী কী করলে আপনার স্তন সমস্যামুক্ত থাকবে? মহিলারা জানুন
ভারতের ক্ষেত্রে ছবিটা ঠিক কীরকম?
advertisement
দেশে এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সনাক্ত করা যায়নি। তবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ শুক্রবার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তারা এই রোগের মোকাবিলায় এখন থেকেই তৈরি আছে। ঘোরতর জ্বর রয়েছে এমন রোগীদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে এখনই মানুষকে ভয় না পেতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
Location :
First Published :
May 28, 2022 11:37 AM IST