Pallavi Dey and Bidisha De Majumder : রঙিন দুনিয়ায় কেন অকালমৃত্যুর হাতছানি? কী বলছেন মনোবিদরা?
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- news18 bangla
Last Updated:
Pallavi Dey and Bidisha De Majumder : সাধারণ মানুষের মনে, নেট দুনিয়ায় ক্রমেই গুঞ্জরিত হচ্ছে প্রশ্ন৷ কেন বিনোদন জগতের মুখগুলি অকালে বিদায় নিচ্ছেন?
কলকাতা : পল্লবীর পর বিদিশা৷ মাত্র ১০ দিনের মধ্যে চলে গেলেন টালিগঞ্জের একজন মডেল ও একজন অভিনেত্রী৷ দু’জনের মৃত্যু প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা৷ তবে পুলিশ অন্যান্য সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না৷ চলছে তদন্ত৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে, নেট দুনিয়ায় ক্রমেই গুঞ্জরিত হচ্ছে প্রশ্ন৷ কেন বিনোদন জগতের মুখগুলি অকালে বিদায় নিচ্ছেন? কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট সুপর্ণা ঘোষের মতে, ‘‘আত্মহনন সব সময়ই জটিল বিষয়৷ কোথাও হয়তো ওঁদের নিজেদের কাছে নিজেদের পরিচিতি বা অস্তিত্ব, যাকে আমরা সেল্ফ আইডেন্টিটি বলি, সেটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ সেটা দেখতে হবে৷ কোনও সম্পর্ক কি তাঁদের এই আঘাত দিয়েছিল? কোনও সঙ্গী কি এই আঘাতের কারণ? কোনও কারণে তাঁদের মনে হয়েছে বেঁচে থাকা অর্থহীন৷ আত্মহত্যার অনেক কারণের মধ্যে এটা অন্যতম৷’’ সেইসঙ্গে প্রত্যাশা ও চাপের প্রসঙ্গও তুলে আনলেন সুপর্ণা৷ তাঁর মতে, নিজেদের উপর যে প্রত্যাশা তৈরি করছেন, সেটা পূর্ণ করতে পারছেন না৷
নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রশ্নে চাপের প্রশ্নে সহমত মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার৷ তবে পল্লবী, বিদিশার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘ সারা দেশেই সার্বিকভাবেই কম বয়সিদের মধ্যে আত্মহননের প্রবণতা বাড়ছে৷ গ্ল্যামার দুনিয়ায় ঘটছে বলে এগুলো নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে৷ অন্যান্য ক্ষেত্রেও কিন্তু তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মহত্যা বেড়েছে৷ আসলে একটা অসহায় বোধ থেকে এই আত্মহননের চিন্তা মনের মধ্যে আসে৷ তৈরি হয় পাপবোধ৷ মনে হতে থাকে, তাঁর মৃত্যুতেই হয়তো পরিবারের সকলের ভাল হবে৷’’ এই প্রসঙ্গে শ্রীময়ী বললেন তরুণ প্রজন্মের মানসিক গঠনের দুর্বলতা নিয়েও৷ তিনি মনে করেন, উত্তর প্রজন্মকে মানসিক ভাবে পোক্ত করে তুলতে আমরাই ব্যর্থ৷ বললেন, ‘‘এখন স্কুলে সামান্য শাসন হলেই বাবা মায়েরা রে রে করে ওঠেন৷ ফলে ছোট থেকেই সন্তানরা জানছে তাদের রক্ষা করার জন্য কেউ না কেউ আছেন৷ ফলে লড়াই করার মানসিকতা তৈরি হচ্ছে না৷’’
advertisement
আরও পড়ুন : চলে গেলেন বিদিশা, রয়ে গেল তাঁর পাঠানো নববর্ষের শুভেচ্ছা
একই সুর সুপর্ণার কণ্ঠেও৷ বললেন, ‘‘ছোট থেকে বোঝাতে হবে জীবনে অনেক কিছু হবে৷ অনেক আঘাত আসবে৷ কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না৷ ঘুরে দাঁড়াতে হবে৷ পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝে কী করে আবার ঘুরে দাঁড়াব, সেটা বোধহয় বাচ্চাদের আমরা শেখাতে পারছি না৷ ফলে কোনও অসুবিধে হলেই তারা ভেঙে পড়ছে৷ ভাবছে, আমাদের বেঁচে থাকার আর কোনও দরকার নেই৷ যাঁরা সমস্যায় পড়ে পেশাদার বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিচ্ছেন তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন৷ বাকিরা পারছেন না৷’’ পেশাদারদের শরণাপন্ন হওয়ার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিলেন শ্রীময়ীও৷ বললেন, ‘‘কোনও আত্মহত্যা হঠকারী৷ হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ আবার কোথাও দীর্ঘ মানসিক অবসাদের শিকার হওয়ার ফলে জীবনকে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছে জাগে৷ মন খারাপ আর অবসাদ কিন্তু এক নয়৷ সাধারণত মনখারাপের কারণ থাকে৷ অবসাদের নির্দিষ্ট কারণ নেই৷ সেই পার্থক্য আগে বুঝতে হবে৷ অবসাদের শিকার হলে সবার আগে মনোবিদ বা মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য নিতে হবে৷’’
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : কনের সাজে অন্যদের মুগ্ধ করলেও বিদিশার নিজের আর ঘর বাঁধা হল না
কী করে চেনা যাবে অবসাদকে? তার উপায় বললেন শ্রীময়ী
১৪ দিন বা তার বেশি সময় ধরে নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়াই বিষণ্ণতা
যে কোনও কাজে অনীহা
পছন্দের কাজ থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা
সব সময় মৃত্যুচিন্তা
advertisement
লোকজনের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে একা থাকা
অন্ধকারকে আঁকড়ে থাকা
খাবারে অনিচ্ছা কিন্তু কোনও বিশেষ খাবারে আসক্তি
ঘুম কমে যাওয়া বা ঘুম খুব বেড়ে যাওয়া
আরও পড়ুন : ‘পথের পাঁচালী’-র দুর্গা থেকে মিশরীয় দেবী, বিভিন্ন সাজে নিজেকে সাজাতেন বিদিশা
এই উপসর্গের শিকার হলে পেশাদার বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতেই হবে৷ মনোবিদ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে যেতে হবে৷ শ্রীময়ীর মতোই অবসাদ এবং এর কারণকে গোড়া থেকে চিনে নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিলেন সুপর্ণাও৷ পাশাপাশি সুপর্ণা জোর দিলেন সাফল্যের সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্যেও৷ যাতে অবসাদ সহজে গ্রাস না করে৷ একইসঙ্গে নিজের আমিত্ব থেকে বেরিয়ে পরার্থে বা অন্যদের জন্য কিছু করতে হবে৷ তার ফলে জীবনের দাম এত ঠুনকো পড়বে না৷ কারণ পল্লবী, বিদিশার চলে যাওয়া বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ বলছেন শ্রীময়ী৷ বরং এটা সামাজিক পদ্ধতি বা সোশ্যাল সিস্টেমের সঙ্গে জড়িয়ে ৷ তাই সমস্যার শিকড়ে পৌঁছে তাকে উপড়ে ফেলতে হবে সামাজিক ভাবেই৷
Location :
First Published :
May 26, 2022 2:48 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Pallavi Dey and Bidisha De Majumder : রঙিন দুনিয়ায় কেন অকালমৃত্যুর হাতছানি? কী বলছেন মনোবিদরা?