#বর্ধমান: সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট অভিনেতা ফকির দাস কুমারকে খুবই স্নেহ করতেন মহানায়ক উত্তমকুমার। ছোট ভাইয়ের মতো দেখতেন। আবার প্রিয় দাদার যাতে কোথাও কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য সদা সতর্ক থাকতেন মহানায়কের ছবির সহ-অভিনেতা ফকির দাস কুমার। আর বারেবারেই মহানায়কের সঙ্গে কাটানো সেইসব সোনালি দিনের কথা পরিচিতদের কাছে বলতেন ফকিরবাবু। তেমনই এক গল্পকথা তাঁর পরিচিত মহলে বিশেষ জনপ্রিয়।
আজ থেকে ছয় দশক আগের কথা। ১৯৫৭-৫৮ সাল। উত্তমকুমারের ছবি 'জয় জয়ন্তী'র শুটিং শুরু হয়েছে। সেই ছবিতেই মহানায়কের সঙ্গে প্রথম অভিনয় ফকির দাস কুমারের। হাজারীবাগে আউটডোর শুটিং চলছে। সেখানে এক বাগানবাড়িতে শুটিং হচ্ছে।
এমন সময় হাজারীবাগ কলেজের একদল ছাত্র এল অটোগ্রাফ নিতে। এমনিতেই শুটিংয়ের চাপ, তার ওপর অটোগ্রাফ শিকারিদের উপচে পড়া ভিড়। শুটিং চালানোই দায়। মহানায়ক উত্তমকুমার প্রায় হাঁফিয়ে উঠেছেন ততক্ষণে। ফকিরবাবু মহানায়ককে বলেন, 'চিন্তা করবেন না। আমি ম্যানেজ করে নিচ্ছি।' এরপর তিনি নাকি কলেজ ছাত্রদের বোঝান, এখন তো শুটিং চলছে। ওনার পক্ষে তো এভাবে এতো অটোগ্রাফ দেওয়া সম্ভব নয়। আপনারা খাতা ডায়েরি রেখে যান। উনি সময় মতো অটোগ্রাফ দিয়ে দেবেন।'
তারপর প্রায় ৩০০টি খাতায় সহকর্মীদের নিয়ে মহানায়কের অটোগ্রাফ দিয়েছিলেন ফকি দাস কুমার। অবশ্যই কলেজ পড়ুয়াদের চোখের আড়ালে। উত্তমকুমারের অটোগ্রাফ পেয়ে তাঁরাও খুশি হয়েছিলেন। উত্তমকুমারও স্বস্তি পেয়েছিলেন। সেদিন রাতে মহানায়ক ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এই বুদ্ধিটা কার? ফকির দাস সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই বলেছিলেন, 'দারুন কু-বুদ্ধি তো। ঠিক আছে। যা হওয়ার ভালই হয়েছে।'
ফকির দাসের এই উপস্থিত বুদ্ধি বিশেষ কাজে লেগেছিল। পরদিন আর অটোগ্রাফের জন্য পড়ুয়াদের ভিড় ছিল না বললেই চলে। ফলে শুটিং করা গিয়েছিল নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে। এই 'জয় জয়ন্তী' শুটিংয়ের সময়ই উত্তমকুমার ফকির দাস কুমারকে নিজের বাড়ির ঠিকানা দিয়েছিলেন। তাঁকে বাড়িতে যেতে বলেছিলেন। এরপর ফকিরবাবু মহানায়কের বাড়িতে গিয়েছেন অনেকবার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।