আর এখন? খালি খালি তোমার কথা মনে পড়ে। ১০ বছর হয়ে গেল, তুমি নেই। এত বছর পর এসে তোমার স্মৃতিগুলো কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। জানি, অনেকটা সময় লাগিয়ে দিলাম। কিন্তু কী করব? তাই তোমাকে চিঠি লিখতে বসলাম। এখন তোমার গল্প সবাইকে বলি। তোমার গোলপার্কের বাড়ির কাছে চলে যাই হাঁটতে হাঁটতে। এখন সেই বাড়ি প্রায়ই ফাঁকা পড়ে থাকে, জানো? তুমি থাকলে বিদেশ বিভুঁই থেকে সবাই নিশ্চয়ই এসে থাকত। ঠাকুমাও নেই, তুমিও নেই, তাই দেশে আর কেউ আসে না তেমন।
প্যান্ট্রি সস দিয়ে তৈরি করা তোমার হাতের পনীরটা খেতে ভাল লাগত। রাজস্থানে যখন আমার আর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতে তুমি, যোধপুর ফোর্ট ঘুরতাম সারা দিন, মনে পড়ে সেগুলি। ১২ ক্লাস-এর ফেয়ারওয়েলের সময়ে প্রতিযোগিতায় আমি জিতেছিলাম বলে খুব খুশি হয়েছিলে না তুমি? মাকে সেটা বলেছিলে জানি।
আরও পড়ুন: দু’জনের প্রোফাইলেই সমুদ্র ও ‘সে’! রহস্য ঘনীভূত তথাগত-বিবৃতির পোস্টে
কিন্তু মনে পড়ে সেই দিনটার কথাও। ২০১২ সাল। আমার বোর্ডের পরীক্ষা চলছিল। পর দিন সকালেই শুনলাম, তুমি নেই। গোলপার্কের সেই বাড়িতে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লেগে...। আমি আর মা কলকাতা চলে গিয়েছিলাম। তার পর থেকেই কেন জানি না, তোমার স্মৃতিগুলো সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইতাম না। নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছিলাম তোমার কাছ থেকে। একদম চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। কত বছর পর আবার তোমার হাত ধরে কথা বলতে শিখছি।
কিন্তু বাবা, যে দিন আগুন লাগে ঠিক তার পরের দিনই তো তোমার আলাস্কায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। যদি দু'দিন আগে ফিরে যেতে তা হলে হয়তো এটা ঘটত না।
আরও পড়ুন: একই ফ্রেমে প্রাক্তন এবং বর্তমান, ঋষভ-তথাগতর সঙ্গে বিবৃতির নতুন ছবি!
আলাস্কায় ৬ মাস ধরে সূর্য ঘুমিয়ে থাকলে তুমি রাজস্থানে আমাদের সঙ্গে দেখা করে কলকাতায় এসে থাকতে। এখন মনে হয়, সে বছর যদি আর একটু আগে আলাস্কায় সূর্য উঠত, তা হলে আগেই ওই দেশে ফিরে যেতে। হীরের কাজ করতে আজও। ছোট থেকেই তোমাকে তত দেখতে পাইনি। আরও না হয় বেশ কয়েক বছর কম দেখা করেই থাকতাম। কিন্তু দেখা তো হত। আলাস্কায় অন্ধকার নামলেই আমাদের দেখা হত এ শহরের রোদে।
তোমার, তিয়া
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।