#কলকাতা: SSC মামলা থেকে সরানো হল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। নতুন করে দায়ের হওয়া এসএসসি মামলা, শিক্ষকদের বদলি মামলা, শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সংক্রান্ত এবং তার বদলি সংক্রান্ত মামলার শুনানি করতে পারবেন না বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরিবর্তে এখন প্রাথমিক শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। ৬ জুন থেকেই এই ব্যবস্থা কার্যকর হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে।
হাইকোর্টের বিচারপতিদের বিচার্য বিষয় বদলে গিয়েছে সোমবার থেকেই। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের হাতেই যাবতীয় ক্ষমতা। তিনিই ঠিক করেন কোন বিচারপতি কোন মামলার বিচার করবেন। মাস্টার অফ রোস্টার বলা হয় প্রধান বিচারপতিকে। সোমবার থেকে এসএসসি মামলার বিচার করবেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা ও মাদ্রাসা সার্ভিস সংক্রান্ত বিচারের কাজ করবেন এটা ঠিকই তবে তিনি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচারের কাজও করবেন। ৮ সিবিআই তদন্তের মামলায় তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট ১০ জুন পেশ করার কথা। সেই সমস্ত রিপোর্ট বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেঞ্চেই পেশ করতে হবে। আদালতের ভাষায় এই মামলা গুলি মামলাকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে 'পার্ট হার্ড' করা রয়েছে। আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলাও থাকছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেঞ্চেই।
আরও পড়ুন: নিয়োগ কবে? কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষা চাকুরী প্রার্থীরা ফের চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎরাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাগুলি বিচার করেন ৩ জন বিচারপতি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য, বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার বিচারেই থাকলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার বিচারে এলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দ। বিচারপতি কৌশিক চন্দ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার বিচার করবেন এখন থেকে। এসএসসি মামলায় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারী'দের সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের টেবিলে বসান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যের ২ মন্ত্রীকে অপসারণের সুপারিশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া একটি প্রশাসনিক নির্দেশ ঘিরে জলঘোলা হয় বিস্তর। একাংশ আইনজীবী বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে কাজে যোগ দেওয়া থেকে সরে দাঁড়ান।২০ দিন চলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ 'বয়কট'। রাজ্য সরকারের প্যানেলভুক্ত আইনজীবীরাও গরহাজির ছিলেন ১৭ নম্বর এজলাসে। এরই মধ্যে অসম পরিস্থিতিতে একাই এজলাস সচল রাখেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: 'এটাও কি হার্টের সমস্যা?' কেকে-র মৃত্যুর পর আতঙ্কে ডাক্তারের কাছে ছুটছেন অনেকেইমামলাকারীদের বক্তব্য এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের রিপোর্ট ও নথি খুঁটিয়ে পড়ে দিতে থাকেন পরপর নির্দেশ। এই পর্বেই এজলাসে একদিন বিচারপতি বলেন, মাথায় বন্দুক ঠেকালেও আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারের কাজ চালিয়ে যাব। এসএসসি ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ তাঁরই। রাজ্যকে সুপারিশ করেন, ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসকে চাকরি দেওয়ার জন্য। এসএসসি মামলায় একক বেঞ্চ থেকে যেমন সরলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, ঠিক তেমনই ডিভিশন বেঞ্চ থেকেও সরলেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন।এসএসসি সমস্ত মামলার নির্দিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চ। বিচারপতি তালুকদার তাঁর এসএসসি আপিল মামলার রায়ে বলেন, প্রাথমিক ভাবে আদালতের মনে হয়েছে এসএসসি নিয়োগে গণদুর্নীতি হয়েছে। একই সঙ্গে হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, অতিসক্রিয়তার মামলার দায়িত্বভার এখন থেকে সামলাবেন বিচারপতি শম্পা সরকার।
হাইকোর্টের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, ফিরদৌস শামিম, বিক্রম বন্দোপাধ্যায় প্রত্যেকেই বলছেন, প্রথমিক শিক্ষায় বেনিয়মের অভিযোগ কম নয়। প্রশ্ন ভুল মামলা, টেট শংসাপত্রে অনিয়ম অভিযোগ রয়েছে সেখানে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেঞ্চে এই প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা গুলির বিচার হওয়ায় তথ্য জেনে আমাদের মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীরা আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন।
ARNAB HAZRAনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।