স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জুড়ে IIT-র নাম! সেই গর্বের বৃত্তান্ত ৯৯ শতাংশ মানুষই জানেন না!
- Reported by:Ranjan Chanda
- local18
- Published by:Tias Banerjee
Last Updated:
আইআইটি খড়গপুর প্রতিষ্ঠার আগে একই জায়গায় বয়েছে রক্ত গঙ্গা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন প্রশ্ন কবিতা। জানুন সেই ঘটনা।
খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, রঞ্জন চন্দ: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মেদিনীপুর এক আলোচিত নাম। এই জেলা পথ দেখিয়েছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল বাংলার তরুণ তুর্কি বিপ্লবীরা। তবুও মেদিনীপুরের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা, অত্যন্ত হৃদয়বিদারক মর্মস্পর্শী ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন স্বয়ং কবিগুরু।
কবিগুরু লিখেছিলেন, “বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।” তবে জানেন কেন কবি রবি লিখেছিলেন এই লাইন? কী বা উদ্দেশ্য ছিল তার? কয়েকটা দশক পিছনে গেলেই দেখা যায়, আজ যেখানে ভারতের প্রযুক্তিবিদ্যার প্রাচীন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত, জানেন সেখানেই এককালে বয়েছে রক্ত গঙ্গা। নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে এই বাংলার বীর ছেলেদের। তবে আজকের আইআইটি খড়্গপুরের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের যোগ কোথায়? জেনে নিন সেই ইতিহাস।
advertisement
advertisement
ভারতে প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য একাধিক জায়গা খোঁজা হলেও, রেল শহর খড়্গপুরে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই প্রতিষ্ঠান।আজ যেখানে আইআইটি খড়গপুর প্রতিষ্ঠিত, সেখানে এক কালে ছিল বন্দি নিবাস, এখানেই ব্রিটিশ শাসকেরা বন্দি করে রেখেছিলেন এই বাংলার বীর বিপ্লবীদের। এককালের হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প, পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হয় আইআইটিতে। বাংলার বিপ্লবের আঁতুড়ঘর অবিভক্ত মেদিনীপুর। সারা দেশে ব্রিটিশ হটাতে গর্জে উঠেছিল বাংলার যুবকেরা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলার বীরেরা।
advertisement
তবে এই মেদিনীপুরে, যেখানে আজ আইআইটি খড়গপুর প্রতিষ্ঠিত সেখানেই ছিল বন্দি নিবাস। যেখানে আটকে রাখা হত স্বাধীনতার সংগ্রামে যুক্ত বিপ্লবীদের। চালান হয় নির্বিচারে গুলি, এককালের হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প বা হিজলি বন্দি নিবাস আজ বহু স্মৃতি বহন করে চলেছে। আঁকড়ে ধরে রেখেছে এককালের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতিটি দিন।
যেই বন্দি নিবাসে নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গর্জে উঠেছিলেন, লিখেছিলেন: ভগবান তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারেবারে, দয়াহীন সংসারে। এই ডিটেনশন ক্যাম্পে ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত্রি প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ, নিরস্ত্র বন্দিদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। চালান হয় গুলিও।
advertisement
নিরস্ত্র বন্দিদের উপর গুলি চালানোর ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই বীর বিপ্লবীর। সুভাষচন্দ্র বসুর সহপাঠী সন্তোষ মিত্র, এবং মাস্টারদা সূর্যসেনের অনুগামী তারকেশ্বর সেনগুপ্তের মৃত্যু হয়। হিজলী হত্যাকাণ্ডের পর রবীন্দ্রনাথ লিখলেন প্রশ্ন কবিতা। ইতিহাসের পাতা উল্টালেই দেখা যাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম নাম হিজলি।
এখন যেখানে খড়্গপুর আইআইটি’র পুরনো ভবন, পরাধীন ভারতে সেখানেই ছিল হিজলি বন্দি নিবাস। অদূরে প্রথম মহিলা জেল। অতর্কিতে হামলা এবং দুই যুবকের মৃত্যু, খবর পেয়ে সুভাষচন্দ্র ও যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত হিজলিতে আসেন। হিজলি ও চট্টগ্রাম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এক সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। সেদিন খড়্গপুরের হিজলিতে অবস্থিত বন্দি নিবাসে নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় গর্জে উঠেছিলেন এই বাংলার কবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ। ইতিহাসের পাতায় আজও জ্বলজ্বল করে সেদিনের রক্তাক্ত ইতিহাস।
advertisement
Location :
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
First Published :
Aug 08, 2025 7:51 PM IST






