Success Story: ত্রিপল ছাউনির কুঁড়েঘরে শয্যাশায়ী বাবা, মা বাঁধেন বিড়ি, হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী তরুণ IIT হয়ে গবেষণার জন্য এ বার DRDO-তে
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- news18 bangla
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
Success Story: এবার সেই পরিবারের ছেলে ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন থেকে ডাক পেলেন। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রের এই সাফল্যে খুশি, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী থেকে এলাকাবাসী।
সৈকত শী, পাঁশকুড়া: স্বপ্নপূরণ থেকে মাত্র এক ধাপ দূরেই দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রটি। মাথার উপর ছাদ নেই তবুও স্বপ্ন পূরণের অদম্য জেদ আর লড়াই একে একে সমস্ত ধাপ পূরণ করে মিলল ছোটবেলার দেখা সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার সুযোগ। ঘর বলতে ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া কুঁড়ে। বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। ফলে সংসার চালাতে মা বাঁধেন বিড়ি। এবার সেই পরিবারের ছেলে ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন থেকে ডাক পেলেন। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রের এই সাফল্যে খুশি, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী থেকে এলাকাবাসী।
দেশের সুরক্ষায় নিজেকে শামিল করার স্বপ্ন ছিল ছোট থেকেই। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে সেই স্বপ্নই এখন সফল। পাঁশকুড়ার সুদীপ মাইতি সুযোগ পেয়েছেন দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও-তে। পাঁশকুড়া ব্লকের পুরুষোত্তমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহাম্মদ মুরাদ মাইতি পাড়া এলাকার বাসিন্দা সুদীপ। বৃদ্ধ বাবা গোবিন্দ মাইতি। পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসার। তাই, জীবনভর একের পর এক অট্টালিকা নির্মাণের কাজে যুক্ত থাকলেও অভাবের তাড়নায় নিজের একখান ঘর তৈরি করা হয়ে ওঠেনি গোবিন্দবাবুর।
advertisement
তবে কঠিন এই লড়াইয়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্ত্রী নীলিমাদেবী। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোর খরচ মেটাতে তিনিও বিড়ি বাঁধেন। এভাবেই দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। জোটেনি সরকারি আবাস যোজনার বাড়িও। তাই শতচ্ছিন্ন ত্রিপল ঘেরা বাড়িতেই সপরিবারে বসবাস। তাদেরই একমাত্র ছেলে সুদীপ আজ স্বপ্নের উড়ানের পথে।
advertisement
আরও পড়ুন : ভিক্ষাজীবী থেকে হন ট্যাক্সিচালক, যাত্রীদের অর্থ সাহায্যে নিজের গ্রামে স্কুল, অনাথাশ্রম তৈরি করেছেন এই স্কুলছুট
চক দুর্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গ্রামের স্কুলেই তাঁর হাতেখড়ি। তবে ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন সুদীপ। বিজ্ঞান নিয়ে পূর্বচিলকা লালচাঁদ হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশের পর শিয়ালদহের পলিটেকনিক কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা। এর পর কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে বি টেক। বর্তমানে আইআইটি গুয়াহাটিতে এম টেক-এ পাঠরত।
advertisement
তাঁর লক্ষ্য ছিল একটাই। দেশের সুরক্ষার প্রশ্নে ডিআরডিও-তে যোগদান করা। অবশেষে মিলল সেই সুযোগ মিলল সুদীপের। ত্রিপল ঘেরা পাঁশকুড়ার এই হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেটি চলতি বছরের শুরুতেই ডিআরডিও দেহরাদুন থেকে জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য ডাক পান। আর সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির হওয়া আত্মীয় পরিজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে।
সুদীপ জানান, “গত বছর আচমকা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কোমর ভেঙে অসুস্থ বাবা আর কাজ করতে পারেন না। সংসার চালাতে মা এখনও বিড়ি বাঁধেন। মাথার উপর ছাদটুকুও নেই। তবুও স্বপ্ন ছিল দেশের সুরক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। আর সেই লক্ষ্যে এখন অনেকটাই সফল হতে পেরে খুশি।”
advertisement
সুদীপের এই কঠিন লড়াইয়ে বেশ খানিকটা আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে আগেই এগিয়ে এসেছিলেন চিলকা লালচাঁদ হাই স্কুলের শিক্ষক শান্তনু চক্রবর্তী-সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। অবশেষে সব প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে ডিআরডিও-র মতো জায়গায় সুযোগ পেয়েছে! অভাবকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই অবশেষে সাফল্যের পথ দেখলেন তিনি।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 19, 2024 4:27 PM IST