#কলকাতা: শেক্সপীয়র সরণি-তে বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুধকুমার ঢলকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। চুরির অভিযোগে কাজ থেকে বরখাস্ত হওয়ার আক্রোশ থেকেই এই খুনের ছক? লুঠের উদ্দেশ্যে খুন করে আততায়ী। কীভাবে কোন পথে আততায়ী চম্পট দিল? পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন অর্থাৎ সোমবার সন্ধে ৬.৫৩ মিনিট নাগাদ মেন গেট দিয়ে ঢোকে দুধকুমার। সোজা চলে যায় ১০ তলায় রেণুকা চৌধুরী সঙ্গে দেখা করতে। নিহতের ছেলে অভয় চৌধুরী জানিয়েছেন, তাঁকে জিগ্যেস করা হয় কেন এসেছে সে? দুধকুমার জানায়, তাঁকে 'মা জি' (রেণুকা চৌধুরী ) কাজের জন্য ডেকেছেন। কিছুক্ষণ পর অন্য কাজের জন্য ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায় অভয়।
এরপর আটটা কুড়ি মিনিট নাগাদ অভয় ফ্ল্যাটে ঢোকেন। অভয়ের দাবি, তিনি দেখেন মা ( রেণুকা ) রান্নাঘরে। ঘরে দুধকুমারকে দেখতে না পেয়ে তিনি ভাবেন দুধকুমার বেরিয়ে গিয়েছে। পরিবারের সন্দেহ ঘরের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল দুধকুমার। পুলিশের দাবি, সোমবার রাত ১২ টা নাগাদ খুন হন রেণুকা চৌধুরী।
আরও পড়ুন: 'শুনে নিন...', ফের বিস্ফোরক তথাগত রায়! হারের ক্ষতের মাঝেই বড় বিড়ম্বনা BJP-র
তাঁকে মুখ চেপে দম বন্ধ করে হত্যা করা হয়। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ এমনটাই জানতে পারে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ অনুসারে খুনের পর রাত ১২.০৭ নাগাদ দুধকুমার ফ্ল্যাটের নিচে নামে। কেয়ার টেকার জানান, ফুটেজ অনুসারে ফ্ল্যাটের নিচে নেমে ফের সিঁড়ি দিয়ে উপরে যায় ফের নিচে নেমে এসে দেখে কেউ আছে কিনা। এরপর ফ্ল্যাটের পিছন দিকে একটি মন্দিরে দিকে যায়। মন্দিরে পাশে রাত ১২.০৯ মিনিট নাগাদ ফ্ল্যাট এর পিছন দিকে গিয়ে পৌছায় আততায়ী। তারপর আর সিসি ক্যামেরা ফুটেজ নেই। তদন্ত কারীদের অনুমান, পিছন থেকে পাঁচিল টপকে বা পিছনের কোনো রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায় আততায়ী । কারণ ফ্ল্যাটের মেন গেট রাত ১১ টায় বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তা রক্ষীরা। ফলে সামনে গেট দিয়ে পালানো সম্ভব নয়। গোয়েন্দাদের অনুমান, যে পিছনের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায় আতোতায়ী। প্রায় ৬৪টা সিসি ক্যামেরা আছে ফ্ল্যাটের ভিতর ও ফ্ল্যাটের বাইরে চত্বরে। ফলে বেশ কিছু সিসি ক্যামেরাতে ধরা পড়ে অভিযুক্তর ছবি। ধৃতকে নিয়ে বুধবার ঘটনাস্থলে আসে শেক্সপীয়ার সরণি থানার পুলিশ। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। ঘটনাস্থলে আসে ফরেন্সিক আধিকারিকরাও।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে বহাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, বাংলার বাজিপ্রেমীদের জন্য বড় সুখবর
কীভাবে চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয় অভিযুক্ত দুধকুমারের?শেক্সপীয়ার সরণি বৃদ্ধা খুনে নয়া তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দুধকুমার সঙ্গে এই চৌধুরী পরিবারের যোগাযোগ হয় তার ভাই সুনীলের মাধ্যমে। দুধ কুমারের ভাই আগে অভয় চৌধুরী অফিসে ড্রাইভারের কাজ করতো। সেখান থেকে ওই ভাই পরিচয় করায় দুধকুমারকে অভয় চৌধুরীর সঙ্গে। কিন্তু চুরি করার অপরাধে ২০১৮ সালে দুধকুমারকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেয় চৌধুরী পরিবার।এরপর সম্প্রতি সে আবার কাজের অজুহাতে যোগাযোগ করে রেণুকার সঙ্গে। রেণুকা জানিয়েছিলেন নিজেকে শুধরে নিতে ও চুরি যাওয়া গয়না ফেরত দিতে হবে। তবে তিনি কাজে রাখবেন। সেই অজুহাতে দুধকুমার খুনের ছক কষে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের আগে রেইকি করতে দুধকুমার ঢল এসেছিলো বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। পূর্ব পরিকল্পনা করেই খুন।
আরও পড়ুন: 'পিছন থেকে ছুরির জবাব', BJP-র কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে বাবুল সুপ্রিয়র! করলেন ভবিষ্যদ্বাণীও
কাজ পাওয়ার বা দেখা করার অজুহাতে রেণুকা চৌধুরীর কাছে পৌঁছায় দুধকুমার। এমনটাই অনুমান গোয়েন্দাদের। গয়না চুরি উদ্যেশে খুন করে দুধকুমার দাবি তদন্তকারীদের। অভয় চৌধুরী জানান, খুনের আগের দিন অর্থাৎ রবিবার অভয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল দুধকুমারের। সে বলে কাছেই একটা কাজ আছে তাই এসেছে সে। সোমবার খুনের দিন ফের আসে দুধ কুমার । অভয় বলেন কেন এসেছো? দুধকুমার কাজের অজুহাতে মা জি সঙ্গে দেখা করতে এসেছে বলে জানায় । অর্থাৎ তদন্তকারীদের অনুমান, রেইকি করে পূর্ব পরিকল্পনা করেই খুন করেছে দুধকুমার। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের থেকে উদ্ধার দুটি ফোন ও একটি চাবি। এখনও গয়না, ঘরের দরজা চাবি সহ বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করতে হবে। তাই তাকে পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন করে সরকারি আইনজীবী। ধৃত দুধকুমারকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।মঙ্গলবার শেক্সপীয়ার সরণির থিয়েটার রোডে গঙ্গা যমুনা এপার্টমেন্টএ বহুতলে দশ তলা ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় একানব্বই বছরের বৃদ্ধার দেহ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।