Mutual Fund Vs Shares: মিউচুয়াল ফান্ড বনাম শেয়ার: পার্থক্য কী?
- Published by:Dolon Chattopadhyay
- news18 bangla
Last Updated:
শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করতে হলে অবশ্যই স্টক ব্রোকারের পরামর্শ নিতে হবে। তার সাহায্য নিয়ে একটি ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
#নয়াদিল্লি: আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের জিনিসপত্র, যেমন-- চাল, ডাল, শাক-সবজি কোথা থেকে আসে? সেই সব শাক-সবজি অথবা শস্য কি আমরা নিজেরাই বাড়ির বাগানে চাষ করে নিই, না বাজার বা সুপারমার্কেট থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ইচ্ছেমতো সেই সব খাদ্যসামগ্রী কিনে নিয়ে আসি?
ধরা যাক, আমরা নিজেরাই নিজেদের বাগানে সবজি ফলিয়ে নিচ্ছি। এতে আমরা সব থেকে খাঁটি এবং পুষ্টিকর খাবারই পেয়ে থাকব। কিন্তু নিজে চাষ করার একটা সমস্যাও রয়েছে। কারণ নিজে ফসল ফলাতে গেলে বীজ রোপণ, জমিতে সার দেওয়া, নিয়মিত জল দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করার মতো বিষয়গুলি সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। যা অনেক খাটুনির বিষয় এবং সেই সঙ্গে সময়ও নষ্ট হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই, দ্বিতীয় উপায়টি বেছে নিলে বেশি খাটুনি বা সময় নষ্ট-- কোনওটাই হয় না। কারণ বাজারে গিয়ে সেখান থেকে প্রয়োজনীয় নানা রকম সবজি দেখেশুনে কেনা অনেক সহজ।
advertisement
advertisement
ঠিক একই রকম ভাবে, আমরা বিভিন্ন কোম্পানিতে আমাদের পুঁজি নিজেরাই সরাসরি বিনিয়োগ করতে পারি অথবা মিউচুয়াল ফান্ডের (Mutual Fund) মাধ্যমে লগ্নি করতে পারি। এই ভাবে ওই সব কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করলে ভালো অর্থ আয়ের সুযোগ হয়। আবার আমরা যখন কোনও কোম্পানির শেয়ার (Share) কিনি, তখন ওই কোম্পানি বিনিয়োগ করা অর্থ কাজে লাগিয়ে কোম্পানির ভ্যালু বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে। ফলে এতে আমাদের বিনিয়োগ করা টাকার অঙ্কও বৃদ্ধি পায় এবং সেখান থেকে ভালো রিটার্নও পাওয়া সম্ভব।
advertisement
তবে অন্য কারও সাহায্য ছাড়া সরাসরি কোম্পানিতে অর্থ বিনিয়োগ তুলনামূলক ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কোথাও লগ্নি করার আগে ভালো ভাবে ওই কোম্পানি এবং সেক্টরের সম্পর্কে বিস্তারির রিসার্চ করতে হবে। লাভ-লোকসানের সমস্ত দিক বিচার করে তবেই সঠিক স্টকটি বেছে নিতে হবে। স্টক এক্সচেঞ্জের (Stock Exchange) তালিকায় রয়েছে হাজার হাজার কোম্পানির লম্বা তালিকা। সেখান থেকে ভালো কয়েকটি কোম্পানি বাছাই করা কিন্তু একেবারেই সহজ কাজ নয়। এখানেই শেষ নয়, এর পরেও প্রতিটি কোম্পানির স্টকের (Stock) পারফর্ম্যান্সের উপর নিয়মিত খেয়াল রাখতে হয়।
advertisement
মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এই সমস্ত জটিলতা থাকে না। তহবিলের ফান্ড ম্যানেজার বা মানি ম্যানেজাররা কোম্পানি এবং স্টক বাছাইয়ের দায়িত্ব নিয়ে নেন। ফান্ডের প্রতিটি স্টকের বদলে শুধুমাত্র সম্পূর্ণ ফান্ডের পারফরম্যান্সের দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। এই ম্যানেজাররা লগ্নিকরণে নমনীয়তা এবং স্বাধীনতা দেন, যেমন-- গ্রোথ অথবা ডিভিডেন্ড অপশন, টপ-আপ, সিস্টেম্যাটিক উইথড্রল অথবা ট্রান্সফার ইত্যাদি। আবার অন্য দিকে স্টকের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া যায় না। এ ছাড়া, এসআইপি (SIP)-র মাধ্যমে নিয়মিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করার ফলে লোকসানের অঙ্কে ওঠানামার সমস্যাও এড়ানো যায়।
advertisement
স্টক আর শেয়ার-এর মধ্যে পার্থক্য:
সহজ ভাষায়, স্টক এবং মিউচুয়াল ফান্ড--এই দু’টিই বিভিন্ন কোম্পানি অথবা সেক্টরে আর্থিক বিনিয়োগের দু’টি পদ্ধতি। অনেক সময়ই দেখা যায় যে, দু’টি একই হিসেবে ধরা হয়। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একই রকম ভাবে যুক্ত হলেও দুটির পদ্ধতি কিন্তু আলাদা।
advertisement
বিনিয়োগে ঝুঁকি:
শেয়ারের সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ডের সরাসরি তুলনা করলে দেখা যাবে যে, স্টকে অর্থ বিনিয়োগ করা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। যখন আমরা শেয়ারে টাকা লগ্নি করি, তখন সাধারণত কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি শেয়ার কিনে থাকি। এ ক্ষেত্রে লোকসানের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। অন্য দিকে, মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে সকল বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত পুঁজি বিভিন্ন সিকিউরিটিতে লগ্নি করা হয়, যেমন-- বন্ড, স্টক ইত্যাদি। এমনটি যদি মিউচুয়াল ফান্ডকে শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়, সে ক্ষেত্রেও কমপক্ষে ৫০টির বেশি স্টক কেনা হয়।
advertisement
সহজ বিনিয়োগ পদ্ধতি:
শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করতে হলে অবশ্যই স্টক ব্রোকারের পরামর্শ নিতে হবে। তার সাহায্য নিয়ে একটি ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একটি ট্রেডিং বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন, যা খুলতে প্রায় ৭ দিন সময় লাগবে।
অন্য দিকে, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে। স্টকের মতো এই তহবিলে কোনও পৃথক ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্টের দরকার হয় না। বর্তমানে মিউচুয়াল ফান্ডের অনেক সংস্থা রয়েছে, যাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে মুহূর্তের মধ্যে বিনিয়োগ শুরু করা যেতে পারে। এ ছাড়া স্টকে বিনিয়োগ করতে হলে একটা মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয়। আর সেখানে মিউচুয়াল ফান্ডে মাত্র ৫০০ টাকা থেকেই বিনিয়োগ শুরু করা যায়।
SIP বিনিয়োগ:
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে সেখানে কোনও সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP)-এর অপশন নেই। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এই সুবিধা উপলব্ধ রয়েছে। SIP মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের অন্যতম জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। এটি মার্কেটের ওঠানামা এবং অস্থিরতা এড়িয়ে নিয়মিত ভাবে বিনিয়োগ করতে সাহায্য করে। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে হলে সব চেয়ে নিরাপদ এবং সেরা মাধ্যম হ-- SIP। মার্কেটের সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান না-থাকলেও SIP-তে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে যে, স্টক এবং মিউচুয়াল ফান্ড দু’টোই বিনিয়োগের পদ্ধতি এবং দুই ক্ষেত্রেই লাভ-লোকসান রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ পোর্টফোলিও থাকায় ক্ষতির ঝুঁকি অনেকটাই কম। একটি সেক্টরে লোকসান হলেও অন্য দিকে লাভের সুযোগ রয়েছে এবং লাভ-ক্ষতি-- এই দুইই সমস্ত বিনিয়োগকারীরা একসঙ্গে গ্রহণ অথবা বহন করতে পারবেন। সেখানে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের অর্থ হল, সরাসরি ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়া। সূচক উঠলে লাভ যেমন রয়েছে, তেমনই এক ধাক্কায় সমস্ত খুইয়ে ফেলার আশঙ্কাও থেকে যায়। বিনিয়োগকারীদের তাই সব দিক বিচার করে তবেই সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ লগ্নি করা উচিত।
ব্যবসা-বাণিজ্যের সব লেটেস্ট খবর ( Business News in Bengali) নিউজ 18 বাংলা-তে পেয়ে যাবেন, যার মধ্যে ব্যক্তিগত অর্থ, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের টিপস (সেভিংস ও ইনভেস্টমেন্ট টিপস) ব্যবসার উপায়ও জানতে পারবেন। দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভি-তে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ সব খবরের আপডেট পেতে ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
November 28, 2021 7:54 AM IST