কলকাতা: সামান্য কমলেও ২০২৩ সালেও স্থিতিশীলই থাকবে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির হার৷ এমনই পূর্বাভাস দিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার বা আইএমএফ৷ সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ হতে পারে৷ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে শেষ হতে চলা অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.৮ শতাংশ থাকবে বলে গত অক্টোবর মাসেই জানিয়েছিল আইএমএফ৷
গোটা বিশ্বের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে মঙ্গলবারই নিজেদের জানুয়ারি মাসের আপডেট প্রকাশ করেছে আইএমএফ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালে বিশ্ব জুড়েই আর্থিক বৃদ্ধির হার ৩.৪ শতাংশ থেকে কমে ২.৯ শতাংশ হতে পারে৷ আবার ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৩.১ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে গোল্ড ট্রেডিং: এটাই কি বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়? দেখে নিন বিশেষজ্ঞদের মত!
আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা বিভাগের ডিরেক্টর পিয়ের- অলিভার গুরিঞ্চাস জানিয়েছেন, 'গত অক্টোবর মাসে আমারা ভারতের জন্য যে পূর্বাভাস দিয়েছিলাম, তা কার্যত অপিরবর্তিতই রয়েছে৷ বর্তমান অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.৮ শতাংশই থাকবে৷ কিন্তু ২০২৩ সালে ভারতের বৃদ্ধির গতি সামান্য হ্রাস পেয়ে ৬.১ শতাংশ হতে পারে বলে আমাদের অনুমান৷ সেটাও মূলত বাহ্যিক কারণের জন্য৷' যদিও আইএমএফ-এর ওই শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে ফের ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.৮ শতাংশে পৌঁছবে৷
আইএমএফ-এর রিপোর্টে অবশ্য এশিয়ার উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যও আশার আলো রয়েছে৷ ২০২২ সালে মূলত করোনার থাবার কারণেই চিনের অর্থনীতি থমকে গিয়েছিল৷ যার প্রভাব পড়েছিল অন্যান্য দেশগুলির উপরেও৷ যে কারণে এই দেশগুলিতে ২০২২ সালে বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশে নেমে এসেছিল৷ কিন্তু আইএমএফ-এর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে এশিয়ার এই দেশগুলিতে আর্থিক বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৫.৩ শতাংশ এবং ৫.২ শতাংশ থাকবে৷
গত চল্লিশ বছরে এই প্রথমবার ২০২২ সালে গোটা বিশ্বের গড় আর্থিক বৃদ্ধির হারের তুলনায় চিনের বৃদ্ধির হার কমে ছিল৷ তবে ২০২৩ সালে চিনা অর্থনীতি ফের ঘুরে দাঁড়াবে বলেই মনে করছে আইএমএফ৷ চলতি বছরে চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার বেড়ে হতে পারে ৫.২ শতাংশ৷ কিন্তু ২০২৪ সালে তা ফের কমে ৪.৫ শতাংশ হতে পারে৷
আরও পড়ুন: বেসরকারিকরণে কি এবার ধীরে চলতে চায় সরকার? বাজেট ২০২৩ নিয়ে কী ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা?
তবে আইএমএফ-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ গুরিঞ্চাস অবশ্য গোটা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যই আশার কথা শুনিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, আর্থিক মন্দার গ্রাস থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে ছোট অর্থনীতির দেশগুলি ৷ পাশাপাশি, ২০২৩ সালে গোটা বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির পঞ্চাশ শতাংশই নির্ভর করবে ভারত এবং চিনের উপরে৷ তুলনায় আমেরিকা এবং ইউরোপের ভূমিকা থাকবে কমবেশি দশ শতাংশ৷
তবে উন্নত দেশগুলির মন্দার কবল থেকে এখনই বেরিয়ে আসতে পারবে না বলে মনে করছে আইএমএফ৷ উন্নত অর্থনীতির দশটির মধ্যে ৯টি দেশেরই বৃদ্ধির হার ২০২৩ সালে আরও কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ৷
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃদ্ধির হার হবে ১.৪ শতাংশ৷ ইউরো অর্থনীতির দেশগুলিতেও পরিস্থিতির আরও কঠিন হবে বলেই মনে করছে আইএমএফ৷ তবে ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে ব্যতিক্রম হবে রাশিয়া৷ রাশিয়ার জন্য উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ৷
পাশাপাশি, বিশ্বের ৮৪ শতাংশ দেশেই মুদ্রাস্ফীতির হার কমার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে আইএমএফ-এর রিপোর্টে৷ ২০২২ সালে যেখানে গোটা বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতির গড় হার ৮.৮ শতাংশ ছিল, সেখানে ২০২৩ সালে তা কমে ৬.৬ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে তা আরও কমে ৪.৩ শতাংশে নামতে পারে বলে আইএমএফ রিপোর্টে আশা প্রকাশ করেছে৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: China, GDP, IMF, Indian Economy