#নয়াদিল্লি: আমাদের দেশে যেসব খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম হল দুধ। আসলে গোটা ভারতবর্ষে বোধহয় এমন কোনও গ্রাম অথবা শহর নেই, যেখানে দুধের চাহিদা নেই। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, দুধের ব্যবসা করলে দারুণ লাভ করা যাবে। শুধু তা-ই নয়, এই ডেয়ারি ফার্মিংয়ের ব্যবসা (Dairy Farming Business) কম বিনিয়োগের মাধ্যমেই শুরু করা যেতে পারে। আর আজকাল অনেকেই সেটা করছেন। এমনকী বহু শিক্ষিত যুবকই পেশাদার পদ্ধতিতে এই ব্যবসার পন্থা অবলম্বন করে দারুণ অর্থ উপার্জন করছেন। আর এই ব্যবসার সবথেকে ভালো বিষয় হল, দুধ বিক্রি হবে কি না, তা নিয়ে কোনও চিন্তা থাকে না। কারণ সারা বছরই দেশ জুড়ে দুধের চাহিদা থাকে।
আরও পড়ুন: ফের সোনার দামে ব্যাপক ধস! সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে সস্তা মধ্যবিত্তের প্রিয় ধাতুএখানেই শেষ নয়, ডেয়ারি ফার্মিংয়ের ব্যবসা করার জন্য সরকারও সাহায্য করে থাকে। আসলে পশুপালকদের সাহায্য করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভর্তুকি দেওয়া হয়। হরিয়ানায় ডেয়ারি ফার্মিংয়ের জন্য কেউ যদি গরু অথবা মোষ কেনেন, সরকার প্রতিটি মোষের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি ৩০ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়। এই ঋণের সুদের হার খুবই কম থাকে এবং বছরে এক বারই সুদ দিতে হয়।
কীভাবে ডেয়ারি ফার্মিং শুরু করা যায়?
ডেয়ারি ফার্মিং ব্যবসায় সাফল্যে পেতে গেলে প্রথমে এমন একটা জায়গা বেছে নিতে হবে, যেখানে দুধের চাহিদা এবং দর বেশি পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যে কোনও বড় শহরের কাছে ডেয়ারি চালু করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে। ব্যবসার শুরুতে কম সংখ্যক গরু অথবা মোষ রাখা যেতে পারে। আর যেখানে ব্যবসা শুরু করা হচ্ছে, সেখানকার এলাকাভিত্তিক সমীক্ষা চালাতে হবে। সমীক্ষা করে বুঝতে হবে, সেখানে গরুর দুধ না মোষের দুধের দর বেশি।
আরও পড়ুন: পতনের সঙ্গে খুলল ভারতীয় শেয়ার বাজার, ১৬৫০০-র স্তরের নিচে নিফটি!সাধারণ ভাবে গরু এবং মোষ- দুইই রাখা ভালো। উত্তর ভারতের দিকে ডেয়ারি ফার্মিং শুরু করলে মুররাহ জাতের মোষ কেনা উচিত। কারণ এই জাতের মোষ সবচেয়ে বেশি দুধ দিতে সক্ষম। তবে অন্যান্য জাতের মোষের তুলনায় এই জাতের মোষের দামও সাধারণত বেশিই হয়। আর একই কারণে গরু কিনতে হলে জার্সি অথবা আমেরিকান জাতের গরু কিনতে হবে। আসলে এই দুই জাতের গরুই প্রচুর পরিমাণে দুধ দিতে সক্ষম। এর জন্য সেরকম কিছুরই প্রয়োজন হবে না। শুধু গরু এবং মোষ বেঁধে রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গার প্রয়োজন হবে। এর পাশাপাশি খড়ের মতো খাবার দেওয়ার জন্য আলাদা ঘর রাখা উচিত।
এর জন্য কত খরচ হতে পারে?
এখন একটি ভালো মোষের দাম অন্তত ৭০ হাজার টাকা। আর ভালো দুধ দেয়, এমন একটি গরুর দাম প্রায় ৩৫,০০০ টাকার কাছাকাছি। তাই ব্যবসার শুরুতে ৩টি মোষ এবং ২টো গরু কিনে কাজ শুরু করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি অন্তত প্রথম এক মাসের খড়-তুলোবীজের মতো পশুখাদ্য কেনার ব্যবস্থাও করতে হবে। আর যিনি ব্যবসা করছেন, তিনি নিজে যদি পশুদের পরিচর্যা অথবা গোয়ালের কাজকর্ম করতে না-পারেন, তাহলে এই কাজের জন্য আলাদা লোক রাখতে হবে। আর এই ভাবে ব্যবসা শুরু করতে গেলে প্রথম দিকে কমপক্ষে সাড়ে কিন লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আপনার অ্যাকাউন্টে এখনও আসেনি ১১তম কিস্তির টাকা ? জেনে নিন কেন...কত টাকা পর্যন্ত উপার্জন হতে পারে?
মোষ সাধারণত প্রতিদিন ১২ লিটার দুধ দেয়, আর গরু প্রায় ১৮ লিটার দুধ দিতে সক্ষম। এভাবে প্রতিদিন মোট পাঁচটি গরু এবং মোষের থেকে প্রায় ৯০ লিটার দুধ পাওয়া যাবে। আর প্রতি লিটার ৬০ টাকা দরে এই ৯০ লিটার দুধ সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা যেতে পারে। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫৪০০ টাকার দুধ বিক্রি হবে। কাজের লোকের বেতন, পশুখাদ্য ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিদিন তিন হাজার টাকা খরচ হলেও মাসে প্রায় ৪২ হাজার টাকা সহজেই বাঁচানো যাবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।