দু'বছর আগে ভয়ঙ্কর বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর-১ পঞ্চায়েতও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখানে শিলাবতী ও কেঠিয়া নদীর উপর তিনটি কাঠের সেতু ছিল। বন্যার জলের তোড়ে সেই তিনটি সেতুই ভেঙে ভেসে গিয়েছে। ফলে চৈতন্যপুর, ধরমপোতা ও চাষিবাড় এলাকার মানুষকে গত দু'বছর ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের জেলায় মানবিকতার নজির! সিভিক ভলেন্টিয়ারদের জন্য পরিবারকে ফিরে পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা
এই তিনটি কাঠের সেতুর ভরসাতেই নদী পারাপার করে অফিসে, হাটে বাজারে বা স্কুল কলেজে যেত গ্রামের ছেলেমেয়েরা। কিন্তু বন্যায় সেতু ভাঙার পর গত দু'বছরে কোনও স্থায়ী বন্দোবস্ত না হওয়ায় ভগবন্তপুর-১ ও ভগবন্তপুর-২ পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামের মানুষকে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রাণ হাতে নিয়ে তাঁরা এখন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে নদী পারাপার করেন। নিজেদের জেলার পাশাপাশি পাশ্ববর্তী হুগলি জেলার কিছু অংশের সঙ্গেও যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এই কাঠের সেতুগুলি। কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় নদী পারাপারে ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় এলাকার চাষিদেরও। আগে সেতুগুলো ব্যবহার করে কম সময় চন্দ্রকোনা শহরে পৌঁছে যাওয়া যেত। কিন্তু সেতু না থাকায় এখন অতিরিক্ত ১৫-২০ কিলোমিটারের ঘুরপথে আসতে হয়। হাসপাতাল, কলেজ, বিডিও অফিস, থানা সবই সেতুর ওপারে অবস্থিত হওয়ায় এলাকাবাসীর হয়রানি আরও বেড়েছে।
এই অবস্থায় এলাকার মানুষই নিজেরা চাঁদা তুলে বর্তমানে চৈতন্যপুরে একটি কাঠের সেতু বানিয়ে যাতায়াত করছেন। তবে গ্রামবাসীদের একটাই দাবি তাঁদের স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজ চাই। গত দু'বছরে এই দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারন মানুষের মধ্যে। এই নিয়ে বিডিও অমিত ঘোষ বলেন, গত মাসেই ডিজাস্টার ডিপার্টমেন্ট থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল কোথায় কটা সেতু ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। আমরা তা জানিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার মত প্রপোজাল জেলায় পাঠিয়েছি। এই সেতুগুলো যাতে তাড়াতাড়ি তৈরি করা যায় তা প্রশাসনের নজরে আছে। কিন্তু এত আয়োজন এর পরেও সমস্যা কি আদৌ মিটবে? শতাধিক গ্রামবাসীর মনে এখন এই একটাই প্রশ্ন।
রঞ্জন চন্দ