এদিন তিনি রেল আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে এই ফুট ওভারব্রিজের উদ্বোধন করেন। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর রেল স্টেশনে বহুদিন ধরে ফুট ওভারব্রিজের দাবি উঠেছিল। কারণ এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ১৯ জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করে, ১৬ জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করে। এই অবস্থায় একটি ফুট ব্রিজের উপর যাত্রী সাধারণের যাতায়াতের চাপ বেড়েই চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। তাই রেলযাত্রীদের আবেদন ছিল আরেকটি ফুট ওভার ব্রিজের। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অবশেষে দ্বিতীয় ফুট ব্রিজের কাজ শুরু হয় এবং এদিন মেদিনীপুরের দ্বিতীয় ফুট ওভার ব্রিজের উদ্বোধন হলো ঘটা করে।
advertisement
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ, মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া।এই ফুটব্রিজের উদ্বোধনের সময় সঙ্গে থাকা জুন মালিয়া এবং দিলীপ ঘোষে যখন ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন করেছিলেন, তখন বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থক স্লোগান দিতে শুরু করে। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা 'জয় শ্রী রাম' বলার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা 'জয় বাংলা' স্লোগানে ভরিয়ে তোলে। তৃণমূল বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের 'জয় শ্রীরাম', 'জয় বাংলা' স্লোগানে কেঁপে উঠল রেল। এক পক্ষ যখন জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিতে থাকে, তখন অপরপক্ষ জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকে।
যদিও রেলের আধিকারিকরা দু'পক্ষকে কোনভাবেই শান্ত করার চেষ্টা করেননি, বরং এই স্লোগানে ফুটওভারব্রিজ পরিদর্শন করে তৃণমূলের মেদিনীপুর বিধায়ক জুন মালিয়া এবং বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে রেলের অতিথি বিশ্রামাগারে বসে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া। দিলীপ বাবুকে উদ্দেশ্য করে জুন মালিয়াকে বলতে শোনা যায়, "অনেকখানি রোগা হয়ে গেছেন আপনি"। রাজনীতির মঞ্চ নয়, ছিল সরকারি অনুষ্ঠান। যদিও এরাজ্যে সৌজন্যের রাজনীতির দৃশ্য অতি বিরল। সেই দৃশ্য দেখা গেল মেদিনীপুরে রেলের অনুষ্ঠানে।
একদিকে গোটা রাজ্য জুড়ে যখন রাজনৈতিক হিংসার বাতাবরণ। শাসকদল ও শাসক বিরোধী দলের মধ্যে সারাবছর ধরে চলে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের রাজনীতি, সেই রাজনীতির মধ্যে সৌজন্যতা বোধ অনেকেরই নজর কেড়েছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে এক সঙ্গে বসা থেকে ফুট ওভার ব্রিজের উদ্বোধন এবং ফুট ওভার ব্রিজ পরিদর্শন, সবেতেই দেখা গেল মেদিনীপুরের MP, MLA কে। রেলের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিজেপি সাংসদ নিজেই বলে ফেলেলেন, এই ধরনের সৌজন্যের রাজনীতি বাংলায় সব জায়গায় হওয়া উচিৎ। পাশাপাশি আবারও একবার অভিমানের কথাও বলেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, এরাজ্যের সরকারকে সৌজন্যতা বোধের রাজনীতি শেখা উচিৎ। মঞ্চে তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়াও বলেন, শাসক বিরোধী সকলকে একসঙ্গে কাজ করার কথা। যদিও এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে দু এক কথায় ভাষণ দিয়ে বেরিয়ে যান তৃণমূল বিধায়িকা, শুধু যাবার সময় বলে যান উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতি করাটা ঠিক নয়।