রাজারানী পানের বিশেষত্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন বিক্রেতা। তিনি জানিয়েছেন, রাজারানী পান কিনতে হলে আগের দিন দিতে হবে অর্ডার। বিশেষ স্বাদের এই পান তৈরি হয় বিশেষ পদ্ধতিতে। তাতে ব্যবহার করা হয় বেশ কিছু মশলা। পান তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয় বিশেষ পাতা। সমস্ত রকম উপকরণ নিয়ে আসা বাইরে থেকে। যে উপকরণগুলির মূল্য অনেক বেশি। রাজারানী পান তৈরির জন্য বিক্রেতা সাত দিনের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেছেন। মূলত বিয়ের মতো অনুষ্ঠানের জন্য উপহার হিসেবে রাজারানী পান সেরা হিসেবে মনে করেন তিনি। একদিন আগে দেওয়া অর্ডারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয় এই পান। রাজস্থান থেকে নিয়ে আসা বিশেষ গিফট বক্স এর মধ্যে দেওয়া হয় রাজারানী পান। বিভিন্ন দামি মসলা এবং উপকরণ ব্যবহার করার জন্য এই পানের দাম ১৫০০ টাকা রেখেছেন বিক্রেতা। তবে এই টাকায় আপনি একই স্বাদের দুটি পান পেয়ে যাবেন একসঙ্গে।
advertisement
রাজারানী পানের কারিগর এবং বিক্রেতা প্রশান্ত ঘোষ বলেছেন, দুর্গাপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে চার মাস আগে থেকে রাজারানী পান বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বেশ ভাল সাড়া পাচ্ছেন। দুর্গাপুর ছাড়াও আশপাশের রানীগঞ্জ, আসানসোল, অন্ডাল, এমনকি বাঁকুড়া থেকেও পানের অর্ডার পাচ্ছেন। চলতি মাসে বেশ কয়েকটি রাজারানী পান তিনি বিক্রি করেছেন। বিশেষ প্যাকেজিং এর মাধ্যমে বিক্রি করা হয় এই পান। বিক্রেতার দাবি, দেশের বেশ কিছু জায়গায় রাজারানী পান বিক্রি হলেও, তার দাম অনেক বেশি। কিন্তু তার দোকানে অনেক কম মূল্যে এই পান পাওয়া যায়। তাই চাহিদা বাড়ছে স্থানীয় এলাকায়। তবে দাম কম থাকলেও, পানের স্বাদের সঙ্গে কোনও আপোস করা হয় না তাঁর দোকানে।
প্রশান্ত ঘোষ এই পেশার সঙ্গে ১১ বছর ধরে যুক্ত রয়েছেন। তবে রাজারানী পান তৈরির চেষ্টা তিনি বহু দিন ধরেই করছিলেন। কিন্তু প্রশিক্ষণ ছাড়া তা সম্ভব হয়নি। তবে সাত দিনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে রাজারানী পান বিক্রি করতে শুরু করেছেন তিনি। বিক্রেতা আরও জানিয়েছেন, রাজারানী পানের মধ্যে এমন কিছু উপকরণ থাকে, যা শরীরের জন্য ভীষণভাবে উপকারী। বিয়ের অনুষ্ঠানে নবদম্পতির জন্য এই রাজারানী পান নতুন স্বাদের এক বিশেষ উপহার।
তবে শুধু রাজারানী পান নয়, এই দোকানে আপনি আরও নানা স্বাদের পান পাবেন। যার মধ্যে এই দোকানের দিলখুশা পান এবং স্পেশাল মিষ্টি পান খুবই বিখ্যাত। কুড়ি টাকা থেকে একশো টাকা, দুশো টাকার মধ্যেই বেশিরভাগ পানের দাম রাখা হয়েছে। তবে রাজারানী পানের ক্ষেত্রে দামটা একটু বেশি। তাছাড়া ওই দোকানে রয়েছে মুলাঠি পান। যা ঠান্ডা লাগার ক্ষেত্রে খুবই উপকারী বলে দাবি করেছেন বিক্রেতা। কারণ মুলাঠি পানে ব্যবহার করা হয় যষ্টিমধু, যা গলা খুসখুসের সমস্যার ক্ষেত্রে যথেষ্ট আরামদায়ক। স্থানীয় এলাকার পড়ুয়াদের মধ্যে এই মুলাঠি পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া সুগার রোগীদের কথা মাথায় রেখে এই দোকানে রয়েছে মিষ্টি ছাড়া মিষ্টি পান। তা ছাড়াও আপনি পাবেন জর্দা ছাড়া জর্দা পানের স্বাদও।
সবমিলিয়ে ১১ বছরের ব্যবসায় পান নিয়ে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট করতে করতে নিজের ব্যবসাকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন বিক্রেতা প্রশান্ত ঘোষ। আগামী দিনেও পান নিয়ে আরও নানারকম কাজ করে যেতে চান তিনি। এই কাজের মাধ্যমে তিনি নিজের নাম আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চান। শুধু টাকার জন্য নয়, তিনি চান মানুষের ভালোবাসা পেতে। তাই পান খাইয়ে মানুষের মন জয় করা এখন বিক্রেতার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।