দুর্গাপুরের তালতলা বস্তিতে যে অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল, দমকলের তৎপরতায় সেই আগুন নেভেছে। তবে সর্বগ্রাসী আগুন কেড়ে নিয়েছে ১০ থেকে ১২ টি পরিবারের আশ্রয়। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের তালতলা বস্তিতে আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে দশ-বারোটি বাড়ি আর সেইসঙ্গে স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে বিবাহ যোগ্য মেয়ের বাবার।
আরও পড়ুন - Paschim Bardhaman News: যে চানাচুর খাচ্ছেন সেটা বুঝেশুনে খাচ্ছেন তো! পাওয়া গেল নকল চানাচুর তৈরির কারখানা
advertisement
রিক্সা চালক কিতাব শেখ। ১৪ বছর আগে তার স্ত্রী গত হয়েছেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে। তার দুই কন্যা সন্তান বীরভূমের মামার বাড়িতে থাকেন। সেখানে তাঁদের পড়াশোনার খরচ পাঠাতেন কিতাববাবু। মাতৃহীন দুই কন্যা সন্তানকে অত্যন্ত কষ্টে রিক্সা চালিয়ে রোজগার করে বড় করেছেন।
আরও পড়ুন - Tripura Assembly Election। Amit Shah: দলীয় কর্মীর বাড়িতে শাহি-'লাঞ্চ', মেনুতে ছিল জিভে জল আনা মণিপুরী খাবার
কিতাব শেখের বড় মেয়ে উর্মিলা খাতুন। বয়স ১৮ বছর। ইতিমধ্যেই তাঁর জন্যে বিয়ের সম্বন্ধ দেখা হয়েছিল। আগামী পাঁচ মাস পর তাঁর বিয়ে। মাতৃহারা দুই মেয়ের জন্য রিকশা চালক বাবা তিল তিল করে জমিয়ে রেখেছিলেন দরমার দেয়াল দেওয়া বাড়িতেই। অথচ আগুনে পুড়ে গিয়েছে সেই বাড়ি। একই সঙ্গে পুড়ে ছারখার হয়েছে চার ভরি সোনার গয়না এবং দেড় লক্ষ টাকা।
বহু কষ্ট করে যে টাকা তিনি অর্জন করেছিলেন, সেই টাকা দিয়ে আস্তে আস্তে চার ভরি সোনার গয়না তৈরি করিয়েছিলেন। নিজে আধপেটা খেয়েও অর্থ জমিয়ে রেখেছিলেন মেয়েদের বিয়ের জন্য। কিন্তু বিধ্বংসী আগুন কেড়ে নিয়েছে কিতাব শেখের এক টুকরো বাসস্থান। কেড়ে নিয়েছে তিল তিল করে জমানো অর্থ। আর এক লহমায় ভেঙে দিয়েছে সমস্ত স্বপ্ন।
দুঃস্থ রিক্সা চালকের মা হারা দুই কন্যা খবর পেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এদিন। সর্বহারা রিক্সা চালকের করুণ দুর্দশায় শোকাহত এলাকাবাসী। কিতাববাবু বলেছেন, ‘‘অটো - টোটোর জেরে বর্তমানে রোজগার কমে গেছে। বহু কষ্ট করে মেয়ের বিয়ের জন্য সোনার গয়না ও টাকা জমিয়ে ছিলাম। এই অগ্নিকাণ্ডে আমাদের সর্বস্বান্ত করে দিল।’’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের বেনাচিতি সংলগ্ন তালতলা বস্তি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৫২ টি পরিবার সর্বহারা হয়। আগুনে ভস্মীভূত হয় তাঁদের সকলের ঘরবাড়ি। তাঁরা সকলেই দুঃস্থ পরিবারের। ওই ঘটনার শিকার হয় এদিন রিক্সা চালক কিতাব শেখ।
Nayan Ghosh