যার ফলে প্রাথমিকভাবে গঙ্গা নদীর জলকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যদি পরিকল্পনা সফল হয়, তাহলে ধীরে ধীরে তা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হবে। উল্লেখ্য, আবর্জনা এবং বর্জ্য পদার্থ পড়ায় নদীর জল ক্রমে দূষিত হচ্ছে। নদীর জলকে শুদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে এবার অভাবনীয় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে গঙ্গার উপবাহিকায় যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি রয়েছে, সেখানে পরিশ্রুত নর্দমা তৈরি করে, গঙ্গার জলকে শুদ্ধ রাখার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রেলগেটের যানজট থেকে মুক্তির আশায় কুলটি
এই ধরনের প্রকল্প প্রথমবার নেওয়া হয়েছে রাজ্যে। আসানসোল রবীন্দ্রভবনে তিনটি জেলাকে নিয়ে জল জীবন মিশন কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত জল পৌঁছে দেওয়া উদ্দেশ্যে এই বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মশালায় আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। তার মধ্যেই একটি হল পরিশ্রুত নর্দমা নির্মাণ। কারণ, পরিশ্রুত জল মানুষের কাছে পৌঁছনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে।
পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে যে সমস্ত উৎসগুলি রয়েছে, সেইগুলি বর্তমানে দূষিত এবং আবর্জনাময় হয়ে ওঠছে। ফলে পরিশ্রুত জল মানুষের কাছে পৌঁছনো একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে। আর সেই কারণেই নদীর জল পরিষ্কার রাখতে পরিস্রুত নর্দমা নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে। আর এই পরিকল্পনা, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রাথমিকভাবে বর্ধমান জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় বাস্তবায়ন করা হবে।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা, পূর্বস্থলী সহ বিভিন্ন ব্লকের মোট ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত, যেগুলি গঙ্গার তীরে অবস্থিত সেখানে তৈরি হবে পরিশ্রুত নর্দমা। এই সমস্ত গ্রামাঞ্চলে মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহৃত জল নর্দমার মাধ্যমে বিভিন্ন জলাশয় অথবা গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। ফলে দূষিত হয় জলাশয় এবং নদী। যদি নর্দমার জলকে পরিশুদ্ধ করা হয়, তাহলে সেই দূষণ রোধ করা যাবে। আর এমন চিন্তা থেকেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে প্রথমবার পূর্ব বর্ধমানেই তৈরি হচ্ছে এই পরিশ্রুত নর্দমা। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকা খরচ হবে এই নর্দমা তৈরি করতে।
আরও পড়ুনঃ ঝুলন্ত রেস্তোরাঁ, বিশালাকার নেতাজি মূর্তি! কোন শহরে হচ্ছে জানেন?
জানা গিয়েছে, এই নর্দমায় বিশেষ পাথর এবং অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করে নর্দমার মাঝে মাঝে গার্ড ওয়াল দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে জল ফিল্টার হয়ে নদী বা জলাশয় গিয়ে পড়বে। ফলে দূষণ রোধ হবে। এই জল পরিশ্রুত হবে নিজে থেকেই। তাছাড়াও নর্দমায় বিশেষ ধরনের গাছ লাগানো হবে। যে গাছ দূষণ শুষে নিতে পারবে। ব্যাঙ্গালোরের একটি সংস্থার সঙ্গে এই কাজ করছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ।
এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিষয়ক দফতরের কর্মাধ্যক্ষ বাগদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গঙ্গার অববাহিকায় যে ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত আছে, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে সেখানেই এই কাজ করা হবে। যেভাবে টিউবয়েলের জল জলাশয় পড়ার সময়, দূষন রোধে শোকপিট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেই রকম ভাবেই এই পদ্ধতিতে নর্দমার জলকে পরিশুদ্ধ করে গঙ্গায় বা পুকুরে ফেলা হবে। যাতে নদী বা জলা দূষণ রোধ করা যায়।
Nayan Ghosh