এই পদ্ধতিতে চাষ করে উত্তর দিনাজপুরের কৃষকরা ইতিমধ্যেই ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। এই বিষয়ে জানার জন্য আমরা কৃষিবিদ বাদল দেবশর্মার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি জানান, শেড নেট হল প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি একটি জাল। যা ফসলকে তীব্র সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই শেড নেট দিয়ে তৈরি ঘর অনেকটা গ্রিনহাউজের মতো হয়। এই শেড নেটের জন্য সূর্যের অতিরিক্ত রশ্মি বা অতিরিক্ত বৃষ্টির কণা ফসলের গাছের গোড়ায় পৌঁছতে পারে না। ফলে গাছে ছত্রাক আক্রমণ সহ বিভিন্ন রোগের পরিমাণ কমে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: টোটোর ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু
কৃষিবিদ বাদল দেবশর্মা আরও জানান, গ্রিনহাউজ আর শেড নেট হাউজ একই উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে শেড নেট হাউজ ও গ্রিনহাউজের মধ্যে পার্থক্যও আছে। মূলত ব্যবহার, কাঠামো ও পরিবেশ ইত্যাদি ক্ষেত্রে এদের প্রয়োগ কত দিকটা একটু হলেও ভিন্ন। তবে এদের মূল কাজ একই। কম খরচে এই শেড নেটের মাধ্যমে ফসল সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে। এই শেড নেট কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে পাখি, শিলাবৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া, কুয়াশা অথবা অতিরিক্ত তাপমাত্রার হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করে। কোন কোন ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে শেড নেটের ব্যবহার করা যেতে পারে? এই ব্যাপারে বাদলবাবু জানান, টমেটো, শসা, লেটুস, লঙ্কা, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, ধনেপাতা, পালং শাক, ফুল এই ধরনের কিছু কিছু সবজি বা ফুল চাষের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য এনে দিয়েছে শেড নেট পদ্ধতি।
এই সকল ফসল বা ফুল চিরাচরিত পদ্ধতিতে চাষ করলে তাতে রোগ জীবাণু ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়। তা থেকে ফসলকে বাঁচাতে চাষি বেশি করে কীটনাশক স্প্রে করেন। সেইসঙ্গে রাসায়নিক সারের ব্যবহারও বাড়িয়ে দেয়। এতে ফসলের গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শেড নেট পদ্ধতিতে চাষ করলে অতিরিক্ত কীটনাশক বা রাসায়নিক সার দিতে হয় না। এর ফলে ফসলের নিজস্ব গুণাগুণ ভালোভাবেই রক্ষা পায়। ছাদ বাগানের ছোট জায়গায় চারা উৎপাদন ও অর্গানিক সবজি চাষের ক্ষেত্রে শেড নেট পদ্ধতির দারুন কার্যকরী হয়। সুতরাং কৃষকদের পাশাপাশি আপনার যদি ছাদ বাগানের শখ থাকে তবে আপনিও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখতে পারেন।
পিয়া গুপ্তা