মূলত যাদের নিজেদের বলতে বাড়ি নেই, সঙ্গে নেই পরিবার আত্মীয়-স্বজন, সেইসব মানুষদের থেকে এই সমস্ত উৎসবের আনন্দ যেন কোথাও গিয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। তাদের জীবন সীমাবদ্ধ থাকে চার দেওয়ালের মধ্যে। আর তাদেরকেই এই আনন্দ ফিরিয়ে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা হবু সমাজকর্মী দম্পতি।
advertisement
সিউড়ি শহরের বাসিন্দা প্রিয়নীল পাল পেশায় তিনি একজন মনোবিদ এবং তার হবু স্ত্রী সুস্মিতা দত্ত পেশায় নার্সিং কর্মী। আর তারাই তাদের বিবাহের পূর্বে আংটি বদলের অনুষ্ঠানটি বুধবার আয়োজন করলেন সিউড়ি শহরের বৃদ্ধা এবং অসহায়দের আবাসিক হিসেবে পরিচিত ‘সুনীতি চট্টরাজ অনিকেত আবাসীকে’।
সম্পূর্ণ আংটি বদলের অনুষ্ঠানটি একদম ঘরোয়া ভাবে এই আবাসিকে আয়োজন করলেন তারা।সম্পূর্ণ বাড়ির অনুষ্ঠানের মতন আমন্ত্রণ পর্ব থেকে শুরু করে,আবাসিক সুন্দর করে সাজানো,ক্যাটারিং এর আয়োজন করা হয়।
আবাসিকে বসবাসকারী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা হবু নব দম্পতিকে আশীর্বাদ করেন এবং মন খুলে সবাই আনন্দ উপভোগ করেন। উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে প্রিয়নীল পাল জানান, “আমি নিজে একজন সমাজকর্মী বিগত ১২ বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কাজ করছি। বরাবর আমরা বিশেষ দিনে বিশেষ কাজ করতে বলি,অনেকেই তাদের বিশেষ দিনে খাওয়া-দাওয়া দিয়েও যান কিন্তু বাদ থেকে যায় আবাসিকদের আনন্দ করাটা। কারণ খাবার খাওয়াটা সব নয় এর সাথে মানুষকে আনন্দ দেওয়াটা বড় ব্যাপার। তাই শুধু খাওয়া দাওয়া না, সম্পূর্ণ পারিবারিক আনন্দ দেওয়ার জন্য আমাদের পুরো বিবাহ পূর্বের আংটি বদলের অনুষ্ঠানটি আমরা এই আবাসিকদের সঙ্গেই সপরিবারে উদযাপন করলাম। সবার সঙ্গে আমরাও খুবই আনন্দ পেলাম।”
আবাসন সূত্রে জানা যায়, অনেকেই অনুষ্ঠানের বেচে যাওয়া খাবার দিয়ে যান, অনেকেই অনুষ্ঠান উপলক্ষে খাবার প্যাকিং করে দিয়ে যান কিন্তু তবুও আবাসিকদের মনে একটা খারাপ লাগা থেকেই যায় কারণ তারা সেই পারিবারিক আনন্দের বা আয়োজনের অংশীদার হতে পারেন না। এমন অবস্থায় তাদেরকে নিয়েই একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করাটা সত্যি অভিনব, আবাসিকরা মন থেকে খুবই আনন্দিত। তাদের এই অভিনব প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।
সৌভিক রায়