এই পেট্রোল পাম্পে এক গৃহবধূ অর্পিতা দেওয়ান। তিনি বছর দুয়েক ধরে কাজ করছেন পেট্রোল পাম্পে। পেট্রোল পাম্পের পাশেই বাড়ি তাঁর। স্বামী, সন্তান, শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ ভরা সংসার তাঁর। মূলত স্বামীর পাশে দাঁড়ানো এবং ছেলেমেয়েকে মানুষ করার জন্য এই কাজে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। পাম্পে অপরজন সবিতা অধিকারির স্বামী ব্রেনস্ট্রোক হওয়ায় অসুস্থ প্রায় ১০ বছর ধরে। জানা গিয়েছে তিনি এক সময় বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুন: পুজোয় এবার মদ কিনতে বিরাট সমস্যা হবে? লোকসানের আশঙ্কায় পুলিশের দ্বারস্থ আবগারি দফতর
কষ্টের মধ্যেই চলছে সংসার। সবিতা প্রায় আট বছর ধরে কাজ করছেন পেট্রোল পাম্পে। একা হাতে স্কুল পড়ুয়া পুত্র, শাশুড়ি ও অসুস্থ স্বামীকে সামলান। অভাবের সংসারে একমাত্র রোজগারে সবিতা দেবী। এই বিষয়ে অর্পিতা দেওয়ান জানান, ‘প্রায় বছর দুয়েক ধরে পেট্রোল পাম্পে কাজ করে আসছি। কষ্টের মধ্যেই কোনও রকমে চলছিল সংসারে। স্বামী টাকা রোজগার করলেও সেভাবে স্বচ্ছলতা ছিল না। তাই পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে আমার এই কাজ করা। আমার এই কাজের মাধ্যম দিয়ে ভাল করে সংসার চালাতে পারি এবং স্বামীর পাশে থাকতে পারি এই ভেবে যোগ দিয়েছি কাজে।’
আরও পড়ুন: পুজোর শুরুতেই রেকর্ড, গিজগিজে ভিড়! কলকাতা মেট্রোয় তিল ধারণের জায়গা নেই
অন্যদিকে, সবিতা অধিকারী জানিয়েছেন, ‘সংসার বেশ কয়েক বছর ধরে ভাল ভাবে চললেও স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় বড় অভাব দেখা দেয়। রোজগার করার মতো সেভাবে বাড়িতে কেউ ছিল না। তাই যেভাবে হোক দুবেলা দু’মুঠো অন্য জোগাড় করার জন্য কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলাম। কাজ খুঁজতে খুঁজতে এই পেট্রোল পাম্পে এসে কথা বলি । ভরসা করে এঁরা আমাকে কাজে নেন। আগের থেকে অনেকটাই ভাল ভাবে দিন কাটাচ্ছি এখন।’
পেট্রোল পাম্পের বর্তমান মালিক প্রসেনজিৎ পালের বক্তব্য, ‘কলকাতার বেশ কিছু পেট্রোল পাম্পে মহিলাদের কাজ করতে দেখেছি। সেখান থেকেই সেই অনুপ্রেরণা নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এর ফলে একদিকে যেমন আমি নিজে খুশি আবার অন্যদিকে, এঁদের ব্যবহারে কাস্টমাররাও অনেক সন্তুষ্ট। সংসার চালানোর পাশাপাশি পেট্রোল পাম্পে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন এঁরা।’ দশভূজা দুর্গা দশটি হাতে যেমন দুনিয়া চালাচ্ছেন তেমনই এই দুই গৃহবধূ সামলাচ্ছেন সংসার ও পেট্রোল পাম্প। আর তাঁদের মতো আরও অনেক মহিলাদের পথপদর্শক হয়ে উঠেছেন সবিতা আর অর্পিতা।
suvojit Ghosh