সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে যখন তারা নেমে আসে ঠান্ডা পরিষ্কার জলে, তখন চারপাশে তৈরি হয় রোমাঞ্চকর পরিবেশ। যেন প্রকৃতির অবাক করা এক লাইভ শো! দূর থেকে দাঁড়িয়ে মানুষজনও অপেক্ষায় থাকে সেই মুহূর্তের। যখন জঙ্গলের আদমশুমারির সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণীরা জলধারায় মাথা নামাবে। শীতকালে বেশি এই ছবি দেখা যায়। বাদবাকি সময় খুব একটা চোখে পড়েনা। হাতিরা যেমন জল পান করতে নামে, তেমনই গাছপালার পাতা সংগ্রহ করতেও এই জায়গাটি তাদের খুব পছন্দ। জল পান করার আগে পরে তারা বনজ গাছ থেকে পাতা খেয়ে নেয়, আর সেটাই যেন কাছ থেকে দেখার বড় আকর্ষণ।
advertisement
আরও পড়ুন : দীর্ঘ ২৬ বছরের টান, অবসরের পরেও ৫০ কিলোমিটার পেরিয়ে আসছেন স্কুলে! বিনা বেতনে নিচ্ছেন ক্লাস
বড় বড় দাঁত বের করে ঝোঁপঝাড় টেনে খাবার নেওয়া, তারপর শুঁড় ভিজিয়ে আবার জল পান করা। এই প্রতিটি মুহূর্ত দেখতে সন্ধ্যায় জলাশয়ের চারপাশে ভিড় জমে যায় উৎসুক মানুষের। কেউ মোবাইল ক্যামেরা হাতে, কেউ দূরবীন চোখে অপেক্ষা করে হাতিদের এক ঝলক দেখার জন্য। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এত ভিড় থাকা সত্ত্বেও কেউই হাতিদের উত্ত্যক্ত করে না। দর্শনার্থীদের সেই সচেতনতা এলাকাবাসীও প্রশংসা করেন। কারণ হাতির দল শান্ত থাকলে তবেই তাদের এই স্বাভাবিক আচরণ চোখে পড়ে। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের এই নীরব সহাবস্থানই তো আসল সৌন্দর্য্য।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পরপর দু’টি জলাশয়ে নিজেদের মন ভরিয়ে জল পান করার পর হাতির দল আবার ধীরে ধীরে ফিরে যায় গভীর জঙ্গলের ভেতরে। শুঁড় দিয়ে জল ছিটানো, ছোট হাতির দৌড়ঝাঁপ, বড়দের সতর্ক নজর, সব মিলিয়ে এই জল পানের দৃশ্য অদ্ভুত মায়াবী। রাত নেমে এলে শুধুই শোনা যায় তাদের ভারি পদচারণা। তারপর মুহূর্তেই মিলিয়ে যায় অন্ধকারের ভেতর। প্রতি সন্ধ্যায় এমন দৃশ্য দেখতে স্থানীয় মানুষজনের পাশাপাশি বাইরেও অনেকেই ছুটে আসেন ধাম কুড়িয়ার জঙ্গলে। যেন এক দিনের জন্য হলেও সাক্ষী হয়ে থাকা যায় প্রকৃতির অবাধ, অবারিত জীবনের। এই হাতিদের জল পানের মুহূর্ত তাই শুধু একটি দৃশ্য নয়, এলাকার পরিচিতি, জঙ্গলের প্রাণ এবং মন মাতানো এক প্রাকৃতিক আকর্ষণ।





