পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের রামপুরা গ্রামের বছর ৫১-র দিনমজুর সুনীল সিং। বুধবার বিকেল নাগাদ গ্রামের অদূরে শ্মশানের একটি গাছ থেকে সুনীলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ওই শ্মশানেই দাহ করা হয়েছিল সুনীলের স্ত্রী অঞ্জলি (৪৭)-কে। তারপরেই শ্মশানে চিতা থেকে অদূরে এই ঘটনা সুনীলের। দিনমজুরিতেই টানাটানি করে সংসার চালাতেন সুনীল এবং অঞ্জলি সিং। দুজনের বছর ২৮-র একটি ছেলে আছে। তবে, ছেলে আর বউমার সঙ্গে ইদানিং বনিবনা না হওয়ায়, বছর দুয়েক ধরে তাঁরা আলাদাই থাকছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে অঞ্জলি লিভারের জন্ডিসে ভুগছিলেন। ডাক্তার দেখানোর পরেও কিছুতেই সুস্থ হচ্ছিলেন না অঞ্জলি। এই নিয়ে ক’দিন ধরেই মনমরা ছিলেন সুনীল।
advertisement
শেষমেশ সোমবার রাতে অঞ্জলির মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে গ্রামের অদূরে শ্মশানে তাঁকে দাহ করা হয়। স্ত্রীকে হারিয়ে বেশ মনমরা হয়ে পড়েছিলেন স্বামী সুনীল। সুনীলের ভাই গোরা কিংবা গ্রামের যুবক দুর্গা সিংরা সুনীলকে চোখে চোখেই রেখেছিলেন। এর মধ্যেই, বুধবার দুপুরে প্রায় গোটা পাড়া যখন শুনশান, সেই সময়ই কখন সুযোগ বুঝে শ্মশানে পৌঁছে যান সুনীল! স্ত্রী-কে যেখানে দাহ করা হয়, তার ঠিক উল্টোদিকে থাকা একটি গাছে ঝুলে নিজের জীবন শেষ করে দেন।
খুঁজে না পাওয়ায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় সকলে। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, ওই শ্মশানে গ্রামের এক বৃদ্ধকে দাহ করতে গিয়ে সুনীলের ঝুলন্ত দেহ লক্ষ্য করেন তারা। সকলেই স্তম্ভিত হয়ে যান! সুনীলের ভাই গোরা সিং বলেন, “স্ত্রী-কে ছেড়ে থাকতে পারল না দাদা। নিজে এই সিদ্ধান্ত নিল।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হয় সুনীলের। তবে বিচ্ছেদের এই অবকাশে এমন এক প্রেম সত্যি বিরল, তবে এমন ঘটনা নাড়া দিয়েছে সকলকে।
—- রঞ্জন চন্দ