২০২৩ সালে ২৮ মে ভবনটির দ্বারোদ্ঘাটন হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমে রাজদণ্ড স্থাপন করেন এবং সংসদের দুই কক্ষের ১২৭২টি আসন সম্বলিত নবনির্মিত ভবন জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। এই সাংসদ ভবনের তিনটি প্রবেশপথের দরজার দেওয়াল ও আইনসভার গ্যালারির কাজ করেছেন মহিষাদলের শিল্পী নীলকমল আদক।
আরও পড়ুন: মোবাইল টাওয়ারে উঠে কী করছেন প্রেমিক-যুগল? দু’জোড়া জুতো দেখেই রহস্য এলাকায়! তেহট্টে অবিশ্বাস্য কাণ্ড
advertisement
চিত্রশিল্পী নীলকমল আদকের কথায় জানা যায়, সংসদ ভবনের বিভিন্ন মুরাল-সহ দেওয়ালের চিত্র কোনও একজন শিল্পীকে দিয়ে করানো হয়নি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রখ্যাত শিল্পীদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের বাসিন্দা নীলকমল আদক সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট গ্যালারির দেওয়ালে ফ্রেস্কো কাজ করেছেন তিনি।
এছাড়াও তাঁর শিল্পভবনায় সংসদ ভবনের প্রবেশ পথের তিনটি দরজার দু’পাশে ছটি দেওয়ালে মুরাল তৈরি করা হয়েছে। প্রথমেই তাঁকে ডাকা হয় শুধুমাত্র এই মুরালের তৈরির জন্য। তারপরে তাঁর কাজ পছন্দ হয় প্রধানমন্ত্রী। সাংসদ ভবনের গ্যালারির দেওয়ালে ফ্রেস্কো জন্য তাকে ডাকা হয়।
আরও পড়ুন: রান্নাঘরের তেল চিটচিটে এক্সহস্ট ফ্যান দেখে গা ঘিন ঘিন করে? নতুনের মতো চকচক করবে এই ‘দুই’ উপায়ে!
এ বিষয়ে নীলকমল আদক জানান, “সংসদ ভবনের দেওয়ালের ওপর অংশে ফ্রেস্কো -এর কাজ করাটা খুব কঠিন ছিল। কারণ দেওয়ালে বাঁক রয়েছে। আর ভারতবর্ষে এ ধরনের দেয়ালে সাধারণত ফ্রেস্কো করা হয় না। আর সেটাই ছিল চ্যালেঞ্জিং। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন আর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের ডাকা হয়। কিন্তু সবাই এক প্রকার এই কাজে না করে দেয়। সেই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করি। এ ধরনের কাজ বিদেশে হয়। বিদেশের সেই শিক্ষাটা কাজে লাগাই। সংসদ ভবনের গ্যালারির দেওয়ালে চুন ও বালি দিয়ে ওই ফ্রেস্কোর কাজ করা হয়েছে। প্রথমে আমাকে ডাকা হয়েছিল প্রবেশ পথে তিনটি দরজার দু’পাশে ছয়টি দেওয়ালে মুরালের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর কাজ পছন্দ হওয়ায় সংসদ ভবনের দু’টি কাজ করতে পেরেছি।”
মহিষাদলের বিখ্যাত এই চিত্রশিল্পী একপ্রকার সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেছেন। প্রকৃতির মাঝে খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়িতে একা বসবাস করেন। আর এই চিত্রশিল্পীর টানেই মহিষাদলের প্রত্যন্ত গ্রাম নাটশালে হাজির হন, জাপান ইন্দোনেশিয়া স্পেন আমেরিকা ব্রিটেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রখ্যাত মানুষজনেরা। সাদামাটা জীবনকেই সঙ্গী করেছেন নীল কমল আদক। ভারতবর্ষের সংসদ ভবন ছাড়াও, এশিয়াটিক সোসাইটি নতুন ভবন বাগবাজারের গৌড়ীয় মঠ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিমান বন্দরে নিজের চিত্রকলার ছাপ রেখেছেন তিনি। বরাবর প্রকৃতিকে ভালোবাসেন। আর প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকেই বর্তমানে তিনি মহিষাদলের এই প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করছেন।