এঁদের কারও বয়স ৬০ তো কারও ৬৫। প্রতিদিন সকাল হলেই অজয় নদের চড়ে ঝোপে জঙ্গলে গিয়ে পাকা বনকুল সংগ্রহ করেন তাঁরা৷ পাশাপাশি এলাকাবাসীর বাড়ি থেকে পেয়ারা, বাতাবি লেবু ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। কুল, পেয়ারা ও বাতাবি ঝুড়িতে সাজিয়ে মাথায় করে গ্রামের অলিতে গলিতে হেঁটে হেঁটে বিক্রি করেন। আবার কখনও স্কুলের গেটের সামনে বসেও বিক্রি করেন।
advertisement
রুটি-রুজির টানে দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে এই ভাবেই চলে আসছে তাঁদের জীবন। প্রতিদিন বহু পরিশ্রম করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা রোজগার করেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা ঝর্ণা, দয়া ও চন্দনা বাদ্যকর। বয়স্ক এই তিন বৃদ্ধার কারও স্বামী আছেন কিন্তু কাজ করতে অপারক, আবার কারও স্বামী গত হয়েছেন,অথবা বার্ধক্য জনিত কারণে স্বামী অসুস্থ। পরিবারে ছেলে মেয়ে থাকলেও সবাই নিজের মত থাকে। আবার ছেলে বৌমা থাকলেও জোটেনা দুমুঠো খাবার।
সংসারের নানান জটিলতা থেকে সমস্যা রয়েছে তাঁদের। আর্থিক অনটনের সংসার সামাল দিতে একসময় বনেবাদারে ফলে থাকা বন কুল সংগ্রহ করে বিক্রি করা শুরু করেছিলেন তাঁরা। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে আজও সংসারের হাল ফেরেনি৷ বেঁচে থাকতে হালও ছাড়েনি এই তিন যোদ্ধা। তাঁদের দাবি, এই বয়সে এছাড়া আর উপায় কি! শেষবেলায় গায়ে যতক্ষণ শেষ বল আছে ততক্ষণ কুল গাছের কাঁটা বিঁধলেও বন কুল বিক্রি করতে হবে।
কুল বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে মেলে এই বনকুল। তার পর আবার ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে মেলে দেশি কুল থেকে হাইব্রিড কুল। যা বিক্রি করেন তাঁরা। এছাড়াও সারাবছর মাথায় করে শশা, পেয়ারা বিক্রি করে রোজগার করে কোনও রকমে জীবন যাপন করে চলেছেন এই তিন যোদ্ধা। এত লড়াইয়ের পরেও তাঁদের নিষ্পাপ মুখের একরাশ হাসি ক্রেতাদের মন ভরিয়ে দেয়।





